Barak UpdatesHappeningsBreaking News
শিলচরের যৌনপল্লী থেকে দুই নেপালি মহিলা দেশে ফিরলেন
ওয়েটুবরাক, ২০ মার্চ : শিলচরের যৌনপল্লী থেকে দুই নেপালি মহিলাকে উদ্ধার করে স্বদেশে পাঠানো হয়েছে৷ তাদের মধ্যে একজন অপ্রাপ্তবয়সি৷ নেপাল থেকে এনে অনেকদিন তাদের দিল্লিতে রাখা হয়েছিল৷ পরে পাঠানো হয় শিলচরের যৌনপল্লীতে৷ শিলচর ও নেপালের দুই সামাজিক সংগঠনের যৌথ চেষ্টায় এই অভিযান সফল হয়েছে। এরা হলো বরাকভ্যালি ওয়েলফেয়ার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি এবং মাইতি নেপাল সামাজিক সংগঠন৷
মাইতি নেপালের পক্ষ থেকে সন্তোষ সেধাই এবং সুনীতা করকি সোমবার শিলচর থেকে দুই মহিলাকে নিয়ে নেপালের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সন্তোষ জানান, নেপালের এক পাচারকারী বহু মহিলাকে নানা প্রলোভনে ফুঁসলিয়ে ভারতে এনে বিক্রি করে৷ তাদেরকেও একই ভাবে নিয়ে আসে৷
সেধাই বলেন, ‘সম্প্রতি নেপালের পুলিশ নারী পাচার রোধে কঠোর হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন পাচারকারীকে আটক করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সূত্রেই বহু শহর থেকে পাচার হওয়া মহিলাদের ধীরে ধীরে উদ্ধার করা হচ্ছে।’
তিনি ২০১৯ সালের প্রথম অভিযানের উল্লেখ করে বলেন, সে বার দিল্লি পুলিশের সহায়তায় এখান থেকে কয়েকজনকে উদ্ধার করা হয়েছিল। তবে যৌনপল্লী থেকে তাদের বের করে আনা অত্যন্ত কঠিন কাজ। বরাক ভ্যালি ওয়েলফেয়ার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি এবং পুলিশের যৌথ উদ্যোগে উদ্ধার করা হলেও শুরুতে তারা মুখই খুলতে চান না৷ পরে উজ্জ্বলা শেল্টার হোমে নিয়মিত কাউন্সেলিং করার পর তারা নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করেন৷ এর পরও অনেকে প্রতিকূল পরিস্থিতির শিকার হওয়ায় সুযোগ পেলে আবার নিষিদ্ধপল্লীতে ফিরে যান, স্বেচ্ছায় এই বৃত্তি গ্রহণ করেছেন বলে আদালতকে জানান৷ এ সবের মধ্যে এই দুই মহিলাকে কাউন্সেলিং করিয়ে বাড়ি পাঠানোকে বড় সাফল্য বলে মনে করেন বরাক ভ্যালি ওয়েলফেয়ার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির সদস্যরা।
উদ্ধার হওয়া নেপালের পোখরা শহরের ষোড়শীটি জানান, উন্নত পড়াশোনা এবং ভালো জীবন পাওয়ার আশায় সে গত বছর বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। কিন্তু পরে তার ঠাঁই হয় শিলচরের নিষিদ্ধ পল্লীতে, জোর করে ঠেলে দেওয়া হয় দেহ ব্যবসায়। পরবর্তীতে ওই পাচারকারী লোকটি নেপালে গ্রেফতার হলে তাকে জেরা করে কিশোরীটির কথা জানতে পারে৷ গত মাসে শিলচর মেহেরপুরের এক বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তাকে।
কাছাড়ের পুলিশ সুপার নোমাল মাহাত্তা জানান, নেপাল থেকে সরকারিভাবে খবর পেতেই তাঁরা উদ্ধার অভিযানের কৌশল নিরূপণ করেন৷ খুব সাবধানে তার খোঁজ নিয়ে মেহেরপুরের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসা হয় তাকে৷
উজ্জ্বলা শেল্টার হোমের পক্ষ থেকে গৌরব চন্দ জানিয়েছেন, গত ১০ বছরে শিলচরের নিষিদ্ধ পল্লী থেকে একশোর বেশি মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছে৷ তার মধ্যে অনেকেই ছিল নাবালিকা। তিনি বলেন, ‘নেপাল-ভুটান ইত্যাদি দেশ সহ ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যের বহু মেয়ে পাচারকারীদের প্রলোভনে পা দেয়৷ শেষমেষ শিলচরের নিষিদ্ধ পল্লীতে ঠাঁই হয় তাদের। তিনি সাম্প্রতিক উদ্ধার অভিযানের জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানান৷