Barak UpdatesIndia & World UpdatesHappeningsBreaking News
রোহিঙ্গা পাচার : একযোগে এনআইএর অভিযান, গ্রেফতার ৪৪ দালাল, বরাকে ৫
ওয়েটুবরাক, ৮ নভেম্বরঃ দশ রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে মানবপাচারের বিভিন্ন মডিউল। এ সবের বিরুদ্ধে এনআইএ বুধবার ভোরে বিএসএফ এবং স্থানীয় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে একযোগে অভিযান চালায়। মানব পাচারে জড়িত ৪৪ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে রয়েছেন কাছাড় জেলারও ৪ জন, হাইলাকান্দির একজন। আসলে আসামে যে পাঁচজন ধরা পড়েছেন, এরা সবাই বরাক উপত্যকারই। সর্বাধিক ২১ জনকে তুলে আনা হয় ত্রিপুরা থেকে। একজন করে গ্রেফতার হয়েছেন পুদুচেরি, হরিয়ানা ও তেলেঙ্গানায়। পশ্চিমবঙ্গেও তিনজন দালাল ধরা পড়েছেন। কর্নাটক ও তামিলনাড়ুতে ধৃতদের সংখ্যা ক্রমে ১০ ও ২।
মূলত ভারত-বাংলা সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় দালালরা কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে রোহিঙ্গাদের ভারতে ডেকে আনে। পরে ছড়িয়ে দেয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। গুয়াহাটিতে আসাম পুলিশ টাস্ক ফোর্সের দায়ের করা এই মামলারই তদন্তে নেমে জয়পুর, চেন্নাই ও বেঙ্গালুরুতে আরও তিনটি পৃথক মামলা নেয় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাটি। পরে সবকটি মামলার তদন্তের ভিত্তিতে বুধবার একযোগে ৫৫ স্থানে অভিযান চালায়। বাজেয়াপ্ত হয় ২০ লক্ষ ভারতীয় টাকা এবং ৪৫৫০ মার্কিন ডলার। বেশ কিছু মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, পেন ড্রাইভও রয়েছে ওই তালিকায়। প্রচুর জাল আধার কার্ড, পেন কার্ড তাদের কাছে পাওয়া গিয়েছে বলে এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই অভিযানে আসাম পুলিশ বিশেষ ভূমিকা নেয়। সতেরোটি টিম দিয়ে এ দিন সাহায্য করে। মামলার সূচনাও বরাক উপত্যকাতেই। গত ফেব্রুয়ারিতে অসমের করিমগঞ্জ রেলস্টেশনে রোহিঙ্গাদের একটি দল ধরা পড়ে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরা দিয়ে অবৈধভাবে রোহিঙ্গারা ভারতে প্রবেশ করে। পরে অসম হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। আসাম পুলিশ করিডরটি ভেঙে দিতে ছক কষে। একে একে ৪৫০ অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে আটকে ওপারে পাঠিয়ে দেয়। তাদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা। কয়েকজন ছিলেন বাংলাদেশের নাগরিকও।
এত বড় সংখ্যা বলে পুলিশকে বেশ ভাবায়। বিস্তৃত খোঁজখবর নেন তাঁরা। দেখা যায়, রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের পেছনে কিছু দালাল মুখ্য ভূমিকা নেন। এরা শুধু ভারত-বাংলা সীমান্ত এলাকায় সীমিত নন। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে মানব পাচার নেটওয়ার্ক। তাদের ধরতে জুলাইয়ে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স গড়ে আসাম পুলিশ। গ্রেফতার করে মোট দশজনকে। এ বার সামনে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।
শুধু উপার্জনের জন্য দালালি করেন না এরা, জড়িয়ে রয়েছে দেশের নিরাপত্তার মতো বিষয়ও। তাই আসাম পুলিশ এনআইএ-কে এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে অনুরোধ জানায়। এরপরই কেন্দ্র সংস্থাটি তদন্তে নেমে দালালদের তালিকা তৈরি করে এবং বুধবার অভিযানে নামে।