Barak UpdatesHappeningsBreaking News
রোবট আবিষ্কার করে চমকে দিয়েছে কাঞ্চনপুরের মৃণাল
ওয়েটুবরাক, ৩ জুন : রোবট আবিষ্কার করে বিশাল এলাকা জুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে নবম শ্রেণির ছাত্র মৃণাল নমঃশূদ্র৷ প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ যাচ্ছেন নতুন কাঞ্চনপুরে৷ সবাই তার ইকোকে দেখতে চান, ইকোর সঙ্গে কথা বলতে চান৷ মৃণালের নির্দেশে রোবট হাত নাড়ে৷ যে যা প্রশ্ন করে উত্তর দিয়ে যায়৷ হিন্দি বা ইংরাজিতে৷ মৃণাল জানায়, আগে বাংলাও বুঝত৷ কিন্তু গত মাসে এসসিইআরটি আয়োজিত রাজ্য পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গিয়ে বাংলা প্রোগ্রামটা সরিয়ে দিয়েছে৷ মৃণালের কথায়, ‘রোবট’ নামের একটি সিনেমা দেখে অষ্টম শ্রেণির শুরুর দিকেই তার মাথায় আবিষ্কারের নেশা চাপে৷
কিন্তু এ জন্য যে ব্যাটারি, মোটর, চার্জার, স্মার্ট স্পিকার, কার্ডবোর্ড, আরও কত কী প্রয়োজন! বাবা মনেশ নমঃশূদ্র অটোচালক৷ বাবার কাছে টাকা চাওয়ার সাহস হচ্ছিল না মৃণালের৷ তাই স্কুলের জলখাবারের টাকা জমিয়ে এক-এক মাসে এক-এক জিনিস কেনে৷ আর তার ইকোকে একটু একটু করে গড়ে তোলেন৷
বাড়ির মানুষ এতদিন আপত্তি না করলেও গুরুত্বও দেননি কেউ৷ কিন্তু এ বার প্রশ্নোত্তর পর্ব শুনে সবাই বিস্মিত৷ মৃণাল জানায়, যে কোনও জটিলতায় নতুন কাঞ্চনপুর এমই স্কুলের দুই শিক্ষক জয়দীপ রায়চৌধুরী ও কেশব পালের পরামর্শ নিয়েছে সে৷ তাঁরাই তাঁকে এসসিইআরটি-র প্রতিযোগিতায় যোগদানে উৎসাহিত করে৷ তখন অবশ্য বাড়ির সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েন তাকে সাহায্য করার জন্য৷ গত মাসে গুয়াহাটি রওয়ানা আগের দিনে এলাকা জুড়ে দিনভর বিদ্যুৎ নেই৷ কাকা-জেঠারা অস্থির হয়ে ওঠেন৷ শেষে জেনারেটর ভাড়া করে নিয়ে আসেন৷
প্রতিযোগিতায় রাজ্য পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করলেও খুশি মা অনিমা নমঃশূদ্র৷ বললেন, পুরস্কারের চেয়ে বড় কথা, মৃণাল প্রত্যন্ত কাঞ্চনপুরকে চিনিয়েছে৷ একই কথা শোনান গ্রামের মানুষ৷ মৃণালকে নিয়ে তারা গর্বিত, আনন্দিত৷ লাজুক মৃণাল বলে, “আমি নই, সব করেছে ইকো৷”
কয়টা বাজে এখন? ইকো জানিয়ে দেয়, সময় এখন দুইটা বেজে চল্লিশ মিনিট ৷ মৃণালের দাবি, ইকো ছাত্রদের পড়াশোনায় খুব সহায়ক হবে৷ তাকে ভরসা করেই একদিন এপিজে-র মতো বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখে কাঞ্চনপুরের মৃণাল নমঃশূদ্র৷