NE UpdatesHappeningsBreaking News
রিয়াং পুনর্বাসন বিতর্কে বনধ, পুলিশের গুলি, ত্রিপুরায় হত ১
২১ নভেম্বরঃ মিজোরাম থেকে বিতাড়িত রিয়াংদের পুনর্বাসনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে গত ৬দিন ধরে উত্তর ত্রিপুরায় বনধ চলছে। শনিবার তা হিংস্র চেহারা নেয়। সকালে পুলিশের সঙ্গে বনধ সমর্থকদের কলহ বাঁধে। তাতে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের (টিএসআর) জওয়ানরা গুলি চালালে ১জন প্রাণ হারান। জখম হয়েছেন অন্তত ২০জন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের আগরতলার জিবি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের ধর্মনগর হাসপাতালে চিকিতসা চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, পানিসাগরে সংঘটিত এই ঘটনায় মৃতের নাম শ্রীকান্ত দাস। বয়স ৪৫ বছর। তিনি দশদার বাসিন্দা, পেশায় কাঠমিস্ত্রি। আহতদের মধ্যে কয়েকজন পুলিশও রয়েছেন। বিশ্বজিত দেববর্মা নামে এক দমকল কর্মীর অবস্থা গুরুতর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পানিসাগর ও কাঞ্চনপুরে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানে স্থানে সিআরপি ও টিএসআর জওয়ানদের পিকেট বসানো হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উত্তর ত্রিপুরার জেলাশাসককে তদন্ত করে একমাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা করতে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অনির্দিষ্টকালীন বনধ গত পাঁচদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে চললেও এ দিন হিংসাত্মক হয়ে ওঠার পেছনে কারণ হিসাবে শুক্রবারের কিছু ঘটনাকেই দায়ী করা হচ্ছে৷ একদল রিয়াং যুবক সেদিন এক বাঙালি পাম্প-অপারেটরকে মারধর করে। ৩৬টি বাঙালি বাড়িতে তারা হামলা চালায়। তাতে ১১০জন বাড়িছাড়া রয়েছেন। অভিযোগ, তাদের গরু-ছাগল রিয়াংরা নিয়ে গিয়েছে। একে ঘিরে শনিবার সকাল হতেই উত্তেজনার পারদ চড়ছিল৷ পরে পুলিশের গাড়ি পানিসাগরে যেতেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে৷
প্রসঙ্গত, তেইশ বছর আগে মিজোরাম থেকে বিতাড়িত রিয়াংদের ত্রিপুরায় স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য পুনর্বাসন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিপ্লব দেব নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা। তাতেই অসন্তুষ্ট অউপজাতি জনতা সোমবার থেকে বনধ পালন করছিল। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, পুলিশ এ দিন বিনা প্ররোচনায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালায়।
পুলিশের বক্তব্য, জাতীয় সড়ক অবরোধের নামে আন্দোলনকারীরা এ দিন উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে। বেশ কিছু সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করে তাঁরা। তিনটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়৷ তখনই পুলিশকে তাদের প্রতিহত করতে হয়।
হিংসাত্মক ঘটনার পর সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা মন্ত্রী শান্তনা চাকমা এবং স্থানীয় বিধায়ক ভগবান দাস আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি বনধ প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে। বিজেপির পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে নিহতের নিকটাত্মীয়কে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে৷ পুলিশ বা আন্দোলনকারী সকল আহতের চিকিৎসাই সরকার করাবে৷
সিপিএম পুরো বিষয়টির জন্য রাজ্য সরকারকে দোষী করেছে। পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা সম্পাদক পবিত্র কর বলেন, ছয়দিন ধরে বনধ চলছিল, সরকারের পক্ষ থেকে কেউ তাঁদের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন মনে করেননি। মুখ্যমন্ত্রী ব্যস্ত নানা উদ্বোধনী সভায়।