Barak UpdatesHappeningsBreaking News

রাজস্বহীন শিলচর ওনজিসি বেস, উদ্বিগ্ন বিডিএফ, মন্ত্রীকে পদক্ষেপ গ্রহণের আর্জি

ওয়েটুবরাক, ১৫ ডিসেম্বর : কাছাড় ওনজিসি ফরোয়ার্ড বেসের (যার নতুন নাম আসাম আরাকান ফল্ট বেল্ট এক্সপ্লোরেটরি অ্যাসেট) রাজস্ব আদায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। এভাবে চললে আগামীতে অনুৎপাদনশীল বলে এটি বন্ধও হয়ে যেতে পারে।

আজ এই ব্যাপারে শ্রীকোনা ওনজিসি বেসের অ্যাসেট ম্যানেজারের হাতে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রীর উদ্দেশে স্মারকপত্র তুলে দিলেন বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট সদস্যরা।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের মুখ্য আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, এদিন তাঁদের এএএফবির অ্যাসেট ম্যানেজার বিপুল গোঁহাইর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং তা থেকে পরিষ্কার, এই বেস থেকে উৎপাদনের কোনও সমস্যা নেই। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর আগে দিল্লি থেকে আগত বিশিষ্ট ভূতত্ত্ববিদ পি কে নন্দীও একই ব্যাপার উল্লেখ করেছিলেন এবং এই অঞ্চলের পেট্রোলিয়াম সম্পদের প্রতুলতাকে তিনি আরব দেশের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। জয়দীপ বলেন, যেহেতু এখানে মূলতঃ প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদিত হয় ফলে তা সঞ্চয় বা ব্যবহার করার মতো পরিকাঠামো না থাকলে উত্তোলন সম্ভব নয়। রাজ্য সরকার এই কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন আসাম গ্যাস এজেন্সিকে, যারা আবার বরাকে এই কাজের বরাত দিয়েছে পূর্ব ভারতী গ্যাস এজেন্সি নামক সংস্থাকে। কিন্তু এই পুরো কাজটিই ঢিমেতালে চলছে।

শিলচরে প্রতি গৃহে পাইপলাইনে গ্যাস সংযোগ করার প্রস্তাব রয়েছে। রয়েছে সিএনজি প্ল্যান্ট তৈরির প্রস্তাবও। এছাড়াও গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রভূত সুযোগ রয়েছে। কিন্তু কোনও ব্যাপারেই সঠিক অগ্রগতি নেই। ফলে উৎপাদনের ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে স্থানীয় ওএনজিসি কর্তৃপক্ষকে। এতে তাদের রাজস্ব আদায় তলানিতে ঠেকেছে এবং এই অবস্থা বেশিদিন চললে অনুৎপাদনশীল দেখিয়ে কাছাড় প্রকল্পকে বন্ধ করে দেবার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ ইদানীং কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে উত্তর পূর্ব সহ বিভিন্ন রাজ্যগুলির তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসকে পাইপলাইনের মাধ্যমে সংযুক্ত করার কাজ চলছে যা আগামীতে সারা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হবে। তাই এই উপত্যকার প্রাকৃতিক সম্পদ যদি এখানে ব্যবহার করার মতো পরিকাঠামো না থাকে, তবে তা দিয়ে অন্য রাজ্য লাভবান হবে। তাই এটি নিশ্চিতভাবেই উদ্বেগের বিষয়।

বিডিএফ মিডিয়া সেলের মুখ্য আহ্বায়ক এদিন এই ব্যাপারে বরাকের জনপ্রতিনিধিদের একহাত নিয়ে বলেন, এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে যাদের বলিষ্ঠ ভূমিকা নেবার দরকার ছিল তারা কার্যত নিশ্চুপ। তিনি বলেন, বরাকে যা প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডার রয়েছে তার কিয়দংশ সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে এই উপত্যকার অর্থনীতি বদলে দেওয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, এই শক্তির উৎস থেকে লাভবান হতে পারে চা বাগান সহ সমস্ত শিল্প ক্ষেত্র। বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বাবলম্বী হতে পারে বরাক। এখানে এই প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের উপযুক্ত পরিকাঠামো সত্বর তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার উপর চাপ দিতে এখন থেকে তাঁরা উদ্যোগী হবেন বলে জানালেন বিডিএফ নেতা জয়দীপ। এই ব্যাপারে জনগণকেও সজাগ সরব হবার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি ।

এছাড়া এখানকার রিগগুলো অতি ব্যবহারের ফলে নষ্ট হয়েছে। পুরনো উৎপাদনশীল তৈলকূপগুলির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ হলে পুনরায় উৎপাদন সম্ভব। এসব ব্যাপারেও অবিলম্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে উদ্যোগী হবার দাবি জানায় বিডিএফ৷

এদিনের কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায়, বিডিএফ যুব ফ্রন্টের মুখ্য আহ্বায়ক কল্পার্ণব গুপ্ত, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে, যুব ফ্রন্ট আহ্বায়ক দেবায়ন দেব প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker