NE UpdatesHappeningsBreaking News

মেঘালয়ের বাঙালিরা জোট বাঁধলেন, প্রতিবাদপত্র পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রীকে

১৮ নভেম্বর: ‘মেঘালয়ের সব বাঙালিই বাংলাদেশি’, ‘বাঙালি মেঘালয়, মিজোরাম, অসম, ত্রিপুরায় তোমাদের অত্যাচার বন্ধ হোক’। এ সব পোস্টারিংয়ের প্রতিবাদে দেরিতে হলেও মেঘালয়ের বাঙালিরা একজোট হলেন৷ প্রতিবাদপত্র পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার কাছে। নেতৃত্বে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মানস চৌধুরী৷ তিনি বলেন, “ আগে ইংরাজদের ভয়, স্বাধীনতার পরে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ভয়ে বাঙালি গলা তোলেনি। কিন্তু এবার খাসি ছাত্র সংগঠনের বাঙালি বিরোধী মনোভাবের বিরুদ্ধে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।”

প্রতিবাদপত্রে বলা হয়েছে, মেঘালয়ের সব বাংলাভাষীকে যে ভাবে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দিয়েছে খাসি ছাত্র সংগঠন তা দুঃখজনক, অন্যায় কাজ। ইংরেজরা আসার আগে থেকে বাঙালিদের সঙ্গে মেঘালয়ের যোগ। সিলেট, ময়মনসিংহ ও আশপাশের মানুষের বাণিজ্য চলত ভূমিপুত্রদের। মেঘালয় নামটাও এক বাঙালিরই অবদান। এত শতক ধরে এখানকার খাসি, গারো, জয়ন্তিয়াদের সঙ্গে বাঙালির সম্প্রীতির সম্পর্ক। প্রথমে চেরাপুঞ্জি পরে শিলংকে অবিভক্ত অসম ও শ্রীহট্টের রাজধানী করার পরে এখানকার প্রশাসনিক কাঠামোও বাঙালিরাই তৈরি করে। শিলং শহরে বিদ্যুৎ এনেছেন এক বাঙালি। এখনও শিলংয়ের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক সংবাদপত্রের মালিক এক বাঙালি। ষাটের দশকে পার্বত্য রাজ্য ও ভাষার দাবিতে লড়াই চলার সময় এখানকার বাঙালিরা পাহাড়ি জনজাতির পাশে, মেঘালয়ের নেতাদের পাশে থেকেছেন। শিলংয়ে ১২টি স্কুল, ৬টি কলেজ বাঙালিরাই তৈরি করেছে শিক্ষার বিস্তারের জন্য। রাজ্য প্রশাসন, পুলিশ, বিচারব্যবস্থার বিভিন্ন পদে বাঙালিরা দায়িত্ব সামলেছেন।

স্মারকপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রথম ১৯৭৯ সালে দাঙ্গা বাঁধে। ৫০ জনের প্রাণ যায়। বহু বাঙালি ঘরছাড়া হন। অনেকের দোকান-বাড়ি পোড়ানো হয়। কিন্তু কোনও হামলাকারী সাজা পায়নি, কোনও বাঙালি ক্ষতিপূরণ পায়নি। আজ মেঘালয়ে বাঙালির সংখ্যা নগণ্য। কিন্তু তারপরেও, সব বাঙালিকে ‘বাংলাদেশি ও বহিরাগত’ বলে দাগিয়ে দেওয়া দুর্ভাগ্যজনক৷

মেঘালয়ে বাঙালিদের অস্তিত্বের সঙ্কটকে রুখতে বেশ কয়েক দফা দাবি জানান বাঙালিরা। তার মধ্যে রয়েছে, মেঘালয় সরকার যেন রাজ্যের ভাষিক বা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সাংবিধানিক অধিকার, জীবন, সম্পত্তি, ভাষা ও ধর্মের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেয়। রাজ্যের ভাষিক, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং সুযোগ-সুবিধা নিয়ে নির্দিষ্ট নীতি তৈরি করা হোক। সরকারি চাকরিতে তাদের কোটা সম্পর্কে স্পষ্ট নীতি ঘোষিত হোক। অ-ভূমিপুত্রদের ট্রেড-লাইসেন্স দেওয়ার ব্যাপারে ষষ্ঠ তফশিলের নিয়ম পালিত হোক। যে কোনও মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দমন করতে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিক রাজ্য সরকার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker