Barak UpdatesHappeningsBreaking News

“মুষ্টিমেয় কয়েকজন ছাড়া কাউকে পাশে পাইনি”, আক্ষেপ বিডিএফের

ওয়েটুবরাক, ২১ অক্টোবর : শিলচরে সরকারি তরফে অসমিয়া ব্যানার লাগানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিল বিডিএফ যুবফ্রন্ট ও এবসোর সদস্যরা। পরবর্তীতে এনিয়ে সারা আসামে বিপুল প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। যথারীতি ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সংবাদমাধ্যম সম্পূর্ণ মিথ্যা কিছু অভিযোগ ও অপপ্রচার চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের উপর চড়াও হয়। এসবের প্রেক্ষিতে বিডিএফ, বিডিওয়াইএফ আজ বৃহস্পতিবার নিজেদের অবস্থান জানায়৷

তাঁদের কথায়, অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও  এই দুই সংগঠনের সদস্যরা যে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, তাঁর ফলে প্রশাসন বিতর্কিত ব্যানারটি সরাতে বাধ্য হয়েছেন। আগামীতেও এই ধরণের পদক্ষেপ নিতে তারা কিছুটা হলেও চিন্তা করবেন। এইটুকু সাফল্যের দাবিদার কিন্তু উক্ত দুই সংগঠনের সদস্যরাই।

তাঁরা বারবার বলেন, “আমাদের এই প্রতিবাদ কোনও ভাষা বা ভাষিক গোষ্ঠীর প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত ছিল না৷ এটি ছিল ভাষা আইন লঙ্ঘনকারী সরকারি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে।”

তবে এরজন্য বিডিএফ এবং এবসো সদস্যদের দীর্ঘ পুলিশি জেরার মুখোমুখি হতে হয়েছে। উভয় সংগঠনের পদাধিকারীদের ঘন্টার পর ঘন্টা থানায় কাটাতে হয়েছে। রাজু দেব ও সমর দাসকে পুলিশ মিথ্যে সন্দেহ করে গ্রেফতারও করে। একরাত তাঁদের লকআপে কাটাতে হয়। পরদিন বিকেলে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন সিজেএম। একে তাদের নৈতিক জয় বলেই দাবি করা হয়।

তাঁরা আক্ষেপ প্রকাশ করেন, “মুষ্টিমেয় কয়েকজন শুভানুধ্যায়ী ছাড়া এই পুরো কাণ্ডে আমরা কাউকে সঙ্গে পাইনি।” সাধন‌ পুরকায়স্থ, কমল চক্রবর্তী, জিষ্ণু দত্তের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘যে কয়েকজন পাশে ছিলেন, তাঁদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি গতকালের আইনজীবী সৌমেন চৌধুরী ও এবসোর কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রথীন্দ্র দাসকে ,যাদের অক্লান্ত উদ্যোগ ছাড়া এই জামিন সম্ভব হত না।”

তাঁরা কৃতজ্ঞতা জানান উৎপল দে, চিত্ত পাল সহ ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বাঙালি সংগঠনের নেতাদের, যারা‌ বাঙালির এই নায্য অধিকার নিয়ে মুখ খুলেছেন এবং পাশে দাঁড়িয়েছেন।  পাশাপাশি বরাকের সমস্ত সংগঠন, বুদ্ধিজীবী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নীরবতা বা কৌশলগত ভূমিকায় তাঁরা ব্যাথিত বলে খোলামেলা জানিয়ে দেন। তাঁদের কথায়, “শাসকদলের কথা না হয় বাদই দিলাম, মুষ্টিমেয় এক-দুজন ছাড়া বাকি সবাই ডিপ্লোমেটিক মন্তব্য করেছেন। সহানুভূতি তো দুরের কথা কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগ পর্যন্ত করেননি।” একে নিজেদের দুর্ভাগ্য বলেই মন্তব্য করেন তাঁরা।

ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার কিছু সংগঠনের নেতা লাগাতার শারিরীক নিগ্রহের হুমকি দিচ্ছেন এবং বাঙালিদের অসাংবিধানিক ভাষায় গালিগালাজ করে চলেছেন। মাসখানেক আগে এইসবের অভিযোগে বিডিএফ শৃঙ্খল চালিহার বিরুদ্ধে শিলচর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিল। আজ অব্দি তার বিন্দুমাত্র অগ্রগতি নেই। শিলচর থানায় এইসব ব্যাপারে দয়ানন্দ বুড়াগোহাই সহ বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডজনখানেক মামলা করা হয়েছে। সমস্ত মামলা  পুলিশ প্রশাসন তাদের নিজস্ব জেলায় স্থানান্তরিত করেছে। অথচ বিডিএফ-এর প্রদীপ দত্তরায়, কল্পার্ণব গুপ্ত ও হৃষীকেশ দের বিরুদ্ধে ব্রহ্মপুত্র উপত্যাকায় এফআইআর হতেই এর ভিত্তিতে পুলিশি নোটিশ জারি করেছে। তাদের ২৫ অক্টোবর গুয়াহাটিতে গিয়ে পুলিশি জেরার সম্মুখীন হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের অভিযোগ, এই রাজ্যে আইনি প্রক্রিয়াও স্থান,  জাতিগোষ্ঠী অনুযায়ী পৃথক হয়।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন প্রদীপ দত্তরায়, পার্থ দাস, জহর তারন, কল্পার্ণব গুপ্ত, ইকবাল নাসিম চৌধুরী, প্রমোদ শ্রীবাস্তব, কপিল কর পুরকায়স্থ, হৃষীকেশ দে, জয়দীপ ভট্টাচার্য, দেবরাজ দাশগুপ্ত, দেবায়ন দেব ও অমিত চৌধুরী৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker