Barak UpdatesHappeningsBreaking News

মহীতোষ পুরকায়স্থের ১০৩-তম জন্মদিন পালন করল শিলচর গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠান

ওয়েটুবরাক, ৩০ জুলাই : জননেতা মহীতোষ পুরকায়স্থের ১০৩-তম জন্মদিন পালন করল শিলচর গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠান। শুক্রবার এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি শান্তনু দাস।  প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কবি সাংবাদিক অতীন দাশ এবং বিশেষ অতিথি  রসরাজ দাস।

প্রথমে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, সঙ্গে বেদমন্ত্র উচ্চারণ করা হয়। একে একে সবাই মহীতোষ পুরকায়স্থের প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন । অতিথিদের বরন করে নেওয়ার পর উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন সঙ্গীতশিল্পী কল‍্যাণী দাম৷ সঙ্গে ছিলেন দীপ্তি রানী দে এবং অনিতা বোস। একে একে বক্তব্য রাখেন শান্তনু দাস, অতীন দাশ, রসরাজ দাস, হরিদাস দত্ত, সুকল্পা দত্ত, নীলিমা ভট্টাচার্য, শেখর পালচৌধুরী, লোকেশ চন্দ্র সাহা, ভাস্কর দত্ত, পিনাক রায়, হানিফ বড়ভুইয়া, মলয় ভট্টাচার্য, মৃন্ময় রায় প্রমুখ।

বক্তাগণ মহীতোষ পুরকায়স্থের জীবনের বিভিন্ন ঘটনার উপর বিশেষ আলোচনা করেন । তাঁরা বলেন, তিনি ছিলেন শিলচর গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন সভাপতি, একষট্টির ভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা, প্রাক্তন সাংসদ এবং আসামের একসময়ের অত্যন্ত প্রভাবশালী প্রাক্তন মন্ত্রী৷ তবে সব পদাধিকার ছাড়িয়ে বরাক উপত‍্যকার মানুষের কাছে তিনি একজন বিশিষ্ট জননেতা৷

তাঁদের কথায়, মহীতোষ পুরকায়স্থ আজীবধ শুধু দিয়েই গিয়েছেন, কোনও কিছু পাওয়ার জন্য রাজনীতি করেননি তিনি। আসাম বিধানসভায় বরাক উপত‍্যকার মানুষের বিভিন্ন অভাব-অভিযোগের কথা নির্দ্বিধায় সরকারের কাছে তুলে ধরেছেন । একষট্টির ভাষা আন্দোলনের সময়ও সঠিক নেতৃত্বে ছিলেন মহীতোষবাবু।  গৌরবের সঙ্গে পুরসভার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। সাংসদ হয়েও অনেক সুখ‍্যাতি অর্জন করেছেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সবসময় তাঁর এক আন্তরিক সম্পর্ক থাকত। অহংকার, গরিমা, দাম্ভিকতা কখনও তাঁর ধারে-কাছে যেতে পারেনি। খাদির সাধারণ ধুতি-পাঞ্জাবি, সাধারণ চটি, একটা ছাতা এই ছিলো তাঁর সম্বল। আজকের এই আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিন্তাধারাও তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত বলে জানান তাঁরা।

গান্ধীবাগে একাদশ শহীদদের স্মৃতি ভবন, শহিদ অসিত ভট্টাচার্যের আবক্ষ মূর্তি স্থাপন, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত‍্য সন্মেলনের জন্ম দেওয়া ইত্যাদি বহু কাজ করে গিয়েছেন তিনি৷ এই উপত্যকায় বসবাস করা মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার ব্যাপারে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সজাগ। বক্তাদের আক্ষেপ, প্রয়াত মহীতোষ পুরকায়স্থের নামে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আজও একটা চেয়ার হলো না। হলো না শিলচরের শ্মশানঘাটে তাঁর অন্তেষ্টিক্রিয়া স্থলে স্মৃতি সৌধ নির্মাণও। তাঁদের দাবি, জননেতা মহীতোষ পুরকায়স্থের প্রতিমূর্তি স্থাপন করা হোক৷ তাহলে সমাজ এবং ভবিষ্যৎপ্রজন্ম উপকৃত হবেন। মানুষের মধ্যে দেশাত্মবোধ, চেতনাবোধ জাগ্রত হবে । তাই তাঁর মূর্তি স্থাপনের জন্যে সমাজের প্রত‍্যেক স্তরের মানুষের কাছে সাহায্য সহযোগিতার আবেদন রাখেন তাঁরা। সবাই বলেন, মহীতোষ পুরকায়স্থ রাজনীতি করতেন বটে, কিন্তু রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে কাজ করতেন।

দেশাত্মবোধক সংগীতের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি ঘটে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার দেব। সভায় অন‍্যান‍্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঊপালি পুরকায়স্থ, অতনু চৌধুরী, চন্দনা দে, পিনাকপানি নাথ, সজল কান্তি দাস, বাহার আহমেদ চৌধুরী, কাঞ্চন দাস, নীলমাধব দাস, সৌমিত্র শংকর চৌধুরী, পার্থপ্রতীম দাস, মনোজ বিশ্বাস প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker