Barak UpdatesAnalytics
মদ্যপায়ীর সংখ্যা কমেছে বলেই পুজোয় নেই দুর্ঘটনা-ধরপাকড়, দাবি আবগারি মন্ত্রীর
২০ অক্টোবরঃ পুজোর দিনগুলোতে মদ্যপানের প্রবণতা কমেছে। এমনটাই দাবি রাজ্যের আবগারি মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যের। তাঁর কথায়, এ শুধু বিভাগীয় মন্ত্রী হিসেবে অনুমানের কথা নয়। পুলিশ ও হাসপাতালের রিপোর্টের ভিত্তিতেই তাঁর এই সিদ্ধান্তে পৌঁছা। শুধু বরাকের উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, এই বছর পুজোর তিনদিনে একটিই দুর্ঘটনা ঘটেছে। উধারবন্দের পানগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। দশমীর রাতে কোনও দুর্ঘটনার খবর নেই। একইভাবে পুলিশকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, মদ খেয়ে ঝামেলা বা মারপিটের ঘটনা নেই বললেই চলে। গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর দুর্ঘটনায় জখম হয়ে চিকিতসার জন্য তাঁদের কাছে গিয়েছেন খুব কম মানুষ। মদ সংক্রান্ত সমস্যায় কেউ এই চারদিনে হাসপাতালে ভর্তি হননি। সে সব বিচার করেই আবগারি মন্ত্রীর সন্তুষ্টি, সমগ্র অসমে মদ-যন্ত্রণা কমেছে।
কীভাবে তা সম্ভব হয়েছে? পরিমলবাবু বলেন, একদিকে নানাভাবে সচেতনতা গড়ে তোলা হয়েছে। অন্যদিকে, পুজোর আগে প্রতি জেলায় কড়া অভিযান চালানো হয়েছিল। সহস্রাধিক লোক শাস্তি পেয়েছেন। তাঁর কাছে আরও খুশির কথা, গত দুই-আড়াই বছরে মদ্যপায়ীর সংখ্যা ৩০ শতাংশ কমেছে। মদের উতপাদন, আমদানি ইত্যাদি হিসেব থেকেই বিভাগীয় মন্ত্রী তা জানতে পেরেছেন। তবে রহস্যজনকভাবে রাজস্বের দিক থেকে উল্টো ঘটনাই ঘটেছে। দুইবছর আগে বছরে আবগারি রাজস্ব মিলছিল ৪০০ কোটি টাকা। গত বছর পাওয়া গিয়েছে ১৮০০ কোটি। চলতি বছরে প্রথম ৫ মাসে সরকারি কোষাগারে আবগারি মন্ত্রক জুগিয়েছে ১১০০ কোটি টাকা। বছর শেষে তা ২৫০০ কোটি টাকা ছাড়াবে বলে তিনি আশা করছেন। পরিমলবাবু জানান, আগের লিকেজগুলো সব বন্ধ করাতেই এই বিপরীতমুখী বিষয় দেখা গিয়েছে। মদ বিক্রি কমলেও রাজস্ব কমছে না। তিনি জানান, এখন সমস্ত চালান অন-লাইন করা হয়েছে। এ ছাড়া, কর সংগ্রহ করা হয় বিক্রির আগেই। এ ছাড়া, পাট্টার মহালে লোকসান হতো। এখন পাট্টার ব্যাপারটাই তুলে দেওয়া হয়েছে। সে জায়গায় এসেছে কান্ট্রি স্পিরিট।
তবে অসমকে ড্রাই স্টেট করা কোনওমতে সম্ভব নয় বলে তিনি খোলামেলা মত প্রকাশ করেন। কারণ হিসেবে জানান, এই রাজ্য বিভিন্ন জাতি-জনজাতি গোষ্ঠীর বাস। অনেকের কম্যুনিটি ড্রিঙ্কস রয়েছে। আহোম সহ বহু জনগোষ্ঠী অতিথি গেলেই কম্যুনিটি ড্রিঙ্কস দিয়ে আপ্যায়ণ করে। তাঁদের এই পরম্পরা ভেঙে দেওয়ার কথা এখনই ভাবা যায় না।
তিনি এ দিন সাংবাদিকদের ডেকে বরাকবাসীর উদ্দেশে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানান। একই সাংবাদিক সম্মেলনে বিজয়ার শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন বিজেপির জেলা সভাপতি কৌশিক রায়ও। তিনি বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এই বছর অধিকতর শান্তিতে পুজোপর্ব সম্পন্ন হয়েছে। পুজো আয়োজকরা কৃষ্টি-সংস্কৃতির দিকে বিশেষ যত্নবান ছিলেন বলেই দাবি করেন কৌশিকবাবু।