Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ভোট আটকে কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে শিলচরে পুরসভার সামনে নাগরিক ধরনা
ওয়েটুবরাক, ২৯ জুলাইঃ জলকর সহ বিভিন্ন মাশুল অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে সোমবার শিলচর পুরসভার সামনে দুই ঘণ্টা ধরনায় বসেন শিলচর পুর এলাকার বাসিন্দা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ৷ তাঁরা বর্ধিত সমস্ত ধরনের কর-মাশুল প্রত্যাহারের দাবিতে পুরসভার আধিকারিকের মাধ্যমে রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রীর স্মারকলিপি পাঠান৷
এই ইস্যুতে শহরের সকল ওয়ার্ডের প্রতিবাদী জনতা বেশ কিছুদিন আগেই সংগঠিত হয়েছেন, গঠন করেছেন প্রগতিশীল নাগরিক সমন্বয় মঞ্চ৷ এই ব্যানারেই সমবেত হন দুই প্রাক্তন পুরপ্রধান তমালকান্তি বণিক ও মনোজ পাল, মঞ্চের প্রধান কর্মকর্তা ধ্রুব সাহা ও বাসুদেব শর্মা সহ সজল বণিক, মহীতোষ পাল, অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক অজয় রায়, আইনজীবী আজয় রায়, নন্দদুলাল সাহা, সুব্রত নাথ, সঞ্জীব রায়, জয় বরদিয়া, সীমান্ত ভট্টাচার্য, কমল চক্রবর্তী, হরিদাস দত্ত, হিল্লোল ভট্টাচার্য, বনানী রায়চৌধুরী, আলি রেজা ওসমানি প্রমুখ৷ তাঁরা বলেন, শিলচর পুরসভাকে নিগমে উন্নীত করার কথা ঘোষণা করে সরকার না গঠন করছে পুর নিগম, না করছে পুরসভার নির্বাচন৷ অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অফিসারদের হাতে পুরসভা পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দিয়েছে এই সরকার৷ অফিসাররা তাঁদের মর্জিমত জলকর ১২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করেছে৷ জমি কেনাবেচার অনুমতির মাশুল, বিল্ডিং নির্মাণের কর, ট্রেড লাইসেন্স ফি ইত্যাদি অন্যান্য পুরকরও অনেকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ এমনকী বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ফর্মের মূল্যও৷
তাঁদের কথায়, নির্বাচিত পুর বোর্ড না থাকায় নাগরিক সমস্যা চরমে উঠলেও কারও কোনও ভূমিকা নজরে পড়ে না৷ শহরের জমাজলের প্রচণ্ড সমস্যা৷ সড়ক-ফুটপাত ভাঙা৷ পানীয় জল সরবরাহ নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই৷ তাই তাঁদের দাবি, নির্বাচিত পুরবোর্ড না হওয়া পর্যন্ত ওই সব কর-মাশুল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকর করা চলবে না৷
তাঁদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে শিলচর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক সহ অন্যান্য সব ক’টি ভাঙা রাস্তা, গলিপথ ও ফুটপাত দ্রুত মেরামত করতে হবে৷ জমাজল সমস্যার স্থায়ী সমাধানে শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাঙ্গিরখাল, লঙ্গাইখাল, সিঙ্গেরখাল ও বাছাইখালগুলিকে আদি গভীরতা পর্যন্ত খনন করতে হবে। জমাজল সমস্যার আশু সমাধানে পাম্প সেটের মাধ্যমে জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বরাক নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণে ফুলেরতল থেকে হরিটিকর পর্যন্ত নদী খননের দাবি পুরসভার পক্ষ থেকে জানাতে হবে। জমি ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকারের তৈরি করা পোর্টালে আসাম সরকারের জমির মূল্যায়নের তালিকা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যেহেতু কাছাড় জেলার ৮০ শতাংশ জমি পোর্টালে অন্তর্ভুক্ত হয়নি তাই আপাতত পুরনো পদ্ধতিতে জমি ক্রয়-বিক্রয় করার ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে এবং ২০২২ সালের জমির মূল্যায়নের তালিকা অনুযায়ী কর সংগ্রহ করতে হবে। প্রতিদিন দুইবেলা ন্যূনতম এক ঘণ্টা করে বিশুদ্ধ পানীয়জল সরবরাহ করতে হবে। পৌরসভায় দেড় কোটি টাকা বকেয়া প্রাপ্য রয়েছে বলে যে বয়ান দেওয়া হয়েছে, এ ব্যাপারে কোন্ কোন্ খাতে কার কার কাছে কত টাকা প্রাপ্য রয়েছে তা নিয়ে পুরসভা থেকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করারও দাবি জানান তাঁরা।
পুরসভার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক নবোত্তম শর্মা সম্মেলন স্থলে গিয়ে স্মারকপত্র গ্রহণ করে বলেন, মন্ত্রীর কাছে লেখা স্মারকপত্র তাঁরা তাঁর কাছে দ্রুত পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবেন। দাবিদাওয়াগুলি বাস্তবায়নের ব্যাপারেও তাঁরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সমূহের সঙ্গে কথা বলবেন।