Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ভুবন পাহাড় নাগা বিষ্ণুমন্দিরে দুদিনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন
ওয়েটুবরাক, ২৪ ফেব্রুয়ারি : বিভিন্ন কার্যসূচির মধ্য দিয়ে ভুবন পাহাড় নাগা বিষ্ণুমন্দিরের ৪৩-তম বার্ষিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন হলো শনিবার। বরাক উপত্যকার ঐতিহ্যবাহী ভুবন পাহাড়ে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নাগাদের প্রাচীন নিদর্শন হিসাবে পরিচিত নাগা বিষ্ণুমন্দিরে মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে আয়োজিত এবারের দুদিবসীয় বার্ষিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ঘিরে ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ পরিলক্ষিত হয়। প্রতিকূল আবহাওয়াকে উপেক্ষা করেও স্থানীয় জনগণ সহ আসাম, মণিপুর ও নাগাল্যান্ড থেকে আগত সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করেন দুদিবসীয় অনুষ্ঠানে ।
দুদিনের অনুষ্ঠানমালায় ছিল পূজার্চনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, এতে ভক্তিমূলক নাচ-গান পরিবেশিত হয়। নাগা বিষ্ণু মন্দির (রাকাই) গুহা ও তীর্থস্থান উন্নয়ন সোসাইটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক এল. পি কাবুই জানান, ১৯৮১ সালে ভুবন তীর্থে নাগা বিষ্ণুমন্দির স্থাপনের জন্য প্রথম বারের মতো কমিটি গঠিত হয়েছিল এবং পরবর্তীতে মন্দির কমিটির প্রচেষ্টায় সেখানে নাগা বিষ্ণুমন্দির স্থাপিত হয়। যদিও ১৯২০ সাল থেকেই নাগা সম্প্রদায়ের মানুষ পূজো দিতে ভুবন তীর্থে আসতেন । রানী মা গাইদিনলিউ উক্ত বিষ্ণুমন্দিরে এসে আরাধ্য বিষ্ণু দেবের আশিস নিয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তিনি জানান, মন্দির স্থাপনের পর প্রতিবছর উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা নাগা বিষ্ণুমন্দিরে আসছেন তাদের আরাধ্য দেবতার আশীর্বাদ নিতে। কিন্তু দূর দূরান্তের পর্যটকদের থাকার জন্য ভালো একটা গেস্ট হাউস না থাকায় অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এনিয়ে মন্দির উন্নয়ন কমিটি অবিলম্বে সেখানে একটি উন্নত মানের গেস্ট হাউস নির্মাণের জন্য সরকারের নিকট দাবি উত্থাপন করবে বলে জানান সাধারণ সম্পাদক এল .পি কাবুই। তিনি জানান, মন্দিরের আসা যাওয়ার রাস্তা ও পানীয়জলের সুব্যবস্থার সুরাহা করে দিতে স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রীর নিকট ইতিমধ্যেই দাবি পেশ করেছেন তারা এবং মন্দির কমিটি আশাবাদী, তাদের ন্যায্য দাবি পূরণ হবেই। এছাড়াও বিগত দিনে ধর্মান্তরিত হয়ে যারা অন্য ধর্ম বিশেষ করে খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন তাদেরকে পুনরায় সনাতন ধর্মে ফিরিয়ে আনার জন্য নাগা বিষ্ণুমন্দির (রাকাই) গুহা ও তীর্থস্থান উন্নয়ন সোসাইটির তরফে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এল.পি কাবুই।
উল্লেখ্য দুদিবসীয় অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্দির কমিটির সভাপতি গাইকাংনিং রিয়েমাই, জেলিয়াংরং ইউনিয়নের আসাম মণিপুর ও মিজোরাম প্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি আজেং রুয়াংমাই, অখিল ভারতীয় বনবাসী কল্যাণ আশ্রমের মণিপুর প্রদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক কুমারী নাইখোয়ানলিউ রংমাই, সাধন রংমাই, সমাজকর্মী গ্যালিম গ্যাংমাই, নাগা বিষ্ণুমন্দির (রাকাই) গুহা ও তীর্থস্থান উন্নয়ন সোসাইটির যুগ্ম সম্পাদক লুঙ্গথাওরাই রুয়াংমেই, আতংপি কামেই সহ অন্যান্যরা ।