Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ভাষাশহিদ স্টেশন নামকরণের ব্যাপারে সচেষ্ট হতে মন্ত্রী জয়ন্তকে বিডিএফের আহ্বান
ওয়েটুবরাক, ১০ নভেম্বর: ভাষাগৌরব সপ্তাহ উপলক্ষে শনিবার শিলচর বঙ্গভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কাছাড় জেলার অভিভাবক মন্ত্রী জয়ন্তমল্ল বরুয়া বলেছেন, উগ্র অসমিয়া জাতীয়তাবাদীরা অসমিয়া ভাষাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে আসাম ভেঙে ছোট ছোট রাজ্যের জন্ম হয়। প্রথম থেকে বারবার অসমিয়া ভাষা জোর করে চাপিয়ে দেবার অপপ্রয়াসের জন্যই রাজ্যে অসমিয়া বাঙালি এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে তিক্ততা তৈরি হয়েছে। অগ্রজদের এই অবিমৃষ্যকারিতার ফল ভুগতে হচ্ছে আজও। অসমিয়া ও বাংলা এই দুই ভাষা ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাবার পর এই তিক্ততার অবসান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
মন্ত্রী জয়ন্তমল্ল বরুয়ার এই সত্য উচ্চারণকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি রাজ্যের বাঙালিদের দীর্ঘদিনের দাবিগুলি পূরণের জন্য এদিন মন্ত্রীকে আহ্বান জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় এই প্রসঙ্গে বলেন, মন্ত্রী জয়ন্তমল্লর এই উপলব্ধি ও সত্যকথনের জন্য তাঁকে রাজ্যের প্রতিটি বাঙালির অভিনন্দন জানানো উচিত। এই প্রথম আসাম সরকারের কোনও মন্ত্রী সেই কথাগুলো স্বীকার করলেন, যা বিডিএফ জন্মলগ্ন থেকে বলে আসছে। জয়ন্ত বলেন, এই রাজ্যের বাঙালিরা একেবারেই কূপমন্ডুক নন। তাঁরা অসমিয়া ভাষা,সংস্কৃতিকে যথাযথ সম্মান করেন, তবে তা কখনই নিজেদের ভাষা-সংস্কৃতির অবমূল্যায়ন করে নয়। মন্ত্রীর এই বক্তব্য উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘদিনের ভুল বোঝাবুঝি ও তিক্ততার অবসানে সহায়ক হবে বলে এদিন আশা প্রকাশ করেন প্রদীপবাবু।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক এদিন আরও বলেন, যদিও জয়ন্তমল্ল বড়ো ও বাংলাকে রাজ্যের সহযোগী ভাষা বলেছেন কিন্তু সরকারি ভাবে বাংলার এখনও সেই স্বীকৃতি জোটেনি। আসাম বিধানসভার বিভিন্ন নামফলকে অসমিয়া ও বোড়ো ভাষা ব্যবহৃত হলেও বাংলার স্থান নেই। বরাকেও সরকারি কাজকর্মে বারবার ভাষা আইন লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। তাই উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে হলে মন্ত্রীকে এই ব্যাপারে সচেষ্ট হতে হবে। প্রদীপবাবু এদিন আরও বলেন যে, অসম সাহিত্য সভা স্থাপনের ক্ষেত্রে বাঙালিদের,বিশেষ করে নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এর প্রথম আহ্বায়ক মন্ডলীতে অসমিয়া ও বাঙালি উভয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এই সাহিত্য সভার কাজকর্ম থেকে বাংলা ব্রাত্য হয়ে আছে। তিনি বলেন, যদি এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য বৃহত্তর আসামের কৃষ্টি,সংস্কৃতির উন্নয়ন হয় তবে রাজ্যের এক তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার ভাষা বাংলার চর্চা ও বিকাশে এই সাহিত্য সভাকে সচেষ্ট হতে হবে। এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার তথা রেলমন্ত্রকের সবুজ সংকেত থাকা সত্ত্বেও শিলচর রেলস্টেশনের ‘ ভাষা শহিদ স্টেশন ‘ নামকরণের দাবিকে বাস্তবায়িত করার জন্যও এদিন মন্ত্রী জয়ন্তমল্লকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে জয়দীপ ভট্টাচার্য এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন।