Barak UpdatesIndia & World UpdatesHappeningsBreaking News

ভারতকে আরও এগিয়ে আসতে আহ্বান বাংলাদেশের মন্ত্রী ইমরানের, উষ্মাও

ওয়েটুবরাক, ৮ অক্টোবর : দুই দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে ভারতকে আরও একটু এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। শিলচর-সিলেট উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি অনেকটা উষ্মা প্রকাশ করেই বলেন, “আমরা হৃদয় উজাড় করে জড়িয়ে ধরতে চাই৷  তাদেরও সে ভাবে আসা চাই৷”

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে গড়ে তোলা হাইটেক পার্কে ভারতের ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী।  সিলেটের তামাবিলে ইকোনমিক জোনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ কিন্তু সেখানে ভারতের তেমন সাড়া মিলছে না বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর দাবি, এখানে বিনিয়োগ করে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললে দুই দেশের মানুষ উপকৃত হবে।

 ইমরান আহমদ বলেন, “আমরা হাইটেক পার্কে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাও করে দিয়েছি। এসব জায়গায় যে কেউ এসে বিনিয়োগ করতে পারবেন।”

এর পরই তাঁর গলায় আক্ষেপের সুর, তামাবিলে ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত রাখলেও ভারতের বিনিয়োগকারীদের কোনও সাড়া মিলেনি। তবে তিনি আশাবাদী, সিলেট শিলচর উৎসবকে ঘিরে বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্য প্রসার ঘটবে। তাঁর পরামর্শ, বাণিজ্য সম্প্রসারিত করতে মৈত্রী উৎসবে আলোচিত বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে।

ভারতের ভিসা পাওয়া নিয়েও বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ তাঁদের বক্তব্য, মেডিক্যাল ভিসা এবং পর্যটক ভিসা পাওয়া সহজই, কিন্তু অন্যান্য ভিসা বড় কঠিন, অনেক সময় লাগে।  বিশেষ করে, ভারতে ওয়ার্কিং ভিসা নিয়ে যাওয়ার খুব বেশি সুযোগ নেই। কিন্তু ভারতীয়রা বাংলাদেশে কাজের জন্য আসে।

সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথের সভাপতিত্বে সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিলও। ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ ইন্ডিয়া চ্যাপ্টারের সভাপতি ডা. রাধা তমাল গোস্বামী বলেন,  চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারত ব্যতিক্রম। তারপরও এককভাবে কিছু করলে হয় না। এই ফ্যাস্টিভাল দুই দেশের অনেক খুঁটিনাটি বিষয় সহজ করে দিয়েছে।
এর আগে গত ৫ অক্টোবর সিলেটেই অনুষ্ঠিত হয় ‘ইন্দো-বাংলা ডায়ালগ’-র একাদশ পর্ব৷ হোটেল গ্র্যান্ড সিলেটে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। সেই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন৷ তিনিই পরদিন শিলচর-সিলেট উৎসবের উদ্বোধন করেন৷ তিন দিনব্যাপী উৎসবে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের অতিথিরা আলোচনায় অংশ নেন।  বাংলাদেশের পক্ষে ছয়জন মন্ত্রী, ২০ জন সংসদ সদস্য সহ জাতীয় নেতারা অংশ নেন। ভারত থেকে ১৪০ জনের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।  ছিলেন  ভারতের হাই কমিশনার মি. প্রণয় ভার্মাও। শিলচরের তরফে গোটা কর্মসূচিতে মঞ্চে বসা এবং বক্তব্য রাখার সুযোগ পান একমাত্র তৈমুর রাজা চৌধুরী৷ তিনি প্রাঞ্জল বাংলায় দুই দেশের উন্নয়নে নানা পরামর্শ দেন৷ কাছাড় ক্যানসার হাসপাতালের বাংলাদেশ থেকে সরকারি-বেসরকারি অনুদান প্রত্যাশা করেন৷ বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রচুর ক্যানসার রোগী সোসাইটি পরিচালিত শিলচরের ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করান৷
প্রতিনিধি দলে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিলচর ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান মঞ্জুল দেব, বিজেপির কাছাড় জেলা সভাপতি বিমলেন্দু রায়, মহাবীর প্রসাদ জৈন প্রমুখ৷
প্রতিদিনই ছিল দুই বাংলার শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷ হয় মণিপুরি নৃত্যানুষ্ঠানও৷ সৌমিত্র শংকর চৌধুরীর পরিচালনায় শিলচরের সাংস্কৃতিক দলের নৃত্যানুষ্ঠানও ছিল উচ্চমানের৷ উপস্থিত দর্শকদের প্রশংসা কুড়োয়৷ সবশেষে সবাইকে মাতিয়ে তোলেন দুই শিল্পী মঞ্জুশ্রী দাস ও বিধান লস্কর৷

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker