Barak UpdatesHappeningsCultureBreaking News

ভাবীকালের উদ্যোগে মঞ্চনাটকে আলোক বিষয়ক নাট্য কর্মশালা

ওয়েটুবরাক, ২৮ জুন: ভাবীকাল-এর উদ্যোগে  “মঞ্চনাটকে আলোর ব্যবহার” শীর্ষক এক ত্রিদিবসীয় নাট্য কর্মশালা শুরু হয়েছে।  বিভিন্ন দলের উদ্যোগে অভিনয় কর্মশালা বরাক উপত্যকায় মোটামুটি নিয়মিতভাবে হলেও আলাদাভাবে আলোকসম্পাত নিয়ে কর্মশালা বরাক উপত্যকায় এই প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয়েছে। কর্মশালায় প্রশিক্ষার্থী হিসাবে শিলচর-করিমগঞ্জের একাধিক নাট্যদলের প্রতিনিধি এবং পরিচালকেরা অংশ নিয়েছেন৷ পরিচালনায় রয়েছেন জাতীয় নাট্য বিদ্যালয়ের স্নাতক, আলোকসম্পাত বিশেষজ্ঞ সেঁজুতি বাগচী৷ তিনি আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পারফরমিং আর্টস বিভাগে অংশকালীন অধ্যাপনাও করেছেন। বুধবার অনাড়ম্বর উদ্বোধনী সভার মাধ্যমে কর্মশালাটির সূত্রপাত হয়। ভাবীকাল থিয়েটার গ্রুপের সভাপতি রঞ্জন কুমার দাসের পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধান অতিথি আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী অধ্যাপক মানবেন্দ্র দত্ত চৌধুরী বলেন, ব্যক্তির মানবিক বিকাশের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সূচক সংস্কৃতিমনষ্কতা; আর এই বিকাশের সুযোগ করে দেয় এই ধরণের কর্মশালা। নাটক শুধু অভিনয়ের ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে না, দৃশ্য-শ্রাব্য মাধ্যম বলেই আলো-মঞ্চসজ্জা-আবহ এগুলিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

Rananuj

নাট্য পরিচালক শেখর দেবরায় বলেন, নাটক মানে এক ধরণের পাগলামো, আর এই পাগলামোর প্রেরণায়ই অনেক সময় আলোর ব্যবহারে প্রথাগত শিক্ষা ছাড়াই বিচিত্র রকমের পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়ে থাকে। কর্মশালাটি আলোর কাজে তরুণ প্রজন্মকে প্রাণিত করলে এটি সার্থকতা পাবে। অন্যান্যদের মধ্যে নাট্য পরিচালক শান্তনু সেনগুপ্ত, সায়ন বিশ্বাস, সুরজিত দেব, নৃত্য পরিচালক ড. মধুমিতা দাস ভট্টাচার্য, কর্মশালার সঞ্চালক শান্তনু পাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন প্রশিক্ষক সেঁজুতি বাগচীও।

তিনি বলেন, আলোর কাজটি সত্যিই প্রত্যাহ্বানের। নাটকের প্রথম দৃশ্যে কোনো অভিনেতা সংলাপ ভুলে গেলেও তৃতীয় দৃশ্য আসতে আসতে দর্শক তা ভুলে যান, কিন্তু আলোক সম্পাতের কোনো ত্রুটি যে ধাক্কা দর্শককে দেয়, তা মনে থাকে অনেকদিন। আলোক শিল্পীকে কাজ করতে হয় উপাদান এবং মঞ্চের নানান সীমাবদ্ধতার মধ্যে, একটা বা দুটি মহড়ার বেশি সুযোগ তার থাকে না। এই সীমাবদ্ধতাগুলিকে মাথায় রেখে আলোর পরিকল্পনা ও প্রয়োগ কী করে করতে হয় , তিনদিনের ক্লাসে প্রশিক্ষার্থীদের সে বিষয়ে কিছু ধারণা দেবার চেষ্টা করা হবে বলে তিনি জানান। ভাবীকালের উপদেষ্টা অধ্যাপক দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, বরাক উপত্যকায় থিয়েটার দলগুলির পারস্পরিক সমর্থন আর সহযোগিতার একটা পর্যায় গত দশ-পনেরো বছরের একটা ইতিবাচক প্রবণতা হিসাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই কর্মশালাটি দর্শকের চাহিদাকেই প্রতিফলিত করছে। নাট্যশালায় এখন দর্শকের যে জোয়ার নেমেছে, তাতে আলো–মঞ্চ-আবহের ক্ষেত্রে পেশাদারিত্ব স্বাভাবিক প্রত্যাশা হয়ে উঠেছে। সভায় আলোকশিল্পী টিন্টু রায়ও উপস্থিত ছিলেন।


উল্লেখ্য, ভাবীকাল দলটি যেমন উপত্যকায় প্রণালীবদ্ধ অভিনয় কর্মশালার সূচনা করেছে, তেমনি আলোকসম্পাতের জন্য এই কর্মশালাটিও উপত্যকায় প্রথম। এর আগে ভাবীকাল দুজন প্রশিক্ষার্থীকে আলোকসম্পাতের প্রশিক্ষণ নেবার জন্য ইম্ফলে প্রেরণ করেছিল বলে জানান সভাপতি রঞ্জন দাস। তিনদিনের এই কর্মশালাটিতে বিভিন্ন নাট্য পরিচালক তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করবেন। কর্মশালার শেষে আগামী ২৯ জুন শনিবার শিলচর বঙ্গভবনে সন্ধ্যা সাতটায় ভাবীকাল মঞ্চস্থ করবে মাল্টিমিডিয়া প্রযোজনা “মৃত্যুর সাথে অভিসার”। এতে আলোক পরিকল্পনায় থাকবেন কর্মশালার প্রশিক্ষক সেঁজুতি বাগচী। নাট্যামোদী দর্শকদের শনিবারের সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভাবীকালের পরিচালক শান্তনু পাল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker