Barak UpdatesHappeningsBreaking News

‘বৈচিত্র্য, অন্তর্নিবেশ ও পারস্পরিক সম্মান সম্পর্ক’ নিয়ে বিবেকানন্দ কেন্দ্রের আলোচনা 

ওয়েটুবরাক, ৯ জুনঃ বিবেকানন্দ কেন্দ্র কন্যাকুমারীর শিলচর শাখা এবং জিসি কলেজের যৌথ উদ্যোগে গুরুচরণ কলেজ অডিটোরিয়াম হলে ‘বৈচিত্র্য, অন্তর্নিবেশ ও পারস্পরিক সম্মান সম্পর্ক’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হল বৃহস্পতিবার।

বিবেকানন্দ কেন্দ্র কন্যাকুমারী শিলচর শাখার কো-অর্ডিনেটর রসরাজ দাসের পৌরহিত্যে আয়োজিত সভায় প্রথম পর্বে ছিল উদ্বোধনী পর্ব। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে সেমিনারের সূচনা করেন মঞ্চাসীন অতিথিরা। মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগে বিবেক সংগীত পরিবেশন করেন সুরজ কান্তি নাথ ও গনেশ বন্দনা পরিবেশন করেন ঋতুপর্ণা নাথ। এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিলচর এনআইটির প্রাক্তন ডিরেক্টর রজত গুপ্ত, সম্মানিত অতিথি  প্রবীণ শিক্ষাবিদ ড. বিভাস দেব, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিলচর চেম্বার্স অব কমার্স ও শিবসুন্দরী নারী শিক্ষাশ্রমের সভাপতি ড. অংশু কুমার রায়। শুরুতে সভার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন শিলচর পাব্লিক উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষা কবিতা সেনগুপ্ত। গোটা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সোসিয়েল সায়েন্সের অধ্যাপক জয়শ্রী দে।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বক্তব্য রাখতে গিয়ে  বিবেকানন্দ কেন্দ্র কন্যাকুমারীর শিলচর শাখার কো-অর্ডিনেটর রসরাজ দাস বলেন, বিবেকানন্দ ভারতের প্রাণ৷ কাজেই আমাদের সবাইকে বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করতে হবে। স্বামী বিবেকানন্দই প্রথম সমগ্র বিশ্বে সনাতন ধর্মকে তুলে ধরেন। আজকের দিনে বিবেকানন্দের দেখানো রাস্তা অনুসরণ করে সরকার চলছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশল নেতৃত্বের জন্য জি টুয়েন্টির অধ্যক্ষতা পেয়েছে ভারত। সমগ্র বিশ্ব আজকের দিনে ভারতের দিকে চেয়ে আছে। “বসুদৈব কুটুম্বকম” এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ এই শ্লোগানটা জি ২০কে দিয়েছে ভারত, মন্তব্য রসরাজ দাসের।

মুখ্য অতিথি শিলচর এনআইটির প্রাক্তন ডিরেক্টর অধ্যাপক রজত গুপ্ত বলেন, সি-২০ লোগোর মধ্যে যে শিখা রয়েছে তা স্ব-প্রেরণা ও নিঃস্বার্থ সেবার প্রতীক। সি-২০ লোগোর শিখা সুশীল সমাজের প্রতিটি সদস্যকে একত্রিত হয়ে থাকার বার্তা প্রদান করে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে আহ্বান জানায় জি-২০ । ‘বসুদৈব কুটুম্বকম ‘ এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ হচ্ছে মূল বিষয়। যা আমাদের একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত করে রাখছে।

ড. বিভাস দেব বলেন, সমাজ তথা দেশের জন্য বিবেকানন্দ কন্যাকুমারী যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে তা অতি প্রশংসনীয়। জি-২০, সি-২০ এর বিষয়ে তিনি বলেন, বিগত বছরে বিশ্বব্যাপী জি-২০ সম্মেলনে ভারত সভাপতিত্ব করার সুযোগ পায় এটা দেশবাসীর কাছে অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। জি-২০ সম্মেলনের সভাপতিত্বের পর দেশের প্রতিটি রাজ্য নিজেদের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে মতামত তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। আসাম এর মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য যে এ ধরনের সেমিনার, কর্মশালা আয়োজন করতে পেরেছে। তিনি তার জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

বিশেষ অতিথি শিলচর চেম্বার্স অব কমার্স ও শিবসুন্দরী নারী শিক্ষাশ্রমের সভাপতি ডঃ অংশু কুমার রায় বিবেকানন্দকে নিজের আদর্শ বলে উল্লেখ করেন। সনাতন ধর্মকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছিলেন বিবেকানন্দই। তিনি বিবেকানন্দের আদর্শ অনুসরণ করে এগিয়ে চলার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পাশ্চাত্যের অনুসরণ করে আমরা আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ভুলতে বসেছিলাম। কিন্তু সেই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আবার এক সুতোয় বেঁধে দিতে জি-২০ এর মাধ্যমে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। পরে সভায় বৈচিত্র্য, অন্তর্নিবেশ ও পারস্পরিক সম্মান সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করে বক্তব্য রাখেন এদিনের মুখ্য বক্তা ড. জীবেন্দু দত্ত। এদিনের সভা থেকে উঠে আসা বিভিন্ন মতামতের উপর সুপারিশ প্রদান করেন অধ্যাপক অর্জুন চৌধুরী, পরে তিনি অনুষ্ঠানে সারগর্ভ বক্তব্য রাখেন। এদিকে সভা থেকে উঠে আসা বিভিন্ন মতামতের ভিত্তিতে একটি রিপোর্ট তৈরি করে বিবেকানন্দ কন্যাকুমারীর মুখ্য কার্যালয়ে পাঠানো হবে বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়। উল্লেখ্য এদিনের অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সোসিয়েল সায়েন্সের অধ্যাপিকা জয়শ্রী দে।

প্রসঙ্গত জি- টুয়েন্টির একটি গ্রুপ হচ্ছে সি-টুয়েন্টি, যা বিশ্ব জুড়ে সুশীল সমাজের সংগঠনের জন্য এক প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker