Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বিমানবন্দরের জন্য ডলু বাগানের জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি
ওয়েটুবরাক, ১৮ এপ্রিল : কাছাড় জেলায় একটি আধুনিক, অসামরিক বিমানবন্দর স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে জানিয়েও সরকারের প্রস্তাবিত বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য ডলু চা বাগানে জমি নির্ধারণ প্রক্রিয়ার তীব্র বিরোধিতা করে ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি। তাঁদের কথায়, উন্নয়নের নামে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান কেড়ে নেওয়া ও বাগান মালিকের সহায়তা করার পেছনে দুরভিসন্ধি রয়েছে। এ অত্যন্ত হটকারী সিদ্ধান্ত৷
ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনির পক্ষে অরিন্দম দেব ও বিশ্বজিৎ দাস বলেন, দুর্ভাগ্যজনক ভাবে অসম সরকার এই পদক্ষেপকে উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপ হিসাবে দেখাতে চাইছে। কিন্তু এই পদক্ষেপকে তখনই উন্নয়ন বলা যায়, যখন সার্বিকভাবে আর্থিক সামাজিক ক্ষেত্রে জনগণ উপকৃত হয়, নতুন কর্মসংস্থান এবং সরকারের নতুন আয়ের উৎস তৈরি হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে অসম সরকারের ভূমিকা জনস্বার্থ বিরোধী।
তাঁরা বলেন, বরাক উপত্যকায় বৃহৎ শিল্পোদ্যোগ বলতে চা-বাগানকেই বোঝায়৷ সুগার মিল ও পেপার মিল সরকারি ভুল নীতি ও অনীহায় ইতিমধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে। পেপার মিল যখন “ব্রেক ইভেন পয়েন্ট” অতিক্রম করে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছিল, তখনই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ সরকার সেই জমি কিনে নেয়, যাতে স্টাফ-কোয়ার্টার খালি করে পরবর্তীতে ব্যক্তি-মালিকের কাছে জমি হস্তান্তর করা যায়।
এবার বিমানবন্দর তৈরি করতে গিয়েও সরকার চা-বাগানের অধীনে পতিত জমি বা সিলিং সারপ্লাস জমি বিনামূল্যে অধিগ্রহণ না করে, ডলু চা-বাগানের চা ও চায়ের চারাগাছের এবং শ্রমিকদের বসতবাটির ব্যাপক জমি প্রকল্পের জন্য নির্ধারণ করেছে। এভাবে বাগান মালিককে চা-গাছের ক্ষতিপূরণ দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করে নিপীড়িত বঞ্চিত চা-শ্রমিকদের স্বার্থ না দেখে সরকার বাগান মালিকের স্বার্থ দেখছে। এই পদক্ষেপের ফলে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ হারানো ও বসতভিটা হারানোর আশঙ্কায় প্রহর গুনছেন।
অরিন্দম দেব ও বিশ্বজিৎ দাস আরও বলেন, অসংখ্য শ্রমিক ও বাসিন্দাদের জীবন বিপন্ন করে কোনও পদক্ষেপ উন্নয়ন হিসাবে বিবেচিত হতে পারে না। যে কোনও জমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্পে সামাজিক অডিট করা হয়, এলাকার বাসিন্দাদের মতামত নেওয়া হয়, এক্ষেত্রে তার কিছুই করা হয়নি। শ্রমিক প্রতিনিধি হিসাবে যাদের সাথে চুক্তি করা হয়েছে, শ্রমিকরা প্রতিনিধি হিসাবে তাদের অস্বীকার করছে।উপরন্তু বিগত কয়েক বছর বাগান মালিকের সংস্থা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উৎপাদন কমে যাওয়ার যুক্তি দেখাচ্ছেন, অথচ এক্ষেত্রে যে ‘পরিবেশ অডিট’ করার কথা তা করা হয়নি।
এই প্রেক্ষিতে ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি দাবি জানায়, “প্রস্তাবিত এই বিমানবন্দর পতিত জমিতে স্থানান্তরিত করা হোক এবং শ্রমিকের কর্মসংস্থান ও বাস্তুভিটা কেড়ে নিয়ে বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হোক৷”