Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বিবেকানন্দ কেন্দ্র কন্যাকুমারী করিমগঞ্জ নগর উদ্যোগে “বিশ্ব ভাতৃত্ববোধ দিবস” উদযাপন
ওয়েটুবরাক, ১৬ সেপ্টেম্বর : বিবেকানন্দ কেন্দ্র কন্যাকুমারী, করিমগঞ্জ নগর স্থানের ব্যবস্থাপনায় গত বুধবার বিশ্ব ভাতৃত্ববোধ দিবস পালিত হয়৷ স্থানীয় বঙ্কদত্ত রোডস্থিত সরস্বতী বিদ্যানিকেতনের প্রেক্ষাগৃহ প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন নগরপ্রমুখ ড: তনুশ্রী ঘোষ৷ তিনি বলেন, বিবেকানন্দ কেন্দ্র কন্যাকুমারী দ্বারা পালিত ৫টি প্রধান উৎসবের মধ্যে বিশ্ব ভাতৃত্ববোধ দিবস অন্যতম।
ড. ঘোষের কথায়, ১৮৯৩ সনে ১১ সেপ্টেম্বর চিকাগো ধর্ম মহাসভায় স্বামী বিবেকানন্দ প্রদত্ত ভাষণে আমেরিকা বাসীদেরকে বোন ও ভাই বলে সম্বোধন বিশ্ব ভ্রাতৃত্ববোধের বার্তা বহন করে । উক্ত ভাষণে স্বামীজি বিশ্ব দরবারে সনাতন ধর্মের বিশ্বজনীন সহিষ্ণুতা ও সহনশীলতার কথা দৃঢ়ভাবে প্রকট করেন।
ওই দিনের অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন করিমগঞ্জ কলেজের পদার্থবিদ্যা বিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক নির্মল সরকার৷ তিনি বলেন, ভারতে যুগের পর যুগ ধরে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন ধরনের মানুষ এসেছেন। সবাইকে গ্রহণ করেছে ভারতবর্ষ। এ নিয়ে স্বামী বিবেকানন্দ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইতিবাচক কথা বলে গিয়েছেন। সমস্ত ধরনের বিশ্বাস যা বিশ্বে রয়েছে, সবটাকে সম্মান জানাতে হয় আমারটাই শুধু ঠিক, অন্যেরটা ঠিক নয়, এই মতবাদ সর্বদা বর্জন করতে হবে। রবীন্দ্রনাথও একথা বলেছিলেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে এক জায়গায় মিলিত হওয়া নিয়ে বিবেকানন্দ যা বলেছিলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও তাই বলেছেন। তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও স্বামী বিবেকানন্দের কথা কেউ শুনছেন না। সে জন্যই বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অস্থির পরিস্থিতি৷
নির্মলবাবু তাঁর বক্তব্যে স্বামী বিবেকানন্দের কুয়োর ব্যাঙ গল্পটি শশোনান। বলেন, মানুষের যে অবস্থা সমাজে, তার মধ্যে কোনও ভেদাভেদ না রেখে, মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখা, মানুষের মধ্যে দেবত্বের প্রকাশ হিসেবে দেখা, কোনও রকমের যাতে বিভেদের প্রাচীর গড়ে না ওঠে, যাতে আমরা নিজেদের ক্ষুদ্র প্রাচীরের মধ্যে না রাখি, মানুষের কল্যাণে যদি নিয়োজিত হই, তাহলে হয়তো বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব দিবস নতুন করে জন্ম নেবে। সার্থক হবেন স্বামী বিবেকানন্দ, সার্থক হবে সনাতন ধর্ম ।
কেন্দ্র পরিচয় প্রদান করেন ব্যবস্থাপ্রমুখ গৌতম দেব৷ তিনি ভারতমাতাকে জগদ্গুরু করে তোলার লক্ষ্যে সংগঠিত এই চিন্তা আন্দোলনে সবাইকে এগিয়ে আসার অনুরোধ রাখেন।
রবীন্দ্রসদন মহিলা মহাবিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রবক্তা গীতা সাহা বলেন, স্বামীজির চিকাগো বক্তব্য আমেরিকাবাসীদের মনে ভীষণ ভাবে দাগ কেটেছিল৷ কারণ এই বক্তব্যে হৃদয়ের ছোঁয়া ছিল। তিনি গুরু রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের কথা টেনে এনে বলেন, ঠাকুর যতমত ততপথ এ বিশ্বাসী ছিলেন এবং সকল ধর্মের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা ছিল। নগর স্থানের সঞ্চালক নিখিল রঞ্জন দাসও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন৷
জয়ন্তী নাথ উক্ত দিবস সম্পর্কিত একটি স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। সঙ্গীত পরিবেশন করেন নিবেদিতা চক্রবর্তী ও শিবানী দত্ত। সহনগর প্রমুখ প্রতিমা ভট্টাচার্য উদ্বোধনী সঙ্গীত এবং শেষে একখানা মীরা ভজন সমাপনী সংগীত পরিবেশন করেন। কার্যপদ্ধতি প্রমুখ সুচন্দনা দেব সরকার পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।