Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বিনা ফি-তে আসতে রাজি চেন্নাইর হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, তবু ফাইল আটকে দিসপুরে
১৬ জুনঃ ডা. রবি কান্নানের কথা ফেলতে পারেননি তামিলনাড়ুর এমজিআর স্টেট ইউনিভার্সিটির হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাকেশ পি গোপাল। শিলচর মেডিক্যাল কলেজে মাসে তিনদিন আসতে রাজি হলেন। তাও বিনা ফি-তে। শুধু আসা-যাওয়া, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করলেই হল। এ শুধু কথার কথা নয়। গত ১৪ মার্চ শিলচরে এসে ডা. গোপাল রীতিমত চুক্তি স্বাক্ষর করে গিয়েছেন। কিন্তু তিনমাস পেরিয়ে গেলেও সেই চুক্তিতে রাজ্য সরকারের অনুমোদন মেলেনি। অথচ হৃদরোগে মৃত্যুর ঘটনা দক্ষিণ আসামে ক্রমে বাড়ছে।
কোথায় আটকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজের সেই ফাইল? আসামের মেডিক্যাল এডুকেশন ডিরেক্টর ডা. অনুপ বর্মণ জানিয়েছেন, চুক্তিতে অনুমোদন চেয়ে শিলচর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের চিঠি তিনি পেয়েছেন। এর পরই প্রয়োজনীয় নোট দিয়ে ফাইল পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্য কমিশনার সমীরকুমার সিনহার অফিসে।
তিনমাসেও সেই ফাইল নড়েনি কেন? বারবার ফোন করেও সমীরবাবুর সাড়া মেলেনি। ডা. বর্মণের যুক্তি, করোনা তাণ্ডবের জন্য কমিশনার অত্যন্ত ব্যস্ত। অফিসে বসারই সুযোগ মেলে না। একই কথা শোনালেন শিলচর মেডিক্যাল কলেজ পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য। তিনি বললেন, আমরা এই চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজে তাতে মৌখিক সায় জানিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই রাকেশ পি গোপালের সঙ্গে চুক্তি কার্যকরে উদ্যোগী হবে সরকার।
পরিমলবাবু এমন আগ্রহ দেখালেও কলেজ পরিচালন সমিতির সহসভাপতি তথা শিলচরের সাংসদ ডা. রাজদীপ রায় এ ব্যাপারে আশ্চর্যরকমের নিষ্পৃহ। তিনি সোজাসুজি বললেন, ‘আমার ওই সব ব্যাপারে জানা নেই। এই ধরনের চুক্তি কার্যকর হতে পারে না।’
ডা. গোপালের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরে বড় ভূমিকা নিয়েছে ‘থাউজেন্ডস সায়ন্তন’ নামে এক সংস্থা। গত বিজয়া দশমীর দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন শিলচরের ২৫ বছরের সম্ভাবনাময় তরুণ সায়ন্তন চক্রবর্তী। তাঁকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা দ্রুত শিলং নেইগ্রিমসে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন। কিন্তু পথে প্রাণ হারান তিনি। হৃদরোগ চিকিৎসার ন্যূনতম ব্যবস্থা নেই কেন শিলচর মেডিক্যালে? প্রতিবাদে সরব হয়েছিল গোটা বরাক উপত্যকা। উত্তরের সন্ধানে সায়ন্তনের বন্ধু-বান্ধবরা গড়ে তুলেছিলেন ‘থাউজেন্ডস সায়ন্তন’। তাঁরা এ ব্যাপারে ডা. রবি কান্নানের পরামর্শ চান৷ তিনিই ডা. গোপালের সঙ্গে কথা বলেন।
‘থাউজেন্ডস সায়ন্তন’ আশাবাদী, এমন চুক্তি খারিজ হতে পারে না। ডা. গোপাল শিলচরে আসবেন, শুধু হৃদরোগের চিকিৎসাই নয়, তিনি হৃদরোগের প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারও করবেন। তাতেই কমবে এই অঞ্চলে হৃদরোগে মৃত্যুর হার।