NE UpdatesHappeningsBreaking News

বিনা নোটিশে গুয়াহাটির শিলসাঁকোতে উচ্ছেদ অভিযান

ওয়েটুবরাক, ২ মার্চ: গুয়াহাটির শিলসাঁকো বিলের দু’পাশে অবৈধভাবে তৈরি ৪৫৩টি বাড়ি ভেঙে ফেলছে প্রশাসন। বাসিন্দাদের দাবি, বিনা নোটিশে বাড়ি ভাঙা হয়েছে। চারিদিকে কান্না আর হাহাকার। এক ব্যক্তি আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন। গুয়াহাটি উন্নয়ন নিগমের অধ্যক্ষ নারায়ণ ডেকার দাবি, অবৈধভাবে সরকারি জমি ও জলাশয়ের অংশ দখল করে তৈরি বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে সরকার নোটিশ দিতে বাধ্য নয়।
সরকার ২০০৮ সালেই শিলসাঁকোকে সংরক্ষিত জলাশয় ঘোষণা করে ১৮০০ বিঘা জমিতে নির্মাণ নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, তারপরেও পুরসভা তাঁদের বাড়ি তৈরির এনওসি দিয়েছে, নিয়ম করে কর, বিদ্যুতের বিল জমা নিয়েছে। সম্প্রতি হোল্ডিং নম্বরের সঙ্গে বিদ্যুৎ মিটারের সংযোগও করেছে।
শিলসাঁকো জবরদখলের তথ্য তুলে ধরে পুরসভা জানিয়েছে, ১৯১২-১৩ সালের হিসেবে শিলসাঁকো বিলের আয়তন ছিল ১৭৫৮.৪৭ হেক্টর। ১৯৬৭-৬৮ সালে তা কমে ৪০৭.০৭ হেক্টর হয়। ২০২০ সালের জলাভূমির আয়তন কমে দাঁড়ায় মাত্র ৩২.৩১ হেক্টরে। নদী বাহিত বর্জ্য, মেঘালয় হয়ে আসা নালা ও আশপাশের এলাকার জল ও বর্জ্য শিলসাঁকোতেই পড়ে।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালে বিনা নোটিশে উচ্ছেদ চালিয়েছে পুরসভা।  আমসু, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি, রাইজর দল ও তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বিনা নোটিশে উচ্ছেদ চালিয়েছে পুরসভা। উন্নয়নের নামে এমন অমানবিক ব্যবহার, পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করা মানা যায় না। ।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানান, শিলসাঁকো শীঘ্রই অসমের বৃহত্তম সরোবরে পরিণত হবে। উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। যাঁদের অন্যত্র জমি নেই তাঁদের বিকল্প জমি দেবে সরকার। পুনর্সংস্থাপনের জন্য অনুদানও দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, টাটা গ্রুপের জিঞ্জার হোটেল, অমিয় কুমার দাস ইনস্টিটিউটের মতো প্রতিষ্ঠানগুলি কী ভাবে অনুমোদন পেল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে সেখানেও উচ্ছেদ চলবে।
এর মধ্যেই শিলসাঁকোর ১৩টি পরিবার উচ্ছেদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন জানায়। হাইকোর্ট ৩ মার্চ পর্যন্ত ওই পরিবারগুলির বাড়ি না ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে।
রাজ্যের আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী অশোক সিংঘল, কামরূপ মহানগরের জেলাশাসক পল্লবগোপাল ঝা হেলিকপ্টারে শিলসাঁকো বিল ও গুয়াহাটির অন্যান্য নদী ও জলাশয়গুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। অশোক বলেন, গুয়াহাটিকে বন্যামুক্ত রাখতে শিলসাঁকো ও অন্যান্য জলাশয় ও তার আশপাশের অঞ্চল দখলমুক্ত করতেই হবে। গুয়াহাটিকে পরিচ্ছন্ন ও বন্যামুক্ত রাখার দায়িত্ব নগরবাসীকেই নিতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker