NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News
বিজেপি বাঙালিবিদ্বেষী, তাদের ভোট দেবেন না, ত্রিপুরার ভোটারদের উদ্দেশে বিডিএফের আর্জি
ওয়েটুবরাক, ১০ ফেব্রুয়ারি : আসামে বিজেপি শাসনে বাঙালিরা চরম সঙ্কটে৷ নাগরিকত্ব নিয়ে অনিশ্চয়তা, সরকারি সুযোগ-সুবিধায় বঞ্চনা নিত্যদিনের চিত্র৷ কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও বঙ্গভাষীরা একেবারে অবহেলিত৷ এই অবস্থায় ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে বিজেপি সম্পর্কে সতর্ক করে দিল বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (বিডিএফ)৷ দলের মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, আসামের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাঙালি জনগোষ্ঠী বিশেষ ভূমিকা পালন করে চলেছে৷ বিশেষ করে, শিক্ষাদীক্ষা, কর্মসংস্কৃতিতে বাঙালিরাই একসমময় ছিল পথপ্রদর্শক৷ এমনকী, শ্রমের বিনিময়ে কৃষিবিকাশ বা পরিকাঠামোগত উন্নয়নেও বাঙালিরাই প্রধান ভরসা৷
দত্তরায় বলেন, আসামের ৩ কোটি ৩০ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে ১ কোটি বাঙালি৷ অর্থাৎ এক-তৃতীয়াংশ৷ বরাক উপত্যকায় রয়েছেন ৪৫ লক্ষ জনতা৷ তাদের মধ্যে বাঙালিরা যেমন রয়েছেন, তেমনি আছেন বিভিন্ন উপজাতি জনগোষ্ঠীর মানুষ৷ তাদের মধ্যে কোনও জাতিবিদ্বেষ বা ভাষাসংঘাত নেই৷ বিজেপি এই উপত্যকাতেও উপজাতি দরদের কথা বলে বাঙালিদের কোণঠাসা করতে তৎপর হয়ে উঠেছে৷
প্রদীপবাবুর কথায়, বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দফায় দফায় বাঙালিরা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন৷ এনআরসি তৈরির নামে বাঙালিদের মহাদুর্ভোগে ফেলা হয়েছিল৷ তাদের অনুমান ছিল, এরা আর ১৯৭১-র আগের নথি কোথায় পাবে! কিন্তু প্রায় সকলেই ওই কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেই এরা এখন এনআরসি আর প্রকাশ করছে না৷ এমনকী, যে ১৯ লক্ষ নাগরিককে এনআরসির বাইরে রাখা হয়েছে, তাদের অধিকাংশ ফরেনার্স ট্রাইবুনালে গিয়ে উপযুক্ত নথি দেখিয়ে নাম তুলতে সক্ষম হবেন, এটা বুঝতে পেরে তাদের বায়োমেট্রিক আটকে রেখেছে৷ ফলে এরা আধার কার্ড করতে পারছেন না৷ আধার না থাকায় ১৯ লক্ষ মানুষকে নিত্যনতুন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিডিএফ নেতা৷ তিনি বলেন, দেশের কোথাও ডি ভোটার বলে কোনও বিষয়ই নেই৷ আসামে বাঙালিদের জন্য রয়েছে ডি বা ডাউটফুল ভোটার৷ সরকার যাকেতাকে যখনতখন বাংলাদেশি সন্দেহে ডিটেনশন সেন্টারের নামে জেলে পুরে দেয়৷
দত্তরায় নরেন্দ্র মোদির শিলচরের নির্বাচনী বক্তৃতা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, তিনি তখন বলেছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে ডিটেনশন সেন্টার ভেঙে দেবেন৷ কিন্তু বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর উল্টোটাই হয়েছে৷ তারা গোয়ালপাড়ায় তৈরি করেছেন এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম ডিটেনশন সেন্টার৷
চাকরির একটি পরিসংখ্যান দিয়ে প্রদীপ দত্তরায় বলেন, আসামে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার আমলে ২৭ হাজার চাকরি হয়েছে৷ কিন্তু এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার বাঙালির ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ১৭০টি চাকরি৷ এ সব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছে কৈফিয়ৎ চাইতে দত্তরায় ত্রিপুরাবাসী, বিশেষ করে ত্রিপুরার সাংবাদিকদের উদ্দেশে অনুরোধ জানান৷ তিনি নিজেদের অভিজ্ঞতার নিরিখে ত্রিপুরার ভোটারদের কাছে অনুরোধ জানান, আসন্ন নির্বাচনে যে দল বা যে প্রার্থীকেই ভোট দিন না কেন, বাঙালি বিদ্বেষী বিজেপিকে ভোট দেবেন না৷