Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বহু হার্ডল পেরিয়ে লায়ন্স চক্ষু হাসপাতাল পঁচিশ বছরে
ওয়েটুবরাক, ২৮ সেপ্টেম্বর :লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৯৭ সালের ২৭ জুলাই। এ বার এর রৌপ্য জয়ন্তী। ১৩ অক্টোবর বিশ্ব দৃষ্টি দিবস থেকেই বর্ষব্যাপী কর্মসূচির সূচনা হবে। তবে প্রথম বড় অনুষ্ঠান ১৬ অক্টোবর রবিবার। রৌপ্যজয়ন্তীর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিলচরের লায়ন-লায়নেস-লিওরা। সে দিন সকাল আটটায় শোভাযাত্রা বেরিয়ে গোটা শহর পরিক্রমা করবে। মূল লক্ষ্য, চক্ষু চিকিৎসায় লায়ন্স চক্ষু হাসপাতাল যে এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ, সেই বার্তা সকলের কাজে পৌঁছে দেওয়া। মাত্র একশো টাকায় চোখের পরীক্ষা ও ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা যায় এই হাসপাতালে। এত কম খরচে অন্য কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চক্ষু চিকিৎসা হয় না৷ এ ছাড়া, বিনা মাশুলে প্রতি সপ্তাহে নানা জায়গায় শিবির করা হচ্ছে৷ ওইসব শিবিরে চোখ পরীক্ষা করালে নাম লেখানো থেকে ছানি কাটানো পর্যন্ত পুরোটাই বিনা মূল্যে। এমনকী বাড়ি থেকে হাসপাতালে নিয়ে এবং পরে বাড়িতে পৌঁছানো এই দায়িত্বও তাঁরাই পালন করেন৷
বুধবার হাসপাতালেই সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে লায়ন্স ক্লাব শিলচর সেন্ট্রালের সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্য, সম্পাদক কানাইলাল কংসবণিক, হাসপাতালের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডা. বিমলজ্যোতি দেব সিকদার এবং প্রাক্তন সভাপতি রাজু চৌধুরী বলেন, রৌপ্যজয়ন্তীতে তাঁদের ইচ্ছে রয়েছে একটি মেগা ক্যাম্প করার। এ ছাড়া, রামনগর শঙ্করবস্তিতে তাঁরা যে জমি কিনেছেন, এই বছরেই সেখানে নির্মাণকাজ শুরু করবেন। চাইছেন কাছাড় জেলায় কয়েকটি ভিশন সেন্টার খুলতে। গ্রামের মানুষ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণের আগের কাজকর্ম সেখানেই সেরে নিতে পারবেন। ক্যাম্পগুলিতে থাকবে টেলি-অপথালমলজিও।
পঁচিশ বছরের সংগ্রামের কথায় ডা. সিকদার বলেন, হাসপাতাল তৈরির বহু আগে থেকেই লায়ন্স ক্লাব গ্রামে-শহরে ক্যাম্প করে। শুরুর দিকে বাইরে থেকে ডাক্তাররা আসতেন। পরে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু লায়ন্স ক্লাবের কাছে যে ভাবে ক্যাম্প করার অনুরোধ আসত, ক্লাব ডাক্তারের অভাবে সব কটি করতে পারত না। মেডিক্যাল কলেজের পক্ষে প্রায় প্রতিদিন ডাক্তার দেওয়া অসম্ভব ছিল। সেখান থেকেই নিজস্ব হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা তীব্র হয়ে ওঠে। তিনি জানান, সরকারের কাছে জমির জন্য লেখা হলে নর্মাল স্কুলের বিপরীত দিকের বর্তমান জমিটি দেওয়া হয়। বহু জায়গায় হাত পেতে দালানবাড়ি নির্মাণ করে হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয়।
প্রথম মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডা. সুভাষরঞ্জন দাসের কথা এ দিন উপস্থিত চার লায়নই শ্রদ্ধার সঙ্গে উল্লেখ করেন। শুরুর দিকে মূলত ক্যাটারেক্ট বা ছানি পড়ার অপারেশনই হতো।তাঁদের দাবি, এখন লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসাই হয়। আধুনিক চিকিৎসা বা চিকিৎসা সরঞ্জাম আনায় বরাক উপত্যকায় লায়ন্স হাসপাতালই সবার আগে। আইওএল ল্যান্স ইমপ্লান্টেশন, পরে সেলাই ছাড়া অপারেশন বা এসআইসিএস, ফেকো বা পিন-হোল সার্জারি সবই প্রথমে তাঁরাই এনেছেন বলে জানান। বলেন, এমনকী আধুমিকতর সেঞ্চুরিান ভিশন সিস্টেমও তারাই বরাকে প্রথম এনেছেন।
অরিন্দম ভট্টাচার্য বলেন, প্রতিনিয়ত ইনডোর-আউটডোরে রোগী বাড়ছে বলে তারা রামনগরে পাঁচ বিঘা জমি কেনেন। সেখানে চক্ষু হাসপাতালের সঙ্গে হবে স্কুল অব অপটিমেট্রি, ইনস্টিটিউট অব অপথালমোলজি এবং স্কুল অব অপথালমিক টেকনিসিয়ারি। এখনকার পঞ্চাশ শয্যার হাসপাতালটিই সেখানে দুইশো শয্যাবিশিষ্ট হবে।