Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বরাক বঞ্চনার প্রতিবাদে দুই ঘণ্টা ধরনা দিল বিডিএফ
২০ জানুয়ারি: বরাক উপত্যকার বেকার যুবক-যুবতীদের বঞ্চনা ও কাছাড় কাগজ কলের প্রতি সরকারের ইচ্ছাকৃত উদাসীনতার প্রতিবাদে বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বুধবার সকাল ১১টা থেকে শিলচরে ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে দুই ঘণ্টার ধরনায় বসে। এই কর্মসূচিতে অন্যান্য সংগঠনের সদস্যরাও যোগদান করেন৷ ছিলেন কাছাড় কাগজকলের বিভিন্ন ইউনিয়নের কর্তাব্যক্তিরাও।
এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কাগজকলের বিএমএস শাখার সম্পাদক উৎপল দত্তচৌধুরী বলেন, বর্তমান কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে বহুবার তদ্বির করার পরও সরকার কাগজ কল নিয়ে হাত গুটিয়ে বসে আছে। প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী সবাই মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন। কাগজকল বন্ধ হবার ব্যাপারটি তিনি বিশদভাবে তুলে ধরে বলেন যে ম্যানেজমেন্ট ও সরকারের ইচ্ছাকৃত অসহযোগিতায় একটি লাভজনক সংস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। কাছাড় কাগজকলের ইনটাক শাখার সম্পাদক মানবেন্দ্র দত্তচৌধুরী বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি যে কোনও কাজের নয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷ আজ অবধি ৮০ জন মিলকর্মী খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে প্রাণ দিয়েছেন।
বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-এর যুব সদস্য কল্পার্ণব গুপ্ত তাঁর বক্তব্যে আগাগোড়াই বরাকের চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি সরকারের ইচ্ছাকৃত বঞ্চনা নিয়ে সরব ছিলেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি যতগুলো পদে নিয়োগ হয়েছে তাতে বরাকের প্রার্থীদের আনুপাতিক সাফল্যের হার খতিয়ে দেখলেই সরকারের অবস্থান স্পষ্ট হয়ে যায়। এই সরকার আদ্যন্ত বরাকবিরোধী, বাঙালিবিরোধী। বরাকের সব নাগরিককে তিনি এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানান।
এছাড়া কাগজকলের ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিয়ন এবং অফিসার্স ইউনিয়নের কর্তাব্যক্তি দিলীপ শুক্লবৈদ্য এবং দিলীপ কান্তি নাথ শ্রমিক কর্মচারীদের বর্তমান দুরবস্থা বিশদে তুলে ধরেন৷
বিডিএফের মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় এ দিন বলেন, আসাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছরে দুই শতাধিক যুবক-যুবতী স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে বেরোচ্ছেন৷ কর্মসংস্থানের অভাবে এরা হতাশাগ্রস্থ জীবন কাটাচ্ছেন৷ কেউ কেউ অন্য রাজ্যে পাড়ি জমাতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি বলেন, সরকার ছাত্রদের কম্পিউটার দিচ্ছে, স্কুটি দিচ্ছে অথচ বেকারদের ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন। যতদিন সরকার বরাকের শিক্ষিত বেকারদের চাকরি দিতে না পারছে ততদিন সবাইকে বেকার ভাতা দিতে হবে বলে তিনি জোরালো দাবি জানান। কাগজকলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আক্ষেপ করে বলেন, সম্প্রতি ৮০০০ কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রীর সফরের জন্য একটি বিমান কিনতে গিয়ে সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় করা হয়েছে৷ যেখানে শুধু ১৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে দুটি কাগজকলকে আবার খোলা গেলে দুই লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকত। তিনি সরকারের এই জনবিরোধী মানসিকতাকে ধিক্কার জানান।
বরাক ফোরামের অন্যতম আহ্বায়ক তথা বিডিএফ সদস্য দেবরাজ দাসগুপ্ত তার বক্তব্যে এই অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, জনগনের স্বার্থে কাজ না করলে আবার জনগণই তাদের আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলতে পারেন। এদিনের সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-এর আহ্বায়ক পার্থ দাস, জহর তারণ , বর্ষীয়ান সমাজকর্মী রঞ্জনকান্তি ভট্টাচার্য প্রমুখ।