Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বরাকের কয়েকটি কলেজে স্নাতকোত্তর কোর্স পড়ানো হোক, লিখেছেন অধ্যাপক দিলীপকুমার দে
শিক্ষার একটি দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আসামের ৫টি কলেজে স্নাতকোত্তর পড়ানো হবে, বরাকের একটিতেও নয়। এ নিয়ে অনেকে একমাত্র আসাম সরকারকেই দায়ী করছেন।
বরাক উপত্যকার গুরুচরণ কলেজে কিছু বিষয়ে ( যেমন কমার্স) স্নাতকোত্তর কোর্স খোলার আর্জি আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পেশ করার পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিদর্শন হয়। রিপোর্ট আটকে দেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় কর্তাব্যক্তি। আর হলই না। সেটা কয়েক বছর আগের কথা। করিমগঞ্জ কলেজে পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পড়ানোর প্রস্তাব পরিদর্শনের পরে একই ভাবে আটকে দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সি-ডি-সি।
মনে হওয়া স্বাভাবিক যে, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কর্তার ধ্যান-ধারণা, উচ্চ সম্মান বোধ এতটাই তীব্র যে তারা অধীনস্থ কোনও কলেজে এমএ/এমএস সি/এমকম খুলতেই চান না। হয়ত তাঁদের ধারণা, তাঁরা ছাড়া কেউ এসব কোর্স পড়াতে পারেন না।তাই বরাকের অনেকে, যারা নানা কারণে আইরংমারা/ দরগাহকোনা ক্যাম্পাসে যেতে পারেন না, তারা প্রাইভেটে পড়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেন।
আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্থানীয়’ উপাচার্যদের মধ্যে ‘শিক্ষাবিদ’ ছিলেন। এদের কারও কারও আচরণ ছিল/আছে বিস্ময়কর। ওরা হয়ত জানেন/জানেন না, এই দেশে ও বিদেশের অনেক কলেজে মাস্টার্স ডিগ্রি কোর্স পড়ানো হয়। এতে ওই সব কলেজের শিক্ষাদানের মান আরও উন্নত হয়। হ্যাঁ, গবেষণার জন্য তো বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবেই।
তাছাড়া বিদেশে অনেক যোগ্য কলেজ শিক্ষকদের ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাশ করানো হয়, আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও অধীনস্থ কলেজে গিয়ে প্রয়োজনে ক্লাশ নেন। অনেক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককেও পড়ানো ও গবেষণার কাজে ডাকা হয়। আমার ছোট ভাই ৭৪ বৎসর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়িয়ে যাচ্ছে, গবেষণার মার্গদর্শকের কাজও করে যাচ্ছে। ওরা বিজ্ঞ, বিশেষজ্ঞদের সম্মান দিয়ে কাজ করায়। আমি ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক দেশে চাক্ষুষ দেখে ও জেনে এসব কথা বলছি।
মেডিক্যাল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আর নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিক্যল কলেজ হবে বলে একবার ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করার পরও হয়নি। কাছাড় ক্যানসার হাসপাতালের সাথে যুগ্মভাবে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগ গবেষণার জন্য যন্ত্রপাতির অনুদান এক স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ-উপাচার্য আনতে দেননি।
ডিফুতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ক্যাম্পাস থাকলেও সেটা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যাবে। তোড়জোড় সেদিকে এগুচ্ছে। ক্ষীণ দূরদৃষ্টি ও একপেশে ধারণা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তি সাজলে চলে না। আমার আবেদন, কিছু নির্বাচিত কলেজে কিছু বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স এবার থেকেই পড়ানোর ব্যবস্থা হোক। কলেজের শূন্য পদগুলি অচিরেই পূর্ণ করার জন্য আসাম সরকারের উপর চাপ দেওয়া হোক।
বরাকের কলেজ গুলোর পরিচালন সমিতি সক্রিয় না হলে সেটা হবে না। ওই সমিতিগুলোর মাননীয় সদস্যদের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই অনুরোধ যে, হয় আপনারা শূন্যপদ পূরণে উপযুক্ত চাপ সৃষ্টি করুন, নয় সমিতি থেকে পদত্যাগ করুন। ‘দিনগত পাপক্ষয়’ থেকে আমরা মুক্ত হই। ছাত্ররা উপকৃত হবে এমন ভূমিকা দেখতে চাই।