Barak UpdatesHappeningsBreaking News

বরাকবঙ্গের করিমগঞ্জ সভায় বাংলাকে দ্বিতীয় সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দাবি

১৭ জানুয়ারি : বাংলাকে দ্বিতীয় সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দাবি করে করিমগঞ্জে অনুষ্ঠিত হল বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের শহর আঞ্চলিক সমিতির দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা। গঠন করা হল পরবর্তী দুই বছরের জন্য নয়া কার্যনির্বাহী সমিতি। সভাপতি হয়েছেন সৌমিত্র পাল। সম্পাদক নীলজকান্তি দাস।

রাজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ বাঙালির মাতৃভাষা বাংলাকে দ্বিতীয় সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দাবি করা হয়েছে সভা থেকে। ‘ডি’- ভোটারের নামে হয়রানি বন্ধ করার দাবি জানানো হয়। নাগরিকত্ব ইস্যুতে ২০১৫ -র জোড়া সরকারি নোটিফিকেশন কার্যকর করারও দাবি জানায় এ দিনের সভা। ‘কা’ এক বছর অতিক্রম করেছে। এ পর্যন্ত কেউ সে আইনের ফায়দা পাননি। অবিলম্বে’ কা’ কার্যকর করতে বলা হয়েছে সভা থেকে। দাবি করা হয়েছে বরাক উপত্যকার ভাষাশহিদদের সরকারি স্বীকৃতি। ১৯ মে ভাষা শহিদ দিবসকে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করারও দাবি জানানো হয়।কর্পাস ফান্ডের আওতায় সরকারি সহায়তার ক্ষেত্রে বাংলাভাষী কোনও সংগঠনকে সুবিধা না দেওয়ার সরকারি কৌশলের নিন্দা জানান উপস্থিত সবাই।

বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের করিমগঞ্জ শহর সমিতির সভাপতি সুলেখা দত্তচৌধুরীর পৌরোহিত্যে শনিবার সন্ধ্যায় এখানকার বিপিনচন্দ্র পাল স্মৃতিভবনে অনুষ্ঠিত সভায় বাঙালিকে কোণঠাসা করে রাখার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। সে সম্পর্কে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন প্রবীণ সদস্য বিশ্বনাথ চৌধুরী। বলেন, বাঙালির শত্রুর শেষ নেই। সবদিকে শত্রু। এদের বেঁচে থাকা হয়ে উঠেছে অতি কষ্টকর। করিমগঞ্জ শহর সমিতির প্রাক্তন সভাপতি আশুতোষ ভট্টাচার্য ভাষাশহিদদের সরকারি স্বীকৃতি আদায়ে নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ায় গুরুত্ব আরোপ করেন।

করিমগঞ্জ জেলা সমিতির সভাপতি সুধাংশুশেখর দত্ত বলেন, বিপদসঙ্কুল বাঙালির সামনে অপেক্ষা করছে আরও ভয়ঙ্কর দিন। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সংগঠনকে আন্দোলনের মঞ্চ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বাংলাভাষা-সংস্কৃতি ও বাঙালি জাতিসত্ত্বার সুরক্ষায় কাজ করে যাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে পরামর্শ দেন। বিভিন্ন সংকট, সেসব থেকে উত্তরণের উপায় ইত্যদি প্রসঙ্গে বিশদ বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সব্যসাচী রায়। বাংলাভাষাকে দ্বিতীয় সরকারি ভাষার স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করে যাওয়ার জন্য গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের এক বছরের মধ্যে কেউ উপকৃত হওয়ার সুবিধা না পাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক।

অধ্যাপক নির্মলকুমার সরকার রাজ্যব্যাপী বাঙালিদের দুর্দশায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। প্রাক্তন জেলা সম্পাদক মাশুক আহমদ সংগঠনকে সক্রিয় রাখতে নয়া পদাধিকারীদের পরামর্শ দেন। অন্যান্যদের মধ্যে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখেন সুবীরবরণ রায়, অরূপ রায় প্রমুখ। এর আগে দুই বছরের আয়-ব্যয়ের হিসেব সহ নিজের প্রতিবেদন পেশ করেন সংগঠনের করিমগঞ্জ শহর সমিতির সম্পাদক রাজন সাহাসর্দার। আলোচনার মাধ্যমে তা গৃহীত হওয়ার পর গঠন করা হয় নয়া কার্যনির্বাহী সমিতি।

সভাপতি এবং সম্পাদক ছাড়াও উপসভাপতি পদে মনোনীত হন নন্দকিশোর বণিক ও দেবব্রত ভট্টাচার্য। সহ-সম্পাদক করা হয় নিরোজিৎ দাস ও অরূপ রায়কে। কোষাধ্যক্ষ হন রাজীব রায়পোদ্দার। সাহিত্য সম্পাদক করা হয়েছে অধ্যাপক অভিজিৎ চক্রবর্তীকে। সংস্কৃতি সম্পাদক পদে বহাল রাখা হয় ঝুমা দাসকে। সভার শেষ পর্বে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুলেখা দত্তচৌধুরী বলেন, সভাপতি পদে না থাকলেও তিনি সকলের সঙ্গে থেকে সংগঠনের হয়ে কাজ করে যাবেন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুখেন্দুশেখর দত্ত, নিশিকান্ত ভট্টাচার্য, বিশ্বনাথ মজুমদার প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker