Barak UpdatesHappeningsBreaking News

বন্যা থেকে বাঁচতে জেলাশাসককে ১৫ সংগঠনের ৯ পরামর্শ

ওয়েটুবরাক, ৯ আগস্ট : বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নির্দিষ্ট কিছু দাবিকে সামনে রেখে কাছাড়ের জেলাশাসকের কাছে স্মারকপত্র দিল ১৫টি সংগঠনের যৌথ ফোরাম ‘হিউম্যান অফ শিলচর’। এদের সম্মিলিত প্রথম কার্যসূচি হিসাবে জেলাশাসক রোহনকুমার ঝার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়৷ তাতে অদূর ভবিষ্যতে বন্যা প্রতিরোধে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়। বলা হয়, যদিও শিলচর বন্যার অন্যতম কারণ বলা হয়েছিল বেতুকান্দি বাঁধ, তবে আরও কিছু কারণ রয়েছে যা এই ধরনের ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ী।

তাই সংগঠনগুলির ৯টি প্রতিরক্ষামূলক পরামর্শ এবং দাবি হলো : ১. উচ্চতা বৃদ্ধি, বরাক উপত্যকার নদীর উভয় তীরে বাঁধ এবং আরও স্লুইস গেট নির্মাণ করা ২. বরাক নদী ও অন্যান্য ছোট নদীর উপনদীর বাঁধের উচ্চতা বৃদ্ধি করা ৩. বরাক নদী ও অন্যান্য ছোট নদীর উপনদীর বাঁধের উচ্চতা বৃদ্ধি করা, ড্রেনের উপর বিশেষ করে বোয়ালজুর খাল, সিঙ্গিরখাল, রাঙিরখাল ও লংগাইখাল দখলমুক্ত করা। ৪. সাম্প্রতিক বন্যার কারণ সম্পর্কে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করে দায় নির্ধারণ করা ৫. গুয়াহাটি থেকে ব্রহ্মপুত্র হয়ে শিলচর পর্যন্ত নদী যোগাযোগের প্রবর্তন, যাতে ভারী মোটর পরিবহন চালানোর সময় নীচের মাটি সরিয়ে বরাক নদীর আরও গভীরতা তৈরি করা যায় ৬. যে সব লোকের বাড়িঘর ও গৃহস্থালির মালামালের ক্ষতি হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ৭. একটি বিশদ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা স্কিম তৈরি করে স্থানীয় এনজিও এবং অন্যান্য সংস্থাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে স্থানীয় স্তরের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা ৮. শিলচর শহর এবং পার্শ্ববর্তী শহরগুলিকে সংক্রামক রোগ থেকে বাঁচাতে অবিলম্বে আবর্জনা নিষ্পত্তির সুবিধা চালু করা ৯. জোনিং  বিধান কঠোর ভাবে মেনে ভবন এবং কাঠামোর পুনর্নির্মাণ এবং অননুমোদিত কাঠামো ভেঙে ফেলা।

ফোরামের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই ভয়াবহ বন্যা শুধুমাত্র মানুষের গৃহনিবাস ধ্বংস করেনি, ভেঙেছে অনেকের স্বপ্ন। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের দরুণ উচ্চ থেকে নিম্নবিত্ত সব শ্রেণীর মানুষেরই ক্ষতি হয়েছে। মানুষের থাকতে হয়েছে পানীয় জল এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ছাড়া প্রায় ১০ দিন। তবে এরকম সংকটময় সময়ে বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা মানবপ্রীতিতে সম্প্রদায় নির্বিশেষে স্ব-ইচ্ছায় এগিয়ে এসে অসাধারণ সাহসিকতা দেখিয়েছেন। এই সামাজিক সংস্থা এবং মানবপ্রীতি সম্প্রদায়গুলো শিলচর শহরের দুর্গম থেকে দুর্গমতর এলাকায় বন্যার জলে ফেঁসে থাকা মানুষগুলোর কাছে সাহায্যের হাত এগিয়ে দেয়। আসামের বন্যার সময় তাদের মানবতার সেবা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। পুরো শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, এবং বন্যা-পরবর্তী প্রভাবগুলিও বেশ বিধ্বংসী হয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষ জলবাহিত রোগের সংস্পর্শে এসেছে এবং শ্রমিক শ্রেণী ও ব্যবসায়ী শ্রেণী এখনও অনেক অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এই বন্যা আমাদের অগ্রগতি ও উন্নয়নের দৃষ্টিকোণ থেকে ১০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে।

তাই ১৫ টি মানব সেবা সংস্থা এবং ব্যক্তি যেমন বিহান, আওয়াজ, স্মাইল, শিলচার মিলাব, ইয়াংমাইন্ড অর্গানাইজেশন, ধাগা, থাউজেন্ড সায়ন্তন, সুবীর এন্ড ফ্রেন্ডস, লাইফ লাইন ফাউন্ডেশন ,আনন্দ কৃতি , উদয়ের পথে, এনসিওয়াইএস, বরাক ভ্যালি ওয়েলফেয়ার ডেভেলপমেন্ট, জয় রাধে, শিলচর সেন্ট্রাল লিও ক্লাব, রবিনহুড আর্মি, ইকোঅ্যালার্মিস্ট এবং আরও অনেক ব্যক্তি “হিউম্যান অফ শিলচর’ নামে একটি ফোরাম তৈরি করে৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker