Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বন্যা ঠেকাতে শিলচরকে স্পঞ্জসিটি করা হবে, ঘোষণা নন্দিতার
ওয়েটুবরাক, ২৬ জানুয়ারি : বন্যা থেকে রেহাইর লক্ষ্যে কাছাড় জেলায় এ বার এক বিশেষ এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। চারটি স্পঞ্জ সিটি প্রজেক্টের মধ্যে শিলচরকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শিলচরে সাধারণতন্ত্র দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে এই কথা ঘোষণা করেন রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য নন্দিতা গারলোসা৷ রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এই প্রকল্পে বৃষ্টির জলকে ধরে রাখার বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাতে একদিকে যেমন বৃষ্টিতে বর্তমানে শহরে যে কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি হয়, তা থেকে রেহাই মিলবে। অন্যদিকে, জল সরবরাহ প্রকল্প এবং প্রকৃতি-পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়ক হবে। শিলচর শহরে এই প্রকল্পের জন্য চারটি জায়গাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে একটিকে বেছে নিয়ে ডিপিআর তৈরি করা হবে। সেখানে নগরোন্নয়ন মন্ত্রক ৩০ হেক্টর জায়গা জুড়ে একশো কোটি টাকা ব্যয়ে বৃহৎ জলাধার তৈরি করবে। সে জন্য অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক একটি পরামর্শদাতা সংস্থা প্রাথমিক কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছে বলে মন্ত্রী গারলোসা জানান।
প্রসঙ্গত, শিলচর ছাড়াও স্পঞ্জ সিটি প্রজেক্ট হবে গুয়াহাটি, ডিব্রুগড় এবং নগাঁওয়ে৷
গত নভেম্বরে মন্ত্রিসভার বৈঠক শিলচরে হওয়ায় নন্দিতা গারলোসা কাছাড় জেলাকে “ভাগ্যবান বা ভাগ্যবতী” বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, শিলচরে মন্ত্রিসভার বৈঠক হওয়ায় স্বাধীনতার পর এই প্রথম একসঙ্গে সমস্ত মন্ত্রী জেলায় রাত কাটিয়েছেন, নিজেদের বিভাগের কাজকর্ম পর্যালোচনা করেছেন। তাঁর বিশ্বাস, এই সবের সুফল নিশ্চিতভাবেই জেলাবাসী ভোগ করছেন।
গারলোসা জানান, আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের কাজকর্মে, বিশেষ করে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় গত বছর কাছাড় জেলা দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। গত বছরে এই প্রকল্পে ৩৭১৬টি বাড়ির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এ ছাড়াও, ৫৫২২টি বাড়ি নির্মাণের প্রথম কিস্তির অর্থ প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পেয়েছে ৪৯৮০টি বাড়ি। আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকই রাঙিরখালের উভয়দিকে রাস্তা চওড়া করে শক্ত গার্ডওয়াল তৈরি করছে। ৪২ কোটি ৬ লক্ষ টাকার ওই কাজ এখন চলছে। সঞ্জয় মার্কেটের কাছে বর্তমান কালভার্টটিকে সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। সে জন্য ৪৮ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ইন্ডিয়া ক্লাব পয়েন্টে একটি বক্স সেল কালভার্ট নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৪৬ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। দুটি কাজেরই সাইট ক্লিয়ারেন্স চলছে এই সময়ে।
তাঁর কথায়, পূর্ত দালানবাড়ি বা বিল্ডিং ডিভিশন নয় কোটি টাকা ব্যয়ে বড়খলায় মডেল ডিগ্রি কলেজ নির্মাণ করেছে। শিলচর বিএসসি নার্সিং কলেজে ১ কোটি ৮১ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা ব্যয়ে মেরামতি, শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬০ শয্যা ও ৪০ শয্যার দুটি আইসিইউ নির্মাণ, মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হসপিটালে অ্যাটেন্ডেন্টদের জন্য ওয়েটিং হল, রিটেইনিং ওয়াল এবং এক্সটারন্যাল ড্রেন নির্মাণ, মেডিক্যাল অক্সিজেন গ্যাস পাইপলাইন সিস্টেম নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। পিএমকেয়ার ফান্ডে নির্মিত হয়েছে এক হাজার এলএমপি ক্ষমতা বিশিষ্ট দুটি অক্সিজেন জেনারেশন প্ল্যান্ট।
শিলচর মেডিক্যাল কলেজের কাজকর্ম ও সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করে বিদ্যুৎ ও সমবায় মন্ত্রী গারলোসা বলেন, “প্রায় সময় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে আপনারাই তা লিখেন, শেয়ার করেন। ক্যাথল্যাবের সাহায্যে বরাকবাসী সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্যের মানুষের উপকৃত হওয়ার কথা অনেক সময় আপনাদের পোস্ট থেকেই আমরা বিশদে জানতে পারি।” তাঁর আশা, আগামী ছয় মাসে শিলচর মেডিক্যাল কলেজে ক্যানসার হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ হবে।