Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বউলাবস্তিতে সে এক অন্য রবিবার, লিখেছেন অসীম চৌধুরী
//অসীম চৌধুরী//
গ্রাম-শহরের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের পারস্পরিক ভালোবাসার মেলবন্ধনে ভরে ওঠা একটি দিন উপহার দিলো রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সোসাইটি। শিলচরের সুপরিচিত শিক্ষিকা ইন্দ্রানী পালের অধীনে একদল কিশোর কিশোরী তাদের পকেটমানি জমিয়ে তা থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করলো সোসাইটির বউলা বস্তি শাখায়। এদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বরাকের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাওয়া রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সোসাইটির অবৈতনিক শিক্ষা কেন্দ্র শ্রীমা সারদা কোচিং সেন্টারের বউলাবস্তি শাখায় গত ৩ ডিসেম্বর রবিবার আক্ষরিক অর্থেই গড়ে উঠলো এক মিলন মেলা।
মেলবন্ধনের এই সেতুবন্ধে প্রথম পাথরটি পুঁতে দিলো শহরের কলেজ পড়ুয়া একদল ছেলেমেয়ে। তাদের ব্যক্তিগত শিক্ষিকার প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এক দঙ্গল কিশোর কিশোরী গত কয়েক মাস ধরে প্রতি সপ্তাহে দশটি টাকা করে সঞ্চয় করে আসছিল তাদের পকেটমানি থেকে। সেই সঞ্চিত অর্থ তারা তুলে দিয়েছে বউলাবস্তি শিক্ষাকেন্দ্রের উন্নয়নে।
অন্যদিকে, শিলচর শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. অজিত ভট্টাচার্য ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁদের মেয়ের জন্মদিনটি কাটাতে চাইলেন সোসাইটির কচিকাঁচাদের সঙ্গে। কিছু ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব আছেন যারা নিয়মের ছক ভেঙে বেরিয়ে আসতে চান । গড্ডালিকা প্রবাহ থেকে বেরিয়ে এই সমাজের জন্য কিছু একটা করতে চান এবং নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে নিয়ত প্রচেষ্টা করেন । ডা. অজিত ভট্টাচার্য তেমনই এক ব্যতিক্রমী নাম । তাঁরই পৃষ্ঠপোষকতায় সবাই মিলে একসঙ্গে পেটপুরে খাওয়া দাওয়ার পাশাপাশি গোটা দিনটা সবাই মেতেছিল বউলাবস্তি শাখার কচিকাঁচাদের নিয়ে নানারকমের খেলাধূলায়। হয়েছে প্রচুর ডেস্ক বেঞ্চ বাজানো গান, ধামাইল, ছড়া, কবিতা ইত্যাদি। সঙ্গে ছিল এক বস্তা পুরস্কার। যাতে ভরে উঠেছিল কচিকাঁচাদের দুটো হাত, কোঁচড় এবং উজ্জ্বল আলোয় ভরে উঠেছিল ক্ষুদ্র পুরস্কারের এপারে ওপারে থাকা উভয়ের মুখ।
প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে কিছুটা সাহায্য করতে এবং একইসঙ্গে তাদের শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক বিকাশের চেষ্টায় উপত্যকার উনিশটি স্থানে পরিচলনা করা এই শিক্ষাকেন্দ্রগুলোতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই আনন্দ ও শান্তি কুড়িয়ে নিয়ে আসেন শহরের বহু বিশিষ্ট লোকজন । উপস্থিত ব্যক্তিত্বদের মধ্যে হিতেশ ভট্টাচার্য, বেনুলাল বর্মন, তপন আচার্য প্রমুখ সেন্টারের আর্থিক সহায়তায় স্বেচ্ছায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন । সবার এই সার্বিক সহযোগিতায় রবিবার ছিল একটি আনন্দের দিন।
এদিনের এই অনুষ্ঠানে আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে উপস্থিত ছিলেন নিয়মিত শিক্ষাকেন্দ্রগুলোতে এসে ছাত্রছাত্রীদের যোগাভ্যাস করানো পরিচিত প্রতিষ্ঠান ‘নিরাময়’। হৈ হৈ করে চললো যোগাভ্যাস। সবমিলিয়ে এক আশার আলো, শ্রেণীহীন ভালোবাসার জয়পতাকা উড়িয়ে বিবেকানন্দের নামকে সার্থক করার প্রয়াসে আরো একটি উজ্জ্বল দিনের সাক্ষী হয়ে রইলেন ডা. অজিত ভট্টাচার্য সহ পরিবারের সদস্যরা, নিরাময়ের তরফে শতাক্ষী ভট্টাচার্য, বেনুলাল বর্মন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নন্দদুলাল সাহা এবং রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ সোসাইটির পক্ষ থেকে সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্য, শরদিন্দু দে, শান্তশ্রী সোম, যাদব সাহা, প্রদীপ রায় সহ সংস্থার সদস্য সদস্যরা।