NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News
বইমেলার উদ্বোধন করে বাংলা ও অসমিয়া ভাষার পারস্পরিক সম্মানের কথা বললেন তিলোত্তমা-অনুরাধা
ওয়েটুবরাক, ১ ডিসেম্বরঃ শুক্রবার শুরু হল অসম প্রকাশন পর্ষদ ও সারা অসম প্রকাশক ও পুস্তকবিক্রেতা সংস্থা আয়োজিত দশদিনের শিলচর বইমেলা। রাজ্য সরকারের প্রকাশন পর্ষদ এর আগে যেমন বহু জায়গায় বইমেলা করেছে, তেমনি শিলচরেও বইমেলার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, কিন্তু শিলচরে প্রকাশন পর্ষদের বইমেলা এই প্রথম। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দুই প্রথিতযশা সাহিত্যিক তিলোত্তমা মজুমদার ও অনুরাধা শর্মা পূজারী। সঙ্গে ছিলেন পাবলিশার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদীপ চট্টোপাধ্যায়, সচিব সুধাংশুশেখর দে, কাছাড়ের জেলাশাসক রোহনকুমার ঝা, পুলিশ সুপার নোমল মাহাত্তা, প্রকাশন পর্ষদের সচিব প্রমোদ কলিতা ও সহসচিব বাহারুল ইসলাম চৌধুরী।
বেশ কিছুদিন ধরে দুই উপত্যকার একাংশ মানুষের মধ্যে ভাষাবিদ্বেষ কাজ করে চললেও এ দিন দুই ভাষার দুই তারকা সাহিত্যিকই ভাষা সমন্বয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কথাসাহিত্যিক তিলোত্তমা মজুমদার এবং সুপরিচিত অসমিয়া সাংবাদিক-সাহিত্যিক অনুরাধা শর্মা পূজারী বলেন, অন্যের ভাষাকে সম্মান করাই আসামের ঐতিহ্য, বিদ্বেষের পর বিদ্বেষের গড়ে কী লাভ !
তিলোত্তমার কথায়, বাংলা ভাষা গঠন ও অসমিয়া ভাষা গঠন একই ধারা অনুসরণ করে চলেছে। চিন্তাভাবনার ধরনেও দুই ভাষাগোষ্ঠীর খুব মিল। অনুরাধা বলেন, সাহিত্য-সঙ্গীত পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ, বরাক, গোয়ালপাড়া ও আসামের বাকি অংশকে এক করে রেখেছে। সে জন্যই দুই পৃথক সময়ে তিলোত্তমা ইশ্বরের বাসা এবং তিনি ইশ্বরের সন্ধান লিখলেও কোথায় যেন দুই বই মিলে যায়। একে আত্মার ছোঁয়া বলেই উল্লেখ করেছেন অনুরাধা। তিনি নিজেকে কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের ফ্যান হিসেবে তুলে ধরে জানান, একবার কালিকার সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। তিনি বাংলায় বলছিলেন, এ আমার ভাগ্য, আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। কিন্তু কালিকা তাঁর সঙ্গে স্পষ্ট অসমিয়ায় কথা বললেন। তিনি কালিকার অবিস্মরণীয় গান আমি তোমারি নাম গাই-র এক কলি গেয়েও শোনান।
কাছাড়ের জেলাশাসক রোহনকুমার ঝা বলেন, তিনি যে আইএএস বা জেলাশাসক, তা বইয়ের জন্যই। পুলিশ সুপার নোমল মাহাত্তার ব্যাখ্যা, বই হল সভ্যতার লিখিত রূপ। বই পড়ায় কল্পনাশক্তি বাড়ে। পাবলিশার্স গিল্ড কলকাতার সভাপতি ত্রিদীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ভাল লাগছে দ্বন্ধ মিটে গিয়েছে, মিলেমিশে এগোচ্ছে বাংলা-অসমিয়া। সুধাংশুবাবু শোনান করোনার সময় আশঙ্কায় ভুগছিলেন, আর বই পড়বে না কেউ, প্রকাশনও বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু ঘটেছে উল্টোটাই। সে সময় মানুষের বই পড়া বেড়ে গিয়েছিল।