NE UpdatesHappeningsBreaking News
ফের হিংসায় উত্তপ্ত মণিপুর, হত ২
ওয়েটুবরাক, ২ সেপ্টেম্বরঃ ফের বারুদের গন্ধে ভারি হয়ে উঠল মণিপুরের বাতাস। মেইতেই-কুকি সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন দুইজন। সঙ্কটজনক অবস্থায় তাঁর শিশুসন্তান। আহত হয়েছেন পুলিশ অফিসার, সাংবাদিক সহ আরও তিনজন। রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, ড্রোনের সাহায্যে বোমা ফেলেছে সন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিরা। রাজ্যে শান্তি ফেরানোর জন্য যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, একে ব্যর্থ করতেই এই হামলা বলে মন্তব্য করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতিতে।
রবিবার সকালে কাংপকপি জেলার কৌত্রুকে আচমকা গোলাগুলি শুরু হয়। চূড়াচাঁদপুরগামী সড়কের দুই দিক থেকে লাগাতার গুলিবর্ষণ চলে। তাতে আঙ্গম সুরবালা নামে এক মহিলা ও তাঁর আট বছরের শিশুসন্তান গুলিবিদ্ধ হন। পশ্চিম ইম্ফল জেলার ফায়েঙের বাসিন্দা সুরবালা তাঁর কন্যাকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। শিশুটি রিজিয়নাল ইনস্টিটিউট মেডিক্যাল সায়েন্সেসে (রিমস) আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিতসাধীন হলেও সুরবালা প্রাণ হারিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এন রবার্ট নামে নিরাপত্তা বাহিনীর এক অফিসারও জখম হয়েছেন। তিনিও রিমসে চিকিতসাধীন। বোমার স্প্লিন্টারে আহত হয়েছেন স্থানীয় টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক এলংবাম মুশুক। তিনি হামলার ঘটনা কভারেজের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন।
পুলিশ এই ঘটনার জন্য কুকি জঙ্গিদের দায়ী করছে। তারা বলেন, পাহাড়চূড়া থেকে একদল জঙ্গি আচমকা কৌত্রুক ও কাড়াংবন্দে একযোগে গুলি চালায়। এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ছুটে যায় নিরাপত্তা বাহিনী। উভয়পক্ষে বেশ কিছু সময় গোলাগুলির পরে জঙ্গিরা সরে পড়ে।
রাজ্যের পুলিশ প্রধান রাজীব সিংহ কৌত্রুক হামলার পর সমস্ত পুলিশ সুপারদের সতর্ক করে দিয়েছেন। বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন জওয়ানদের কড়া সতর্ক থাকতে বলে দিয়েছেন। যৌথ অভিযানের সময়ে যাতে নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ের কোনও অভাব না ঘটে, তাও লক্ষ্য রাখতে এসপিদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
কুকি সংগঠনগুলির অভিযোগ, আরাম্বাই টেঙ্গল নামের জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়ে কুকি এলাকা লক্ষ্য করে কামানের গোলা ছুঁড়েছে মণিপুরের নিরাপত্তা বাহিনী। কো-অর্ডিনেশন কমিটি অন মণিপুর ইন্টেগ্রিটির (কোকোমি) মহিলা শাখার পাল্টা দাবি, কুকি জঙ্গিরাই মেইতেইদের ওপর হামলা করছে। পুলিশ তাঁদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই লুট করা অস্ত্র তাঁরা ফিরিয়ে দেবেন না, চড়া সুরেই শুনিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। কোকোমির মহিলা শাখার আহ্বায়ক ওয়াই লেইরিক লেইমা বলেন, কুকি জঙ্গিরা তাদের ওপর হামলা করবে না, পুলিশ লিখিত প্রতিশ্রুতি দিলে তাঁরাই যুবকদের কাছ থেকে সমস্ত অস্ত্র সংগ্রহ করে ফিরিয়ে দেবেন। তা না হলে এখন লুট করা অস্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া দূরের কথা, নিরাপত্তা বাহিনী অস্ত্রের সন্ধানে গ্রামে গেলে মহিলারা লাঠি-তলোয়ার নিয়ে বার হবেন।