Barak UpdatesBreaking NewsFeature Story
প্রয়াত সমীর ভট্টাচার্যকে শ্রদ্ধাঞ্জলি, লিখেছেন স্নেহাংশু রঞ্জন স্বামী
//স্নেহাংশু রঞ্জন স্বামী//
২৮ ফেব্রুয়ারি: ওই দিন ছিল বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০৷ ঘুম থেকে উঠে দেখলাম সোনালি আকাশ ঝলমল করছে৷ এর একটু পরেই আমার একজন আত্মীয় এসে আমাকে বলল, একটা ভীষণ বাজে খবর৷ সমীর আর নেই৷ আমি বললাম, কোন সমীর? বলল, ‘সমীর ভট্টাচার্য৷ ওই যে করিমগঞ্জের৷’
সে একটু আগেই ফোন পেয়েছে৷ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ১টা ৫৫ মিনিটে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সমীর সবাইকে ছেড়ে অনন্তলোকে চলে গেছে৷ খানিকক্ষণ চুপ করে থাকলাম৷ বাকরুদ্ধ৷ এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত৷ কথাটা বিশ্বাস হচ্ছিল না৷ অনেক পুরনো ঘটনা এলোমেলোভাবে চোখের সামনে ভাসছিল৷ এরপর করিমগঞ্জ থেকে আমার কাছে অনেক ফোন এলো৷ তখন আমি অকল্পনীয় দুঃসংবাদ বিশ্বাস করতে বাধ্য হলাম৷
এই সমীর ভট্টাচার্য আমারই অতি স্নেহভাজন এক প্রাক্তন সহকর্মী৷ আমি তখন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগের (বর্তমান জলসম্পদ বিভাগ) করিমগঞ্জ সাব-ডিভিশনের সহকারী কার্যবাহী অভিযন্তা৷ সমীর সহকারী অভিযন্তা হিসাবে চাকরিতে যোগ দেয়৷ সেটা ১৯৮৩ সালের ২৯ জুন৷ সে থেকে বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের পর গত ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল অসম সরকারের জলসম্পদ বিভাগের ডিরেক্টর হিসাবে চাকরি থেকে অবসর নেয়৷
সে ছিল এক অসাধারণ, তীক্ষ্ণ মেধাবী, সুদক্ষ এবং ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ইঞ্জিনিয়ার৷ তাকে আমি অত্যন্ত কাছে থেকে দেখেছি৷ খুবই প্রতিভাবান ছিল৷ আমি জলসম্পদ বিভাগের মুখ্য অভিযন্তা হিসাবে ২০০৭ সালে অবসর নিই৷ দেখেছি, কী সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করত সমীর! বিশেষ করে, ইন্দো-বাংলা জয়েন্ট রিভার কমিশনের অধীনে করিমগঞ্জ টাউন প্রটেকশন স্কিমের সফল রূপায়ণের কথা উল্লেখ করতে হয়৷ সেই কবেকার কাজ! আজ অবধি বিদ্যমান৷ তা ছাড়া, প্রবল বন্যার সময়ে সে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করিমগঞ্জ শহরকে বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা করত৷
৬৩ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই একজন সফল ইঞ্জিনিয়ারের আকস্মিক প্রস্থান, আমাদের কাছে তো বটেই, করিমগঞ্জের সামাজিক জীবনেও অপূরণীয় ক্ষতি৷ খুবই ভারাক্রান্ত হৃদয়ে ওর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে বিদেহী আত্মার চিরশান্তি প্রার্থনা করছি৷ সমীর ভট্টাচার্যের শোকসন্তপ্ত স্ত্রী কাবেরী, একমাত্র পুত্র অভিষেক, পরিবারবর্গ এবং গুণমুগ্ধ সবাইকে গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি৷
(লেখক স্নেহাংশু রঞ্জন স্বামী অসম সরকারের জলসম্পদ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত মুখ্য অভিযন্তা)