Barak UpdatesHappeningsBreaking News

প্রগতিশীল মঞ্চের সংবর্ধনা সভায় আসামের বাঙালিদের সঙ্কটের কথাই বললেন বক্তারা

ওয়েটুবরাক, ৩ মে : আসামের বাঙালিরা এখনও যদি জোট না বাঁধেন, তাহলে সমূহ বিপদ৷ স্পষ্ট ভাষায় সতর্ক করে দিয়েছেন সিআরপিসির মুখ্য উপদেষ্টা আইনজীবী হাফিজ রসিদ আহমেদ চৌধুরী৷ বাঁশকান্দির এফএ ডিগ্রি কলেজে আয়োজিত এক বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি৷ প্রগতিশীল নাগরিক মঞ্চ গত রবিবার এই সংবর্ধনা সভার আয়োজন করে৷ আহ্বায়ক আব্দুল শুক্কুর বড়ভুইয়ার নেতৃত্বে মঞ্চ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে ২৯ জনকে মনোনীত করে সংবর্ধনা প্রদান করে৷ এর আগে গত ৭ মার্চ ২২ জনকে সংবর্ধনা দিয়েছিলেন তাঁরা৷

রবিবারের দ্বিতীয় পর্বের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হাফিজ রসিদ বলেন,  নিজেদের পরিচিতি সুরক্ষা করতে হবে৷ তাঁর কথায়, ধর্ম সংকটের চেয়ে ভাষার সংকট কোনও অংশেই কম নয়৷ বাঙালি হয়ে বাঁচতে না পারলে গণতন্ত্র বাঁচবে না, গণতন্ত্র না বাঁচলে দেশ বাঁচবে না, নিজেও বাঁচবেন না৷
ভাষা আইনেই যে এখানে অসমিয়ায় চিঠিপত্র পাঠানোর কথা নয়, এ কথা গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন গৌহাটি হাই কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী হাফিজ রসিদ৷

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য বললেন, আসামে বাঙালি আজ বিপন্ন৷ নানাভাবে বাঙালিদের বিরুদ্ধে উসকে দেওয়া হচ্ছে৷ এখন ডিমাসাদের উসকানি চলছে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ বলেন, “রবীন্দ্র-নজরুলের ভাষায় কথা বলেও পার পাচ্ছি না৷” তিনিও সতর্ক করে দেন, “সত্য বলতে না পারলে, মনুষ্যত্ব বাঁচবে না, বাঙালিত্ব বাঁচবে না৷”

ভারতে প্রতিনিয়ত ভাষার মৃত্যু ঘটছে বলে আক্ষেপ ব্যক্ত করেন নেহরু কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবিদ রাজা মজুমদার৷ তিনি জানান, ১৯৬০ সালের আগে ভারতীয়রা ৯৫টি ভাষায় কথা বলতেন৷ একবিংশ শতকের শুরুতে তা কমে হয় ৭৭৷ এখন ৩০-৩৫টি ভাষার বেশি চলে না বলেই অনুমান তাঁর৷

সে দিনের সভায় সভাপতিত্ব করেন অবসরপ্রাপ্ত এসিএস অফিসার হোসেন আহমেদ লস্কর৷ হাফিজ রসিদ আহমেদ চৌধুরী, তপোধীর ভট্টাচার্য, আবিদ রাজা মজুমদার ছাড়াও মঞ্চে ছিলেন মৌলানা আহমেদ সয়ীদ গোবিন্দপুরী, এফএ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মুরাদ আহমেদ লস্কর, হাইলাকান্দি এসএস কলেজের অধ্যক্ষ হিলালউদ্দিন, হাইলাকান্দির অতিরিক্ত জেলা বিচারপতি মাহমুদ হোসেন বড়ভুইয়া, নেহুর অধ্যাপক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস, মকব্বির আলি বড়ভুইয়া, নজরুল হক মাঝারভুইয়া, কল্যাণ চক্রবর্তী, আব্দুল হক বড়ভুইয়া, সাবির আহমেদ, সাবির হোসেন, সাদিক আহমেদ সিবলি, জাহিদা বেগম চৌধুরী এবং মহুয়া চৌধুরী৷ প্রকৃত অর্থেই তারকার হাট৷
নাজমা বেগম স্বাগত ভাষণ দেন৷ পরে
এসএস কলেজের অধ্যক্ষ হিলালউদ্দিন শোনান, গুণী ব্যক্তি শনাক্ত করা খুব কঠিন‌ ৷ কারণ আজ বহু শিক্ষিত মানুষ নানা অপরাধে অভিযুক্ত৷ তাঁর বক্তব্য, কঠিন সময়ে সংকটের কথাটা যিনি ঠিকঠাক বলতে পারেন, তিনিই জ্ঞানী৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker