Barak UpdatesBreaking NewsFeature Story

পৌষ সংক্রান্তিতে রথযাত্রা হল রাতাবাড়ির সোনাপুরে

১৮ জানুয়ারি: আষাঢ় মাসে রথযাত্রা হয়৷ কিন্তু বরাক উপত্যকায় রাতাবাড়ির সোনাপুরে জগন্নাথদেব রথে চড়েন মকর সংক্রান্তিতে৷ এ বারও পৌষমাসের শেষ দুপুরে রথ ঘিরে হয় পুজোপাঠ৷ পরে জগন্নাথদেবকে নিয়ে রথে বসানো হয়৷ এ উপলক্ষে উপত্যকার বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ জড়ো হন৷ রথের রশিতে টান পড়তেই ছোটাছুটি, কার আগে কে রশি ধরবেন৷

আষাঢ় মাসের রথের মতই সমস্ত আয়োজন, ব্যবস্থাপনা৷ কীর্তন, লুট সবই রয়েছে৷ ফারাকটাও আবার কম নয়৷ সোনাপুরের রথে জগন্নাথ একাই ঘুরে বেড়ান৷ বলরাম, সুভদ্রার স্থান নেই সেখানে৷ মাসীর বাড়ি তো নয়ই, এলাকার বাইরে কোথাও যান না তিনি৷ ভক্তদের হইহুল্লোড়ের মধ্যে নিজের এলাকা একবার চক্কর কেটে আবার মণ্ডপে চলে আসেন৷ ফেরা রথের কোনও ব্যাপার নেই৷

কী করে কবে থেকে পৌষ সংক্রান্তিতে রথ বেরোয় ওখানে, প্রবীণরাও স্পষ্ট বলতে পারেন না৷ হিমাংশু নমঃশূদ্র, সুরজ রায়রা জানান, আগে শনবিল নবীনগ্রামের নমঃশূদ্র জনগোষ্ঠী পৌষসংক্রান্তিতে রথ বের করত৷ আজকের প্রবীণরাও শৈশব থেকে তা দেখে আসছিলেন৷ ১৯৭৭ সালে জায়গার অভাবে পৌষসংক্রান্তির রথযাত্রা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়৷ নবীনগ্রামেরই অনেকে সোনাপুরে বাড়ি করেছেন৷ তাঁরাই ঐতিহ্য ধরে রাখার দায়িত্ব নেন৷ সে থেকে নবীনগ্রামের বদলে রশিতে টান পড়ে সোনাপুরের মাঠে৷

নমঃশূদ্র জনগোষ্ঠী মূল আয়োজক হলেও এখন অন্যরাও হাত মেলান৷ চা বাগান জনগোষ্ঠীর মনোজ মোহান্তি বললেন, আমরা সারা বছর এই দিনটির অপেক্ষায় থাকি৷ বিশেষ করে, মেলায় বিভিন্ন ধরনের জিনিস মেলে৷ এক জায়গা থেকে একসঙ্গে প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস কেনা যায় বলে সবাই ভিড় জমান৷ বাদ যান না মুসলমানরাও৷

বরাক উপত্যকায় পৌষ সংক্রান্তিতে রথ বেরোয় উধারবন্দ এলাকার ঠালিগ্রামেও৷ সেখানে অবশ্য আয়োজক চা বাগান জনগোষ্ঠী৷ বলা হয়, পৌষমাসের শেষদিনে অক্রুর মুনি শ্রীকৃষ্ণকে রথে বসিয়ে মথুরা নিয়ে গিয়েছিলেন৷ তাই তাদের রথে জগন্নাথ নন, শ্রীকৃষ্ণ বসেন৷ সোনাপুরের রথকে ভীষ্মদেবের রথ বললেও চড়েন জগন্নাথদেবই৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker