Barak UpdatesHappeningsBreaking News
পুরনো প্রতিশ্রুতিগুলির কী হল, মোদির কাছে জবাব চায় বিডিএফ
ওয়েটুবরাক, ১৭ মার্চ: আগামীকাল ১৮ ই মার্চ বরাক সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।এই সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী নতুন কী প্রতিশ্রুতি দেন তা নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। এই ব্যাপারে আগাম সতর্ক করে দিয়েছে বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট৷ এর মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে নতুন করে কোনও প্রতিশ্রুতি দেবার আগে ২০১৪ ও ২০১৬ সালে তাঁরই দেওয়া প্রতিশ্রুতি কেন এখনও বাস্তবায়িত হল না এর ব্যাখ্যা করতে হবে। প্রদীপবাবু মনে করিয়ে দেন, ২০১৪ জনসভায় বরাকে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ক্ষমতায় আসলে তারা এই রাজ্যের সমস্ত ডিটেনশন ক্যাম্প ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবেন। তা পূরণ করা তো দূরে থাক, উল্টে গোয়ালপাড়াতে সরকারি টাকায় এশিয়ার বৃহত্তম ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি হচ্ছে। তিনি ডিটেনশন ক্যাম্পে মৃত অর্জুন নমঃশূদ্রের উল্লেখ করে বলেছিলেন, এই রাজ্যে কারও যাতে ডি ভোটার হয়ে এভাবে মৃত্যুবরণ করতে না হয় তিনি দায়িত্ব নেবেন। অথচ এখন অবধি বেছে বেছে বাঙালিদের ডি নোটিশ দেওয়া জারি রয়েছে। ২০১৬-তে বরাকে এসে নরেন্দ্র মোদি কাছাড় কাগজ কল সচল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অথচ যেখানে শুধু ২০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে এটিকে সচল করার সুযোগ ছিল, সেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, যার ফলশ্রুতিতে এখন অবধি ৮২ জন শ্রমিক কর্মচারীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
বিডিএফ প্রধান বলেন, বরাকবাসীর মনে আছে তাঁর সেই আবেগিক বক্তব্যের কথা, যেখানে তিনি বাঙালি হিন্দু যারা অন্যদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে এদেশে এসেছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের মাধ্যমে তাদের আশ্রয় দেবার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু দুই সংসদে পাশ হবার পরও শুধু অসমিয়া ভোট ব্যাংক হাতছাড়া হবার ভয়ে এখনো এর বাস্তবায়ন হয়নি৷
এছাড়া তিনি যে বারবার অটল বিহারী বাজপেয়ীর উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, সেই বাজপেয়ীর স্বপ্নের শিলচর-সৌরাস্ট্র মহাসড়কের কাজ দিসপুরের বরাক বিরোধী লবির চক্রান্তে গত ১৬ বছর ধরে থেমে আছে৷
কেন এটি সম্পূর্ণ না করে এখানে বাজপেয়ীর মর্মর মূর্তির উদ্বোধন হয়ে গেল, এসব ব্যাপারে তার জবাব জানতে চায় বরাকবাসী। এছাড়া জাতীয় স্তরে যে দু কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী, তাও যে এক বিশাল ভাওতা, তা ইতিমধ্যে প্রমাণিত বলে জানান দত্তরায়৷ কারণ দুই কোটি নতুন চাকরি দূরের কথা, উল্টে গত এক বছরে এক কোটি লোক কর্মসংস্থান খুইয়েছেন৷ চাকরি খুইয়ে বরাকেও অনেকে ফিরে এসেছেন। এছাড়া কালো টাকা উদ্ধার করে সবার একাউন্টে ১৫ লাখ টাকা জমা করার মতো মিথ্যে প্রতিশ্রুতি তো রয়েছেই।
প্রদীপ বাবু সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, হয়তো এসবের জবাব তাঁর কাছে নেই বলেই এবারের সভাস্থলের জন্য করিমগঞ্জ জেলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক এদিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেকে একজন সৎ ও দেশহিতের জন্য দায়বদ্ধ ব্যাক্তি বলে দাবি করেন। তাই পুরনো প্রতিশ্রুতিগুলি কেন পালিত হল না তার জবাব দিয়ে সততার প্রমান দিন তিনি। অন্যথা তার নতুন প্রতিশ্রুতিকে ভাওতাবাজি বলেই একশো শতাংশ নিশ্চিত থাকবেন বরাক উপত্যকাবাসী। এক প্রেস বার্তায় জানিয়েছেন বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য।