Barak UpdatesHappeningsBreaking News

পুরকর : পুরসভার সামনে বিক্ষোভ এসইউসিআইর

ওয়েটুবরাক, ৫ সেপ্টেম্বর : অস্বাভাবিক হারে কর বৃদ্ধির চক্রান্তের প্রতিবাদে সোমবার এসইউসিআইর শিলচর আঞ্চলিক কমিটির পক্ষ থেকে পুরসভার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। বিক্ষোভ শেষে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে পুরসভার আধিকারিক মারফত একটি স্মারকপত্র প্রদান করা হয়। স্মারকপত্রে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি শিলচর পুরসভা হোল্ডিং পিছু যে সেলফ অ্যাসেসমেন্ট প্রপত্র প্রদান করেছে তাতে জমির দাম, ঘরের মূল্য ইত্যাদির উপর ধার্য করা করের পরিমাণ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ‘আসাম মিউনিসিপাল (অ্যামেনমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০১২’ এর ‘৭৯ ( জি)’ অনুযায়ী জমির পরিমাণ, ঘরের পরিমাপ ইত্যাদির উপর প্রতি পাঁচ বছর পরপর কর ধার্য করা হয়। ২০২০-২১ সালের কোভিড পরিস্থিতি ও ২০২২ সালের প্রলয়ঙ্করী বন্যার পর শিলচর শহরের জনগণের আশা ছিল অন্ততপক্ষে এবছর নতুন করে করের বোঝা চাপানো হবে না।

কিন্তু রাজ্য সরকার বানবিধ্বস্ত শিলচর শহরের নাগরিকদের উপর সেলফ অ্যাসেসমেন্টের নামে অধিক টাকা সংগ্রহের ছক কষেছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০১২ সালের জমির মূল্য কাঠা প্রতি ১,২৭,৫০০ টাকার বদলে ৯,৫০,০০০ টাকা এবং ৭৫,০০০ টাকার বদলে ২,৮০,০০০ টাকা করেছে। ফলে বর্ধিত জমির মূল্যের উপর যে কর চাপানো হয়েছে তা পূর্বের তুলনায় কতগুণ বেশি হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়াও ২০১২ সালে বিল্ডিংয়ের কর ধার্য হয়েছিল রাজ্য সরকারের পি ডব্লিউ ডি বিভাগের এসেসমেন্টের ভিত্তিতে কিন্তু বর্তমানে তা কেন্দ্র সরকারের সি পি ডব্লিউ ডি বিভাগের তালিকা অনুসারে তৈরি করা হয়েছে । ফলে ২০১২ সালে আসাম টাইপ ঘরের প্রতি বর্গ ফুটে ৭২৪ টাকা হিসেব ধরে কর ধার্য হয়েছিল, বর্তমান তা প্রতি বর্গ ফুট  ২৬৫৪.১৩ টাকা হয়েছে। এছাড়াও পূর্বে সম্পূর্ণ কাঁচা, অর্ধ কাঁচা ও পাকা, একতল, দ্বিতল, ত্রিতল ইত্যাদি ঘরের জন্য আলাদা আলাদা কর ধার্য ছিল কিন্তু এবার সব একসাথে সব জুড়ে দিয়ে সাধারণ ঘরের মালিক থেকে তিনতলার মালিকের একই কর দিতে হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, হোস্টেল ইত্যাদির জন্য অধিক হারে এবং ঘরের আভ্যন্তরীণ জল সরবরাহ, শৌচাগার, বিদ্যুৎ সংযোগ ইত্যাদির ক্ষেত্রেও কর আরোপিত হয়েছে।

এই সেলফ এসেসমেন্ট প্রপত্র সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝাই খুব কষ্টকর। কিন্তু একথা স্পষ্ট,  এই প্রপত্র পূরণ করে জমা দেওয়ার অর্থ হচ্ছে নিজেই সরকারের অন্যায় ভাবে বর্ধিত পুরকর মেনে নেওয়া। তাই দলের পক্ষ থেকে জনগণকে এই প্রপত্র জমা না দিতে আহ্বান জানানো হয়।

দলের শিলচর আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক দুলালী গাঙ্গুলি বলেন, এসেসমেন্ট প্রপত্র যখন সংগ্রহ করা হচ্ছে তখন আমাদের নির্বাচিত কোনও পুর বোর্ড নেই৷ তাই জনগণের অভিযোগ জানানোর জায়গা নেই। তিনি এও বলেন যে শহরের নাগরিকেরা বর্তমানে যে কর প্রদান করেন তার বিনিময়ে কী পাচ্ছেন? পুর এলাকার খাল, নর্দমা ইত্যাদি উপযুক্ত সংস্কার না করে জমাজলের সমস্যা পোহাতে বাধ্য করা হচ্ছে, বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহে চলছে চূড়ান্ত অনিয়ম, অহেতুক যত্রতত্র পার্কিং জোন গড়ে তুলে শহরে যানজট তৈরি করা হচ্ছে, শহরের আবাসিক ও বানিজ্যিক এলাকা থেকে আবর্জনা পরিষ্কারে চরম উদাসীনতা ও ব্যর্থতা তো রয়েছেই। তাই পুর কর বৃদ্ধির চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায় দল।

বিক্ষোভ চলাকালে সেখানে উপস্থিত ছিলেন দিলীপ নাথ, চাম্পালাল দাস, স্বাগতা ভট্টাচার্য, খাদেজা লস্কর, প্রশান্ত ভট্টাচার্য, স্বাগতা চক্রবর্তী প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker