Barak UpdatesHappeningsBreaking News
কাছাড়ে এনকাউন্টার ! নাজ হত্যায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হিফজুর গুলিতে নিহত
ওয়েটুবরাক, ১১ জুলাই : ভাঙ্গার তোফায়েল আহমদের পুত্র আহরার আহমেদ ওরফে নাজ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত হিফজুর রহমান পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে৷ শিলচর সেন্ট্রাল জেল থেকে পালিয়ে দুইমাস আত্মগোপন করেছিল৷ আর নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারেনি৷ সোমবার কাছাড় পুলিশ তার সন্ধান পায়৷
পুলিশ সুপার নোমল মাহাত্তা জানান, মেঘালয় থেকে গাড়ি চড়ে হিফজুর কাছাড়ে ফিরছে, গোয়েন্দা সূত্রে সোমবার খবর পান তাঁরা৷ তখন থেকে আসাম-মেঘালয় সীমায় ওঁৎ পেতে থাকে পুলিশ৷ নির্দিষ্ট ম্যাক্সিক্যাব গাড়িটি থামিয়ে হিফজুরকে নিজেদের জিম্মায় নেন তাঁরা৷ পুলিশ ভ্যানে তুলে ফেরার পথে বুরুঙ্গায় সে প্রস্রাব করতে নামে৷ এসপি জানান, তখনই হিফজুর সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা দুই কনস্টেবলকে ধাক্কা দিয়ে রাতের অন্ধকারে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে৷ পুলিশদল থামতে বললেও সে কানে তোলেনি৷ শেষে বাধ্য হয়েই এরা গুলি চালায়৷ জখম হিফজুরকে উদ্ধার করে তারা প্রথমে কালাইন হাসপাতালে নিয়ে যান৷ সেখান থেকে পাঠানো হয় শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে৷ চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়৷
চাঞ্চল্যকর নাজ হত্যাকাণ্ডে হিফজুরের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল করিমগঞ্জের জেলা আদালত৷ পরে হাই কোর্ট মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাবাসের রায় দেয়৷ নিরাপত্তার কারণে তাকে করিমগঞ্জ থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল শিলচর সেন্ট্রাল জেলে৷ কিন্তু গত ১১ মে আরেক খুনের আসামীকে সঙ্গে নিয়ে পাচিলের তলায় সুড়ঙ্গ খুঁড়ে জেল থেকে পালিয়ে যায়৷ এ বার অবশ্য মৃত্যুকেই বরণ করে নিতে হলো৷
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ২০ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীপুত্র, কলেজ পড়ুয়া নাজকে ডেকে নিয়ে অপহরণ করা হয়েছিল৷ পরে চল্লিশ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা৷ দর কষাকষির পর মোটা অঙ্কের টাকাও দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু অপহরণের পাঁচদিন পরে মনসাঙ্গন এলাকা থেকে নাজের দেহ মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়৷
পুলিশ তদন্ত করে তেরোজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়৷ তাতে বলা হয়, পুরো ঘটনার মূল মাস্টারমাইন্ড সেলিম আহমেদ৷ কিন্তু নাজকে বার বার ডেকে নিয়ে গিয়েছিল মোটর মেকানিক হিফজুর রহমান৷ করিমগঞ্জ জেলা বিচারক কমলেন্দু চৌধুরী ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি দুজনকেই মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিলেন৷ মোট ছয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করে দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং দুইজনকে দশ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন৷ পরে সেলিম ও হিফজুর হাই কোর্টে গেলে তাদের আবেদন মঞ্জুর করে মৃত্যুদণ্ডের বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়৷
দুই মাস আগে হিফজুর দীপ নুনিয়া নামে আর এক আসামীকে নিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পালিয়ে যায়৷ এক মহিলা খুনে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত দীপকে অবশ্য এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি৷