NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsCultureBreaking News
দয়ানন্দবাবুর মন্তব্য অকথ্য, স্বৈরাচারী : প্রতিবাদে সরব আইপিটিএ
ওয়েটুবরাক, ২২ এপ্রিল: আসাম উচ্চতর মাধ্যমিক শিক্ষা পরিষদের চেয়ারম্যান দয়ানন্দ বরগোঁহাই রাজ্যের বাংলাভাষী, বিশেষভাবে বরাক উপত্যকার বাঙালিদের বিরুদ্ধে বৈদ্যুতিন মাধ্যমে যে আপত্তিজনক মন্তব্য করেছেন, এর বিরুদ্ধে ভারতীয় গণনাট্য সংঘ (আইপিটিএ)-র কাছাড় জেলা কমিটি দৃঢ় প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ পাশাপাশি সংগঠন রাজ্য সরকারের একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তির এরকম ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণকে তীব্র ভাষায় ধিক্কার জানায় এবং উক্ত ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর অনুশাসনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানায়৷
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, বৈদ্যুতিন মাধ্যমে শিক্ষা পরিষদের চেয়ারম্যান রাজ্যের বাঙালিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আসামে থাকতে হলে অসমিয়া ভাষা শিখতেই হবে৷ অন্যথায় আসাম ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যেতে হবে৷ আইপিটিএ বিস্মিত, শিক্ষা বিভাগের এক দায়িত্বশীল পদে আসীন ব্যক্তির সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে ভদ্রতা-শালীনতা সমস্ত কিছু জলাঞ্জলি দিয়ে আসামে বসবাসকারী ভারতীয় বাঙালিদের বিরূদ্ধে হুমকি দেওয়া শুরু করলেন! দয়ানন্দবাবুর মন্তব্যকে অকথ্য, স্বৈরাচারী বলে উল্লেখ করে আইপিটিএ-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারের শিক্ষাবিভাগের দায়িত্বশীল আসনে বসে এত স্পর্ধা কিসের জোরে দেখাতে পারলেন, সেই প্রশ্নটাই বারবার উঠে আসছে৷ নানা ধর্মের, নানা জাতির, নানা ভাষার মানুষের বসবাস এই রাজ্যে৷ তাই একটা বহুজাতিক, বহুভাষিক এবং বহু জনগোষ্ঠীর সবাই মিলেমিশে এক হয়ে থাকা রাজ্যে এরকম উক্তি শুধু এই রাজ্যের জন্য নয়, সমগ্র দেশের জন্য বিপদ ডেকে আনবে৷ কারণ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে থাকা ঐক্য সংহতি বিপন্ন হবার সাথে সাথে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতের বীজ রোপন করা হবে বলে মত পোষণ করে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের কাছাড় জেলা কমিটি৷ সংগঠনের তরফে কোনও রকম উগ্র জাতীয়তাবাদী বা উগ্র মৌলবাদী, উগ্র বিভাজনবাদী এবং কোনও রকম প্ররোচনামূলক মন্তব্যকে প্রশ্রয় না দেবার জন্য রাজ্যের সকল স্তরের মানুষের প্রতি দৃঢ়কন্ঠে আহ্বান জানানো হচ্ছে৷
তাদের কথায়, ভাষা আমাদের অস্তিত্বের একটা অংশ৷ মানুষের যতগুলো আত্মপরিচয় থাকে, তার মধ্যে ভাষা অন্যতম৷ তার দেশ, জাতি, ধর্ম, পরিবার যেমন তার আত্মপরিচয়, তেমনি ভাষাও৷ আর নিজের আত্মপরিচয় প্রতিটা মানুষের কাছেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়াও আমাদের গণতান্ত্রিক দেশ ভারতবর্ষের সংবিধান ভারতে বসবাসকারী সকলকে তাদের ভাষা, ধর্ম, শিল্প, জীবনযাত্রার চর্চাসহ সাংস্কৃতিক অধিকার সংরক্ষণের অধিকার দেয়৷ এই কথাগুলো সবার মনে রাখা উচিত বলেই মনে করে সংগঠন৷ এরই পরিপ্রক্ষিতে গণনাট্য সঙ্ঘ দাবি জানায়, ১৯ মে বরাক উপত্যকার ভাষা শহিদ দিবসের দিন সমস্ত পরীক্ষা বাতিল করা হোক৷ অন্যথায় এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ এপ্রিল বরাক বনধের যে ডাক দেওয়া হয়েছে তাকে সার্থক করে তুলতে বরাকের আপামর জনসাধারণের কাছে আবেদন জানায় তারা৷