NE UpdatesHappeningsBreaking News
ত্রিপুরা সরকারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর, এ বার ধর্মনগরেও ‘কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতাল’
ওয়েটুবরাক ২৮ জানুয়ারি: শিলচরের কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতাল সোসাইটি ত্রিপুরার ধর্মনগরে হাসপাতাল গড়তে চলেছে। মঙ্গলবার ত্রিপুরা সরকারের সঙ্গে সোসাইটির লিজনামা স্বাক্ষরিত হয়। সরকারের পক্ষে উত্তর ত্রিপুরার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন এবং সোসাইটির পক্ষে সাধারণ সম্পাদক নীলাভ মৃদুল মজুমদার তাতে স্বাক্ষর করেন। সে সময় উপস্থিত ছিলেন কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতালের ডিরেক্টর রবি কান্নান । ছিলেন হাসপাতাল সোসাইটির বিভিন্ন পদাধিকারী ও সদস্যরা। ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন দীর্ঘ সময় ধরে সোসাইটির ১১ সদস্যর প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে প্রস্তাবিত হাসপাতাল নিয়ে মতবিনিময় করেন।
৩০ বছরের লিজে ত্রিপুরা সরকার ধর্মনগর শহর থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে আলগাপুরে ১৫ একর জমি দিয়েছে। সেখানে উত্তর ত্রিপুরার রোগীদের জন্য ক্যান্সার হাসপাতাল গড়বে কাছাড় ক্যান্সার হাসপাতাল সোসাইটি।
জমি হস্তান্তর সম্পন্ন হওয়ার পর অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন এবং সোসাইটির কর্মকর্তারা যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করেন। বিশ্ববন্ধু সেন বলেন, ১২-১৩ বছর আগে কান্নানকে প্রথম তিনি ধর্মনগরে ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এর বহুদিন পরে আলোচনার আবহ তৈরি হলে তিনিই সোসাইটির এক প্রতিনিধি দলকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার সঙ্গে দেখা করেন। মুখ্যমন্ত্রীর আগ্রহেই আলগাপুরে ১৫ একর জমি দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাও মাত্র এক টাকা বার্ষিক খাজনার বিনিময়ে। অধ্যক্ষের দাবি, তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নের এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ পেরোল এ দিন। তিনি নিজস্ব জমিতে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য অপেক্ষা না করে এখনই অন্তত একটি ক্যান্সার ডিটেকশন সেন্টার চালুর জন্য ডিরেক্টর কান্নানকে অনুরোধ জানান। সেজন্য সরকারি হাসপাতালে রুমের বন্দোবস্ত রয়েছে বলে জানান।
সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক নীলাভ মৃদুল মজুমদার জানান, ১৯৯২ সালে শিলচর শহরের কয়েকজন সমাজসেবী মিলে এই সোসাইটি গড়েছেন। তারাই জনগণের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করে ১৯৯৬ সালে এক অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলেন, গড়ে তোলেন এক ক্যান্সার হাসপাতাল। মজুমদার খোলামেলা বলেন, পরে ২০০৭ সালে ডা. রবি কান্নান এসে ডিরেক্টর পদে যোগ দিলে এই হাসপাতাল মহীরুহে পরিণত হয়।
তিনি জানান, সোসাইটি শ্রী শ্রী রাধারমন আশ্রমের সহযোগিতায় করিমগঞ্জ জেলার বারইগ্রামে হাসপাতাল চালু করেছে। এখন ভাড়াবাড়িতে হাসপাতাল চললেও শীঘ্রই আশ্রমের দান করা জমিতে নির্মাণ কাজ শুরু হবে। করিমগঞ্জেও ডা. সাধন দাসদের জমি সোসাইটিকে দান করা হয়েছে।
ডা.কান্নান ত্রিপুরার রোগীদের যেন শিলচরে না যেতে হয়, সে জন্যই ধর্মনগরে হাসপাতাল গড়বেন বলে প্রত্যয়ের সঙ্গে জানান। শিলচরের ক্যান্সার হাসপাতাল ‘পিপলস প্রজেক্ট’, ধর্মনগরের প্রস্তাবিত হাসপাতালটিও ‘পিপলস প্রজেক্ট’ই হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। প্রথমে এখানে হবে পেলিয়াটিভ কেয়ার। তিনি জানান, অন্যত্র হাসপাতালের কয়েক ধাপ পেরিয়ে পেলিয়াটিভ কেয়ার ডিপার্টমেন্ট খোলা হলেও ধর্মনগরে শুরুতেই পেলিয়াটিভ কেয়ার হবে।
সোসাইটির প্রতিনিধি দলে কান্নান-মজুমদার ছাড়াও ছিলেন ডা. অরুণ ভট্টাচার্য, সখারঞ্জন রায়, শান্তনু দাস, বিশ্বরাজ চক্রবর্তী, শিল্পজিৎ পাল, সমীরণ নাথ, রসরাজ দাস, বিরাজ নাথ, সৌভিক মজুমদার ও উত্তম কুমার সাহা। ধর্মনগরের নাগরিকদের মধ্যে এ ব্যাপারে দিনভর দৌড়ঝাঁপ করেন বিশিষ্ট সমাজসেবী শুভঙ্কর সেন, অশোক দত্ত প্রমুখ।