NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsAnalyticsBreaking News
ত্রিপুরায় গিয়ে সাফল্য কুড়িয়েছিলেন সন্তোষমোহন, সুস্মিতা চরম ব্যর্থ
এক শতাংশ ভোটও জুটল না দিদির দলের
ওয়েটুবরাক, ৫ মার্চ : ত্রিপুরার সঙ্গে অসমের বরাক উপত্যকার নির্বাচনী সংযোগ ঘটিয়েছিলেন সন্তোষমোহন দেব। ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে তিনি ওই রাজ্যে কংগ্রেস পর্যবেক্ষক নিযুক্ত হলে দল বেঁধে এখানকার কংগ্রেসিরা পাশের রাজ্যে গিয়ে কাজ করেন। সে বার বাম রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে কংগ্রেসকে ক্ষমতায় ফিরিয়েছিলেন তিনি। পরে ত্রিপুরা থেকে দুইবার সাংসদ হন, ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও।
গত দুই বছর ধরে সেই পুরনো সংযোগকে ঝালিয়ে নেওয়ার কাজ করছিলেন তাঁরই কন্যা সুস্মিতা দেব। তবে তিনি এখন আর কংগ্রেস নেত্রী নন। ২০২১ সালের ১৬ অগস্ট তৃণমূলে যোগ দিয়েই ত্রিপুরায় ছোটেন। সিপিএম কি কংগ্রেস, বিরোধীদের ভরসার স্থল হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে তৃণমূলের শক্তিশালী প্রতিবাদের মধ্য দিয়েই সিপিএম নেতারা বিজেপির বিরুদ্ধে মাঠে নামার সাহস পেয়েছিলেন। পুরসভার নির্বাচনে তাই ঘাসফুলকেই প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে সামনে রেখেছিলেন সবাই। তখনও সুস্মিতার আহ্বানে ত্রিপুরায় গিয়ে তৃণমূলের কাজ করেছিলেন বরাকের বহু যুবক। এরা শিলচরের দিদির নেতৃত্বে পাশের রাজ্যে গিয়ে দিনরাত ঘাম ঝরিয়েছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনেও তাঁরা সেখানে কাজ করেন৷
কিন্তু পিতার সাফল্যের ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারলেন সুস্মিতা। বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে তৃণমূলের ঝুলিতে মোট ভোট পড়েছে ২২৩১৬টি। মোট ভোটের এক শতাংশেরও কম। এ যে খুবই বাজে ফল, তা অকপটে স্বীকার করেন রাজ্যসভার সদস্য সুস্মিতা। তাঁর কথায়, এ বার ত্রিপুরায় ভোট হয়েছে বিজেপিকে রাখব কি রাখব না, ওই হিসেবে৷ যারা সরাতে চেয়েছেন, তাঁরা সিপিএম-জোটকে বেছে নিয়েছেন৷ তৃণমূলের পক্ষে সিপিএমের সঙ্গে আঁতাত করা কোনও মতেই সম্ভব নয়৷ তবে এখন সেখানে সংগঠনকে শক্তিশালী করার সুযোগ মিলবে৷ মানুষ বুঝে গিয়েছেন, সিপিএমের পক্ষে বিজেপিকে সরানো সম্ভব নয়৷
বরাক উপত্যকা থেকে বিজেপির নেতা-কর্মীরাও দল বেঁধে গিয়ে এ বার কাজ করেছেন৷ তাঁরা ফলাফলের জন্য উৎকণ্ঠায় ছিলেন৷ এর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছিল বুথ ফেরত সমীক্ষা৷ গণনার পর জাদুসংখ্যা অতিক্রম করায় তাঁরা বেশ উৎফুল্ল৷ বৃহস্পতিবার বিকালে করিমগঞ্জে চলে লাড্ডু বিলি৷ জেলা বিজেপির সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, পাশের রাজ্যের জয় এখানকার কর্মীদের উদ্দীপ্ত করেছে৷ শুক্রবার শিলচরে বিজয় শোভাযাত্রা বার হয়৷
সিপিএমের কাছাড় জেলা সম্পাদক দুলাল মিত্র এবং কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তমালকান্তি বণিক শোনালেন, জোটের কোনও নেতা-কর্মী ত্রিপুরায় নির্বাচনী কাজে যাননি৷ তবে তাঁরা আশা করছিলেন, জোটের পক্ষে প্রতিবেশী রাজ্যে বিজেপিকে হটানো সম্ভব হবে৷ সেই আশা পূরণ না হওয়ায় তাঁরা দুশ্চিন্তায়৷ বরাকের সংগঠনে এর প্রভাব কতটা পড়বে, এ নিয়ে দুলালের চেয়ে বেশি ভাবছেন তমাল৷ তাঁর বক্তব্য, জোট হয়েছে উপরতলায়, নীচুতলায় কেউ কারও জন্য কাজ করেনি, ভোটও দেয়নি৷