India & World UpdatesHappenings
ত্রিপুরায় আরও এক ভারত-বাংলা বর্ডার হাট, কমলপুরে শিলান্যাস
ওয়েটুবরাক, ৪ ফেব্রুয়ারি: ত্রিপুরায় চালু হল আরও একটি বর্ডার হাট৷ গতকাল বৃহস্পতিবার ধলাই জেলার কমলপুরে এর শিলান্যাস করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী দেব বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক হৃদয়ের। সাংস্কৃতিক সম্পর্কও অতি প্রাচীন। এখন গাঢ়তর হচ্ছে বাণিজ্য সম্পর্ক। প্রধান অতিথি মুন্সি বলেন, বর্ডার হাটে শুধু কেনা-বেচা হয় না। এটা আত্মার সংযোগ। একজন আরেকজনকে চেনেন। একজন আরেক জনের পাশে দাঁড়ান। তারা সুখ-দুঃখ, সংস্কৃতি ভাগ করে নেন। তাঁর কথায়, “আমরা চাই, এ ধরনের বর্ডার হাট আরও হোক। আমরা একে অপরকে আরও কাছাকাছি পেতে চাই।”
এদিন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী মনোজকান্তি দেব, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস সহিদ, টিআইডিসি-র চেয়ারম্যান টিঙ্কু রায়, ঢাকাস্থিত ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, সহকারী হাই কমিশনার নীরজকুমার জয়সওয়াল, মৌলভীবাজারের জেলাশাসক মির নাহিদ আহসান, অতিরিক্ত জেলাশাসক রুমানা ইয়াসমিন, ধলাই জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং বর্ডার হাট ম্যানেজম্যান্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোসলেমউদ্দিন আহমেদ।
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব জানান, রাজ্যে আটটি বর্ডার হাট স্থাপনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। দুইটি বর্ডার হাট চালু হয়েছে। এর মধ্যে একটি বর্ডার হাটের আজ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। তিনি জানান, ধর্মনগরের রাগনায় আরও একটি বর্ডার হাট স্থাপনের অনুমতি মিলেছে। তাঁর দাবি, কমলপুরে বর্ডার হাট খুব শীঘ্রই চালু হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে ত্রিপুরার দক্ষিণ জেলার শ্রীনগর এবং সিপাহিজলার কমলাসাগর সীমান্তে হাট চালু হয়ে গিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও শোনান, ত্রিপুরার দক্ষিণ জেলার সাব্রুম মহকুমাতে ফেনী নদীর উপুর মৈত্রী সেতু নির্মাণ হয়ে গিয়েছে। এখন আগরতলা থেকে চট্টগ্রাম বন্দর মাত্র ২০২ কিলোমিটার৷
বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি বলেন, “আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলো৷ সেই কৃতিত্বের বৃহৎ অংশের দাবিদার ত্রিপুরা রাজ্য। এখানে প্রায় চৌদ্দ লক্ষ মানুষ এসে আশ্রয় নিয়েছিল, আপনাদের সাহায্য পেয়েছিল। তখন ঢাকা থেকে যত লোক ভারতে ঢুকেছেন তার আশিভাগ লোক এই আগরতলা দিয়ে এসেছেন। সেই সময় আপনাদের সহযোগিতা, পাশে থাকা, ভালোবাসা এবং যে কষ্ট আপনারা সইয়েছেন আজকে পঞ্চাশ বছর পরে এসে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কৃতজ্ঞতাটুকু জানাতে পেরে আমি গৌরব বোধ করছি।”
প্রসঙ্গত, নতুন বর্ডার হাট ভারতীয় অংশে ১.৩৬ একর এবং বাংলাদেশের অংশে ১.৩৬ একর জমিতে স্থাপিত হচ্ছে। এই হাট নির্মাণের জন্য ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। পুরোটাই ভারত সরকার বহন করবে। তাতে দুইদেশের ১০০ জন বিক্রেতা এবং ১৫০ জন ক্রেতাকে বিকিকিনির জন্য অনুমতি দেওয়া হবে। প্রত্যেক বিক্রেতার সর্বোচ্চ ২০০ ডলারের সামগ্রী বিক্রির অনুমতি মিলবে। নতুন বর্ডার হাটটি প্রত্যেক মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তাতে মাছ, শুঁটকি সহ মোট ১৮টি পণ্য বিক্রির অনুমতি দেওয়া হবে।