তিন পুলিশের যাবজ্জীবন, ঐতিহাসিক রায় আদালতের

৯ সেপ্টেম্বর : বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা মামলার রায় ঘোষণা হল। ২০১৪ সালে পুলিশের হেফাজতে জনি নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৫ জন আসামীর মধ্যে তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। অপর দু্ই জনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস এ রায় ঘোষণা করেন। ২০১৩ সালে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারন আইন প্রণয়নের পর বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় কোনও মামলার রায় হল।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন পল্লবী থানার তত্‍কালীন উপ-পরিদর্শক জাহিদুর রহমান জাহিদ, এসআই রশিদুল ইসলাম এবং এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু। যাবজ্জীবন ছাড়াও এক লক্ষ টাকা করে জরিমানা এবং দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। জরিমানা ও ক্ষতিপূরণের অর্থ দিতে ব্যর্থ হলে আরও ৬ মাস করে কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বলেছেন, ক্ষতিপূরণের টাকা ১৪ দিনের মধ্যে জমা দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘যে আইনের অধীনে বিচার হলো তার সর্বোচ্চ শাস্তি হচ্ছে যাবজ্জীবন। যেখানে যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে।’ এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের কথা জানিয়েছেন আসামীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মদ।

২০১৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর মিরপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে দুই ভাই ইশতিয়াক হোসেন জনি এবং ইমতিয়াজ হোসেন রকিকে আটক করে পুলিশ। বড়ভাই জনির মৃত্যু হয় পুলিশ হেফাজতে। ইমতিয়াজ হোসেন রকি গত বছর এক সাক্ষাত্‍কারে জানায়, ওই রাতে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনেই মৃত্যু হয়েছিল তার ভাইয়ের। এ ঘটনায় মামলা করেন তিনি। ২০১৫ সালে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ২০১৬ সালে বিচার শুরু হয়। রায় ঘোষণার পর রকি জানান, রায়ে সন্তুষ্ট তারা। তবে উচ্চ আদালতেও যাতে এই রায় বহাল থাকে সেই দাবি জানিয়েছেন তারা।