Barak UpdatesHappenings
তিন জেলার কোভিড ম্যানেজমেন্ট দেখে হাইলাকান্দিকে সেরা বললেন মন্ত্রী পরিমল
ওয়েটুবরাক, ১৫ মে: রাজ্যের বন ও পরিবেশ, আবগারি ও মৎস্য মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য হাইলাকান্দি এসকে রায় সিভিল হাসপাতালে নির্মীয়মান আইসিইউর কাজ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আজ শনিবার হাইলাকান্দিতে জনপ্রতিনিধি, জেলাশাসক এবং প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে জেলার কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করেন৷ সে সময় বলেন, জেলার পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা উপত্যকার অন্য দুই জেলা থেকে ভালো।
জেলায় জনসাধারণের মধ্যে কোভিড সচেতনতা এবং কোভিড রোগীদের সরকারি খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদির দিকে নজর দিতে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার কন্টেনমেন্ট জোনে থাকা কোভিড রোগীদের সাহায্যের কথা চিন্তা করছে। সাংসদ কৃপানাথ মালা চা বাগান এলাকার কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে বৈঠকে জানানো হয়, জেলার চা বাগান এলাকায় কোভিড আইসোলেশন সেন্টার গড়ে তোলা হবে এবং এতে চিকিৎসাপ্রাপ্ত রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবার জন্য দৈনিক ৩০০টাকা করে সরকার খরচ করবে।
মন্ত্রী জানান, হাইলাকান্দি জেলায় কোভিড মোকাবিলার ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম মজুদ সন্তোষজনক। এতে জেলাশাসক মেঘনিধি দাহাল পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দিয়ে জানান, এ পর্যন্ত জেলায় ৯৩৬জন দ্বিতীয় সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন এবং আজ পর্যন্ত ৫৩৮জন অ্যাক্টিভ রোগী রয়েছেন জেলায়। হাসপাতালে ৮৫ জন এবং এসকে রায় সিভিল হাসপাতাল ৬৬ জন। জেলার ১৪জন রোগী শিলচর মেডিক্যাল কলেজে রয়েছেন৷ এর মধ্যে দুইজন অক্সিজেন সাপোর্টে রয়েছেন। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে জেলায় ৩৩৭৮জন আক্রান্ত হন । জেলায় ১১৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রোগীদের মধ্যে অক্সিজেন সরবরাহ করছে । জেলায় ২০০টি আইসোলেশন বেড রয়েছে, এর মধ্যে সিভিল হাসপাতালে ৮০ টিএবং আলগাপুর ও ধলাই মডেল হাসপাতাল ৬০টি করে বেডে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা চলছে ।
জেলায় ৪০ হাজার ৮১৭জনের রেট টেস্ট দ্বিতীয় ঢেউয়ে করা হয়েছে এবং ৩৭২০জনের আরটিপিসিআর টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে। গত সাত দিনে ৭হাজার লোকের টেস্ট করা হয়েছে । আক্রান্তের হার ৭.৫৮ শতাংশ। জেলাশাসক দাহাল কোভিড প্রতিরোধে জেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা জানিয়ে উল্লেখ করেন যে, জেলায় এ পর্যন্ত ৪৯ হাজার ৪৭৭জনকে ভ্যাক্সিনেশন এর প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে এবং ১৪ হাজার ৪২৯জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে । জেলায় আজ পর্যন্ত সাড়ে ৬ হাজার ভ্যাকসিন মজুত রয়েছে । হোম আইসোলেশন এ জেলায় ৭৯০জনকে চিকিৎসা করা হচ্ছে এবং এইসব রোগীদের উপর প্রশাসন থেকে নজরদারি চালানো হচ্ছে । তাদের ওপর নজরদারি করতে ১৪মে পর্যন্ত ৩৯২৪টি ফোন কল করা হয়েছে প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম থেকে৷
জেলায় ৩৮৫টি হোম আইসোলেশন কমিটি ইতিমধ্যে গঠন করা হয়েছে এবং এই আইসোলেশনের কার্যকারিতায় গতি আনতে পুলিশকেও কাজে লাগানো হয়েছে। আশা কর্মীরাও নজরদারি চালাচ্ছেন এবং একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে আশাকর্মীরা ব্লক হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন । সভায় অংশ নিয়ে বিধায়ক নিজাম উদ্দিন চৌধুরী মন্ত্রীর পরামর্শ মেনে কোভিড ব্যবস্থাপনা দেখবেন বলে জানান। বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্কর কাটলিছড়া হাসপাতালে আরও চিকিৎসক নিয়োগ করার প্রস্তাব দেন। মিলন দাস ও মুন স্বর্ণকার চা বাগান এলাকার চিকিৎসা ব্যবস্থায় গতি আনার পরামর্শ দেন। প্রসঙ্গত, মন্ত্রী চা বাগান এলাকায় শিবির স্থাপন করে কোভিড ভ্যাক্সিনের নির্দেশ দেন প্রশাসনকে।