Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ডলু বাগানের কাটা শেড ট্রি কোথায় গেল, জানে না বনবিভাগ
সমন্বয় সমিতির আরটিআই-র জবাব
ওয়েটুবরাক, ৪ আগস্ট : ডলু চা বাগানের প্রায় ত্রিশ লক্ষ চা গাছ ও কয়েক হাজার ‘শেড ট্রি’ প্রশাসনের উদ্যোগে তুলে ফেলার পর কয়েক কোটি টাকা মূল্যের গাছের কাঠ কোথায় রয়েছে, তা বনবিভাগ জানে না৷
‘ডলু চা বাগান বাঁচাও সমন্বয় সমিতি’র পক্ষ থেকে কাছাড় জেলার ডিএফও’র কাছে ‘শেড ট্রি’ কাটা ও চা গাছ উপড়ে ফেলার তথ্য জানতে আরটিআই করা হয়েছিল৷ উত্তরে তারা জানায়, এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। একই সঙ্গে জানায়, উচ্ছেদ প্রক্রিয়ায় বনবিভাগ জড়িত ছিল না৷ তাই তারা এ ব্যাপারে তথ্য দিতে অপারগ।
গত ১২ মে ডলু চা বাগানে কাছাড় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ভোর রাত থেকে দু’শতাধিক বুলডোজার লাগিয়ে প্রায় ত্রিশ লক্ষ চা গাছ ও কয়েক হাজার শেড ট্রি তুলে ফেলা হয়েছিল।
এদিকে, গত এপ্রিল মাসে কাছাড় জেলা প্রশাসন শ্রমিক সংগঠনের কর্তাদের উপস্থিতিতে ডলুর ২৮ এপ্রিল ময়নাগড়ে ও ২রা মে লালবাগে দু’টি গণশুনানির আয়োজন করেছিল। দু’টি সভারই কার্যবিবরণী তিন মাস পেরোনোর পরও প্রকাশ করা হয়নি বলে তারা আশ্চর্য প্রকাশ করে। সমিতির পক্ষ থেকে তথ্য জানার অধিকার আইনে কাছাড় জেলা প্রশাসনের নিকট এব্যাপারে জানতে চাইলে তা দিতে অস্বীকার করা হয়।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ডলুতে জমি হস্তান্তর করা হয়েছে যদিও, কিন্তু কোনও রকমের উচ্ছেদ করা হয়নি। তাই এই ব্যাপারে জনসভার কোনও মাইনোটস্ বা কার্যবিবরণী তারা দিতে পারবেন না। সমিতির কর্মকর্তাদের কথায়, “সরকারি নিয়ম বলে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আয়োজিত যে কোনও সভা বা বৈঠকের বিবরণী কর্তৃপক্ষ জনসমক্ষে তুলে দিতে বাধ্য।” সমিতির পক্ষ থেকে ডলু চা বাগান নিয়ে কাছাড় জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী কিছুদিন আগেও শ্রমিকদের সহমত নিয়ে কাজ করার কথা বললেও বাস্তবে দেখা গেল, বাগানটিতে গত মাসে হঠাৎই লক আউট করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে যদিও শ্রমিকদের প্রবল চাপের মুখে পড়ে লক আউট প্রত্যাহার করা হয়৷ কিন্তু বাগানের একটি বড় অংশ ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে কাজের জায়গা কম হয়ে গেছে৷ এর ফলে বাগান কর্তৃপক্ষ সব অস্থায়ী কর্মীদের কাজ দিতে পারছে না।
চা বাগান কর্মীদের ‘নিরিখ’ (যে নির্দিষ্ট পরিমাণ চায়ের পাতা না তুলতে পারলে পুরো মজুরি পাওয়া যায় না) হলো ২৩ কিলোগ্রাম। কিন্তু কাজের জায়গা কম হয়ে যাওয়ায় ৪-৫ দিন পর পর একই জায়গায় কাজ করতে হচ্ছে বলে তোলার জন্য যথেষ্ট চায়ের পাতা পাওয়া যাচ্ছে না৷ তাই নিরিখ সম্পূর্ণ হচ্ছে না অজুহাতে শ্রমিকদের সম্পূর্ণ মজুরি দেওয়া হচ্ছে না।
আগামী দিনে শ্রমিকদের কাজ হারানোর ভয় যথেষ্ট থেকে যাচ্ছে। সন্দেহ ও আশংকার এই পরিবেশ দূর করে বৃহত্তর জনস্বার্থে আসাম সরকারকে উপযুক্ত ভূমিকা নিতে ডলু চা বাঁচাও সমন্ময় কমিটির পক্ষ থেকে এদিন জোরালো দাবি জানানো হয়।