Barak UpdatesBreaking News
ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল মানবাধিকার কমিশনHuman Rights Commission raises question about qualification of judges of Foreigners Tribunal
৩ মার্চঃ শিলচরে এসে ডি ভোটার এবং ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দিদের নিয়ে নানা অভিযোগ শুনলেন অসম রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান টি ভাইফেই। সঙ্গে কমিশনের দুই সদস্য নীলকমল বরা ও ডিকে শইকিয়া। বন্দিদের কাছ থেকে কোনও নালিশ না পেলেও বিভিন্ন স্তরের মানুষ এ ব্যাপারে উদ্বেগ ব্যক্ত করেন। ডি ভোটার প্রক্রিয়া, ট্রাইব্যুনালে সরকারি আইনজীবী না থাকা, একতরফা রায় ইত্যাদি বিষয়ে তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
অধিকাংশ বিষয় যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পর্যায়ের পড়ে, তা খোলামেলা বলেন চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। এ প্রসঙ্গে তাঁরা ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন। ত্রিপুরা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টি ভাইফেই বলেন, তাঁদের অধিকাংশ প্রশিক্ষিত নন। সে জন্যই একতরফা রায়ের সংখ্যা অধিক। অথচ ঘোষিত বিদেশিদের মধ্যে অনেকে প্রকৃত ভারতীয়। কেউ নথিপত্র দেখানোর সুযোগই পাননি, কেউ অজ্ঞতার দরুন দেখাতে পারেননি। তবে একাংশ বিচারক যথাযথ কাজ করছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চেয়ারম্যান ভাইফেই বলেন, শুধু সন্দেহভাজন নয়, বিদেশি নাগরিকদেরও মানবাধিকার রয়েছে। কিন্তু অসমের জেলগুলিতে সে সবের বালাই নেই। পৃথক জেল ম্যানুয়েল পর্যন্ত নেই। ফলে ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দিরাও কারাবন্দিদের মতোই দিনযাপন করছেন। বন্দি এবং বিচারাধীনের মধ্যেও কোনও ফারাক নেই। এ সব ব্যাপার নিয়ে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবে। তাঁরা বিভিন্ন জেলের ধারণক্ষমতার তুলনায় অত্যধিক বন্দি নিয়েও উদ্বেগে। তাই অসম স্টেট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটির সচিবকে কমিশন ডেকে পাঠিয়েছে। যারা আইনি সহায়তা না পেয়ে জেলে আটকে রয়েছেন, তাদের জন্য অতিরিক্ত আইনজীবী নিয়োগ করতে পরামর্শ দেবেন তাঁরা। কমিশনের অনুমান, আইনি সহায়তা পেলে অনেকে জেল থেকে মুক্তি বা জামিন পেয়ে যাবেন। সে ক্ষেত্রে জেলের চাপ কমবে।
তিনদিনের সফরে তিনসদস্যের দলটি গত ১ মার্চ বরাক উপত্যকায় আসেন। প্রথমদিন তাঁরা শিলচর জেল পরিদর্শন করেন। শনিবার দেখেন হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জ জেল। রবিবার ফের শিলচর জেলে যান। ঘুরে দেখেন ফিমেল ওয়ার্ডটি।
বরাক সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে চেয়ারম্যান ভাইফেই, দুই সদস্য বরা ও শইকিয়া বলেন, করিমগঞ্জের জেলের মারাত্মক অবস্থা। ১৮৮৫ সালে নির্মিত দালানবাড়িতে বন্দিদের রাখা হচ্ছে। মনুষ্য বসবাসের উপযোগী নয় তা। হাইলাকান্দিতেও তথৈবচ। তবে করিমগঞ্জে নতুন জেলের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। হাইলাকান্দিতে ২৪ কোটি ২৬ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা মঞ্জুর হয়েছে দালানবাড়ির জন্য। সেখানে জমি অধিগ্রহণ পর্ব শেষ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ডিটেনশন ক্যাম্প পৃথক হলে শিলচর জেলেও চাপ কমবে বলে আশা করছেন তাঁরা।