জিরিবামে হিংসা, আতঙ্কে মানুষ

ওয়েটুবরাক, ৭ জুন : ভোটের ফল ঘোষণার পরেই ফের অশান্ত মণিপুর। গোটা রাজ্য এক বছরের বেশি সময় ধরে মেইতেই ও জনজাতিতে পুরোপুরি বিভাজিত হলেও অসম সীমা সংলগ্ন জিরিবাম জেলা ছিল এর ব্যতিক্রম। কিন্তু সেখানেই দুদিন ধরে টানটান উত্তেজনার পরিবেশ। এক মেইতেইয়ের দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর এসেছে। আরাম্বাই টেঙ্গলের সদস্যরা কুকি-জ়োদের বাড়িতে আগুন লাগানো শুরু করেছে। কুকিরা প্রাণভয়ে জঙ্গলে পালিয়েছেন। মেইতেই মহিলারা রাস্তা আটকে রাখায় নিরাপত্তা বাহিনী পৌঁছতে পারছে না।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জিরিবাম গুলালতলের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এস শরৎ কুমার সিংহের গলাকাটা দেহ ফাইজল পুঞ্জির জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই পুঞ্জিতে কুকি সম্প্রদায়ের বসতি থাকায় খুনের ঘটনায় জনজাতিদের অভিযুক্ত করে উত্তেজিত জনতা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায়। ভোটের আগে জমা নেওয়া লাইসেন্সধারী আগ্নেয়াস্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানায়। পরে জিরিবাম শহর সহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে প্রায় ২৫টি ঘর পুড়িয়ে দেয়। একইভাবে দু’টি গির্জা ও একটি বেসরকারি স্কুলও ভস্মীভূত হয়। এল মুয়াংপাউ নামে এক কুকি প্রৌঢ় বৃহস্পতিবার রাত থেকে নিখোঁজ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জিরিবাম ও পার্শ্ববর্তী তামেঙলঙ জেলায় ১৪৪ ধারার অধীনে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কার্ফুর উল্লেখ না করলেও নিষেধাজ্ঞায় সাধারণ জনতাকে বাড়ি থেকে না বেরোতে বলা হয়েছে। এর দরুন দুই জেলাতেই এ দিন দোকানপাট খোলেনি, চলেনি ব্যক্তিগত বা বাণিজ্যিক যানবাহন। জিরিবাম জেলায় আশ্রয়ের সন্ধানে জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র যেতে দেখা গিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী তখন অবশ্য এসকর্ট করে। জনজাতি এলাকায় থাকা মেইতেই পরিবারগুলি আসাম রাইফেলসের পাহারায় এ দিন সকালেই সরে পড়ে।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে জিরিবামে কুকি সম্প্রদায়ের একজনকে হত্যা করা হয়েছিল। এরই রেশ ধরে শরৎ কুমার সিংহকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করা হলেও পুলিশ এখনই এ নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ। তবে তাঁদের দাবি, উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। জিরিবাম ও তামেঙলঙে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। আসাম রাইফেলস, সিআরপিএফ এবং মণিপুর পুলিশকে নিয়ে জিরিবামে একটি জয়েন্ট কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।