Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ছায়াতরুকে সিঁদুর পরিয়ে অভিনব প্রতিবাদ ডলুর শ্রমিকদের
ওয়েটুবরাক, ১৭ নভেম্বর : বুধবার ডলু চা-বাগানের শ্রমিকরা পরিবেশ ও সামাজিক ভারসাম্য রক্ষায় এবং ডলু চা-বাগানের জোরজবরদস্তি ফসলি জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে এক অভিনব প্রতিবাদ সাব্যস্ত করলেন।
অধিগৃহীত জমিতে রয়েছে হাজার হাজার ছায়াতরু। আসাম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানার হাতে মহিলারা গাছে সিঁদুর লাগিয়ে উলুধ্বনি দিয়ে নাচে-গানে গাছের সঙ্গে তাদের যে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে নাড়ির টান রয়েছে তা প্রকাশ করলেন। নাচলেন ঝুমুরের তালে তালে৷ পুরুষরা গান গেয়ে বাজনা বাজিয়ে দোহার দিলেন।
আসাম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২৫০০ বিঘা জমি সরকার বলপূর্বক অধিগ্রহণের পর থেকেই কাজ হারানোর শঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ডলু চা-বাগানের হাজারের উপর শ্রমিক।
অস্থায়ী পুরুষ শ্রমিকরা বেশ কিছুদিন ধরেই কাজ পাচ্ছেন না৷ শীতের মরশুম শুরু হয়ে যাওয়ায় অস্থায়ী মহিলা শ্রমিকরাও এখন কাজ পাচ্ছেন না। জমি অধিগ্রহণের ফলে চা গাছের সংখ্যা কমে গেছে অনেকটা। গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই কমে গেছে কাঁচা পাতার পরিমাণ৷ অথচ প্রত্যেক শ্রমিকের ক্ষেত্রে নিরিখ ধার্য করা আছে ২৩ কেজি। অর্থাৎ ২৩ কেজি পাতা না তুলতে পারলে সম্পূর্ণ মজুরি পাওয়া যায় না।
ইউনিয়নের কথায়, বর্তমানে কাঁচা পাতার অভাবে নিরিখ সম্পূর্ণ করতে পারছেন না শ্রমিকরা৷ তাই সম্পূর্ণ হাজিরাও পাচ্ছেননা। এমনিতেই চা-বাগানের শ্রমিকদের মজুরি কম। আজকের সময়ে সেটা মাত্র ২১০ টাকা (সেটাও নানা অজুহাতে সব বাগান দেয় না), আর সেটাও যদি তারা না পান তবে বর্তমানের দ্রব্যমূল্যের আগুন বাজারে তাঁরা বাঁচবেন কীভাবে, সেই দুশ্চিন্তাই বর্তমানের ডলুবাগানের শ্রমিকদের নিত্যসময়ের সঙ্গী।
তাই তাঁরা রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে, ওই অধিকৃত জমি সরকার ডলুর বঞ্চিত শ্রমিকদের নিয়ে শ্রমিক কো-অপারেটিভ বানিয়ে ওই কো-অপারেটিভকে বিনামূল্যে লিজ দেওয়ার জন্য।
চা-শ্রমিকরা প্রকৃতি নির্ভর , প্রকৃতির সঙ্গে তাঁদের আত্মার নিবিড় সম্পর্ক। বুধবার এ ভাবে ছায়াতরুকে সিঁদুর পরিয়ে জীবন ও প্রকৃতি রক্ষার এক অভিনব বার্তা দিলেন ডলুর শ্রমিকরা।