India & World UpdatesHappeningsBreaking News
চিন্ময় প্রভু গ্রেফতার আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, ভারতকে বাংলাদেশের জবাব
ওয়েটুবরাক, ২৭ নভেম্বর: চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে আখ্যা গিয়েছে ইউনুস সরকারের বিদেশ মন্ত্রক। তাদের প্রকাশিত বিবৃতিতে ভারতের বয়ানের বিরোধিতা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের প্রকাশিত এক বিবৃতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপরও অত্যন্ত হতাশা ও গভীর দুঃখের সঙ্গে সরকার লক্ষ করছে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির বিষয়টি ভুল ভাবে উত্থাপন করছে কেউ কেউ। ভারতের এই ধনের বিবৃতি সত্যিকে ভুল ভাবে তুলে ধরছে। পাশাপাশি দুই প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়ার পরিপন্থী এই বিবৃতি।’
‘বাংলাদেশ সরকার অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।’ তবে ভারতের বিবৃতিতে সেই বক্তব্য প্রতিফলিত না হওয়ায় ঢাকার ‘খারাপ লেগেছে’। এই নিয়ে ইউনুস সরকার বলেছে, ‘সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রেখে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে সরকারের সেই প্রচেষ্টা ভারতের এই বিবৃতিতে প্রতিফলিত হয়নি। বাংলাদেশে জনগণের ওপর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারহীনতার যে ধারা চলে আসছিল, তার সমাপ্তি টানতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুদের একই নজরে দেখা হয়। অথচ ভারতের বিবৃতিতে এসব বিষয়ে সম্পূর্ণ উপেক্ষিত হয়েছে। ধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেক বাংলাদেশি নিজেদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে পারেন বা মতপ্রকাশ করতে পারেন। সব নাগরিকের, বিশেষ করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাংলাদেশ সরকারের একটি দায়িত্ব। গত মাসে বাংলাদেশে যে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপুজো পালন হয়েছে, তার মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হয়েছে।’
বাংলাদেশ সরকারের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা জানাতে চাই, বাংলাদেশে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। সরকার বিচার বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ করে না। আর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিষয়টি বর্তমানে বিচারাধীন। সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই আবহে চট্টগ্রামে সাইফুল ইসলাম নামের এক আইনজীবীকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় সরকার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যেকোনও মূল্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য বন্দরনগরীতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে কর্তৃপক্ষ।’
এর আগে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার ও জামিন নাকচ করার বিষয়টি আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি। বিগত দিনে বাংলাদেশের চরমপন্থীরা হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চালিয়ে গিয়েছে। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের পাশাপাশি চুরি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও বিভিন্ন মন্দিরকে অপবিত্র করার একাধিক অভিযোগও উঠেছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে যখন এই ঘটনার অপরাধীরা মুক্ত রয়ে গিয়েছে। তবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে ন্যায্য দাবি উপস্থাপনকারী একজন ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা শ্রী দাসের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদকারী সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিষয়টিও উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি।’