NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News
চা জনগোষ্ঠী এখনও অন্ধকারে, ইউনিয়ন ও রাজনৈতিক নেতাদেরই দোষারোপ করল পিপলস ফোরাম
ওয়েটুবরাক, ১০ অক্টোবরঃ আসাম চায়ের জন্য বিখ্যাত। চা-ই বৈদেশিক মুদ্রা আনে। কিন্তু এই চা যারা উৎপাদন করেন, সেই চা শ্রমিকদের পরিবার ন্যূনতম সুবিধাও লাভ করেন না। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরও তারা গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত। এ ব্যাপারে আক্ষেপ ব্যক্ত করেছে আসাম টি অ্যান্ড এক্স-টি পিপলস ফোরাম। সভাপতি লক্ষীনিবাস কালোয়ার সোমবার শিলচরে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বলেন, এই অবস্থা থেকে তাঁদের কীভাবে উত্তরণ ঘটানো যায়, এ নিয়েই ফোরাম উদ্বেগে। তাঁর কথায়, চা শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়মিত খাওয়াদাওয়া মেলে না। অনেকের জামাকাপড় নেই। শিক্ষাদীক্ষার দিক থেকেও তারা বহু পিছিয়ে।
তাদের এই অবস্থার জন্য তিনি ইউনিয়ন নেতা এবং রাজনৈতিক নেতাদের দোষারোপ করেন। কালোয়ার বলেন, ভোট আসে, তাদের ভোটে সরকার গঠন হয়, সেই সরকার আবার বদলায়, কিন্তু চা জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন নিয়ে কেউ ভাবেন না। তাঁর কথায়, বৃহৎ সংখ্যার একটা জনগোষ্ঠীকে গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত রেখে, আসাম কখনও উন্নত হতে পারে না।
২০১৬ সালে গঠিত হয়েছে আসাম টি অ্যান্ড এক্স-টি পিপলস ফোরাম। সহসভাপতি রূপনারায়ণ রাই, সাধারণ সম্পাদক শ্যামসুন্দর রবিদাস। এ দিন অবশ্য সভাপতি কালোয়ার একাই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। দাবি করেন, নিযুক্তির ক্ষেত্রে আসামে চা জনগোষ্ঠীর জন্য তিরিশ শতাংশ সংরক্ষণ চালু করতে হবে। প্রতিটি বাগানে সরকারি উদ্যোগে হাসপাতাল নির্মাণ করতে হবে।
চা জনগোষ্ঠীর পিছিয়ে থাকার জন্য ইউনিয়ন নেতা ও রাজনীতিবিদদের দোষারোপ করলেও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার প্রতি ফোরাম আস্থাশীল৷ তিনি জানান, শীঘ্রই তাঁরা রাজ্যের চা জনগোষ্ঠীর সমস্যাদি নিয়ে শর্মার সঙ্গে দেখা করবেন। তখন ডলু চা বাগানে নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের ভাবনা থেকে সরে আসার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাবেন। বলেন, এই বাগান ব্রিটিশরা তৈরি করেছিল। একে এই ভাবে ধ্বংস করা অনৈতিক।
তাঁদের অন্যান্য দাবিদাওয়ার মধ্যে রয়েছে, চা জনগোষ্ঠীকে জনজাতি স্বীকৃতির বদলে এমওবিসি বলে ঘোষণা করা হোক, চা বাগানের বিস্তার ঘটানো হোক, সরকারি ভাবে অধিকৃত জমি বেসরকারি কাউকে লিজ দেওয়া চলবে না, চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩৯০ টাকা করা, প্রাথমিক থেকে উচ্চতম স্তর পর্যন্ত এবং এপিএসসি সহ সকল প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা হিন্দিতে দেওয়ার সুযোগ প্রদান করা ইত্যাদি। বরাক উপত্যকার চল্লিশ শতাংশ বিধানসভা আসন চা জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত করারও দাবি জানায় আসাম টি অ্যান্ড এক্স-টি পিপলস ফোরাম।