Barak UpdatesHappeningsBreaking News
গোটা শহর জলে ডোবার পাঁচ মাস পরেও কোনও সক্রিয় পরিকল্পনা হয়নি, আক্ষেপ আঠারো সংস্থার জোটের, স্মারকলিপি
ওয়েটুবরাক, ২২ নভেম্বর : মুখ্যমন্ত্রী থেকে জেলা প্রশাসন, এমনকী স্থানীয় বিজেপি নেতারাও শিলচর শহরের বন্যাকে মনুষ্যসৃষ্ট বলে একাংশ মানুষের ওপর দায় ঠেলে দিয়েছিলেন। বেতুকান্দি বাঁধ কাটাকেই একমাত্র কারণ মনে হয়েছিল তাঁদের কাছে। অধিকাংশ মানুষ তাদের তত্ত্ব মেনে নেয়নি। একের পর এক এনজিও-জোট নিজস্ব উদ্যোগে সমীক্ষা চালিয়ে সরকারি দাবিকে নস্যাৎ করে দিচ্ছে। মার্চ ফর সায়েন্স, নাগরিক স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম পরিষদ সহ কয়েকটি সংগঠন জোট বেঁধে তাদের রিপোর্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, সরকারের ব্যর্থতা আড়াল করতেই বাঁধ কাটার ব্যাপারটাকে বড় করে সামনে আনা হয়েছে।
এ বার প্রায় একই সুরে ‘হিউম্যানস অফ শিলচর’ নামে আঠারোর বেশি এনজিও-র ইউনাইটেড ফোরাম কাছাড়ের জেলাশাসক, সাংসদ, বিধায়কেদর স্মারকলিপি দিয়ে বন্যার কারণ উল্লেখ করে এর প্রতিকারের জন্য কিছু পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। এর পেছনে বড় কারণ যে ভাঙাচোরা স্লুইস গেট, খালের অবৈধ দখল, বাঁধ নীচু হতে হতে একেবারে রাস্তার সঙ্গে মিশে যাওয়া, সে সবই স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা বলেন, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগ স্লুইস গেট ক্ষতিগ্রস্থ, আবর্জনা দ্বারা আবৃত বলে জলের চ্যানেলকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
শহরের বন্যা প্রতিরোধে তারা জেলাশাসক রোহনকুমার ঝা, সাংসদ ডা. রাজদীপ রায়, শিলচরের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী, বড়খলার বিধায়ক মিসবাহুল ইসলাম, লক্ষীপুরের বিধায়ক কৌশিক রাই এবং সোনাইর বিধায়ক করিমউদ্দিন বড়ইুইয়া, বিজেপি জেলা সভাপতি বিমলেন্দু রায়, কংগ্রেস জেলা সভাপতি তমাল কান্তি বনিক, প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপকুমার পাল এবং রাজ্য বিজেপির সম্পাদক কণাদ পুরকায়স্থের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। বন্যা প্রতিরোধে তাঁরা একগুচ্ছ পরামর্শ দেন তাঁদের। এর মধ্যে রয়েছে সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত স্লুইস গেট মেরামত, শক্তিশালী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা, সক্রিয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল গঠন, বাঁধের উচ্চতা বাড়ানো এবং প্রধান খাল থেকে অবৈধ দখল অপসারণ। তাদের কথায়, এগুলি করা গেলে শহরকে এই ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা যাবে। এনজিও-জোটের আক্ষেপ, পুরো শিলচর শহরকে ডুবিয়ে দেওয়ার পাঁচ মাস পরও একটি সক্রিয় পরিকল্পনা তৈরি হয়নি. এর জন্য দৃঢ় পদক্ষেপও দেখা যাচ্ছে না। তারা এ বার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। বন্যা সমস্যাটিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি করবেন।
তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, বরাক উপত্যকার নদীবাঁধের উচ্চতা বৃদ্ধি করা এবং সমস্ত স্লুইস গেটকে কার্যকরী করা। আরও স্লুইস গেট নির্মাণ করা। ড্রেনের উপর বিশেষ করে বোয়ালজুর খাল, শিঙ্গের খাল, রাঙ্গির খাল এবং লংগাইখাল দখল অপসারণ এবং ময়লা আবর্জনা থেকে পরিষ্কার করা যাতে এই ড্রেনের মধ্য দিয়ে নির্বিঘ্নে জল প্রবাহিত হয়। অবিলম্বে আবর্জনা নিষ্কাশন করে শহরে একটি সঠিক নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য পরিকল্পনা করা ইত্যাদি।
আঠারো এনজিওর মধ্যে রয়েছে স্পর্শ, বিহান, আওয়াজ, স্মাইল, শিলচর মিলাপ, ইয়ং মাইনড, অর্গানাইজেশন ধাগা, থাউজেন সায়ন্তন, সক্ষম, বরাক ভ্যালি ওয়েলফেয়ার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, জয় রাধে সেবা সমিতি, সুবীর অ্যান্ড ফ্রেন্ডস, লাইফ লাইন ফাউন্ডেশন, আনন্দ কৃতি, উদয়ের পথে, লিও ক্লাব অফ শিলচর সেন্ট্রাল, নেতাজি ছাত্র যুব সংস্থা এবং ইকো-অ্যালার্মিস্ট।