Barak UpdatesHappeningsBreaking News
কাছাড় কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতির অপসারণ চাইলেন দত্তরায়
ওয়েটুবরাক, ২৬ সেপ্টেম্বর : কাছাড় কলেজে শিক্ষার পরিবেশ তলানিতে ঠেকেছে, এই মন্তব্য করে এ বার সরব হলেন আকসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রদীপ দত্তরায়। তিনি বলেন, কিছুদিন ধরে একের পর এক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী এই কলেজ। এতে সবাই বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
এই কলেজের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত যোগাযোগের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ১৯৮৩ সালে জন্মলগ্ন থেকে পরপর তিন বছর আকসার বেসরকারি কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয় কাছাড় কলেজের ‘মনিদার ক্যান্টিন’৷ এই কলেজের ছাত্রছাত্রীরাই প্রথম এই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নেয়৷ পরে তা ছড়িয়ে পড়ে সারা উপত্যকায়। ১৯৮৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে কাছাড় কলেজে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ তাতে অংশগ্রহণ করেছিলেন জিসি কলেজের তদানীন্তন অধ্যক্ষ তাপস শঙ্কর দত্ত, অধ্যাপক জ্যোতিলাল চৌধুরী, হাইলাকান্দির অধ্যাপক অরবিন্দ চৌধুরী, ড. তপোধীর ভট্টাচার্য প্রমুখ৷ তাঁদের সারগর্ভ বক্তব্য আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের তাত্ত্বিক ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছিল৷ এর পরই এই আন্দোলনে সবাই একজোট হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, সংসদে আসাম বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাশ হবার পরও আসাম সরকার জমি দিচ্ছিল না৷ এ নিয়েও আন্দোলন করতে হয়েছিল। রাজ্য সরকারের তদানীন্তন শিক্ষা কমিশনার অশোক শইকিয়া আলোচনার জন্য তাঁদের গুয়াহাটিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তখন কাছাড় কলেজে বিজ্ঞান বিভাগ ছিল না এবং এটি দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। প্রদীপবাবু বলেন, সেই সভায় তিনি প্রচণ্ড ক্ষোভের সঙ্গে এই প্রসঙ্গ অবতারণা করার পরই সেই কমিশনার তাঁকে এই ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেন এবং অনতিবিলম্বে এই ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিজ্ঞান বিভাগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অশোক শইকিয়া এই ব্যাপারটি উল্লেখও করেছিলেন। প্রদীপবাবু বলেন, এ সবই এই কলেজের সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্কের প্রমাণ এবং সেজন্যই বর্তমান সমস্যা তাঁকেও ভাবাচ্ছে।
আকসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির কথায়, ছাত্র বা শিক্ষক রাজনীতি করতেই পারেন তবে তাঁতে যদি শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হয় তবে তা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষকরা ধর্না দিচ্ছেন, ছাত্র শিক্ষকদের ঠেলাধাক্কা করছে, জেলাশাসক শিক্ষককে কানে ধরে ওঠবস করাচ্ছেন, তাঁর সতীর্থরা নীরব ভূমিকা নিচ্ছেন, এ সব ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তিনি আরও বলেন, “কলেজের বর্তমান পরিচালন কমিটির সভাপতি শাসকদলের সদস্য এবং অদক্ষ এক ব্যাক্তিত্ব । তাঁর অপদার্থতার জন্যই এসব সমস্যার উদ্ভব হয়েছে।” তাই অবিলম্বে তাঁকে এই পদ থেকে সরাবার দাবি জানান তিনি। এছাড়া আন্দোলনরত শিক্ষকদের তিনি আলোচনার ভিত্তিতে সমস্যার সমাধানের আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ছাত্ররা শিক্ষকদের সন্তানসম। তাই কেউ বিপথে পরিচালিত হলে তাঁকে সংশোধন করার দায়িত্ব নিতে হবে তাঁদেরই। তবে অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান জরুরি৷ কারণ এতে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে এবং অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। প্রয়োজনে এই ব্যাপারে তিনিও যথাসাধ্য ভূমিকা নিতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানান প্রদীপ দত্তরায়।