Barak UpdatesHappeningsBreaking News
করবৃদ্ধির লক্ষ্যে সেলফ অ্যাসেসমেন্ট, পাল্টা প্রচারে নামছে চার সংগঠন
ওয়েটুবরাক, ২ সেপ্টেম্বর : কর বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিলচর পুরসভা যে সেলফ অ্যাসেসমেন্ট করাচ্ছে, এ নিয়ে প্রতিবাদে সরব হলো আরও চার সংগঠন৷ তারা অন্যায্য সেলফ অ্যাসেসমেন্ট ফর্ম জমা না দিতে প্রচারাভিযানে নামছে৷ নাগরিক স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম পরিষদ, বিবেক বাহিনী, গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠান ও মার্চ ফর সায়েন্স পুরসভার এই ‘জিজিয়া কর’ চাপিয়ে দেওয়ার আগেই প্রতিবাদে মাঠে নামতে আহ্বান জানান৷ গণআন্দোলনকে অবজ্ঞা করে সরকার নিয়ন্ত্রিত পুরবোর্ড পুরকর চাপিয়ে দিলে গৌহাটি হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়েরেরও হুমকি দেন৷
নাগরিক স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হরিদাস দত্ত বলেন, এই সেলফ অ্যাসেসমেন্ট প্রক্রিয়া মেনে নেওয়া হলে বর্তমান হারের অন্তত ২০ গুণ পুরকর বাড়বে৷ বহু মানুষের পক্ষে তখন আর নিয়মিত করপ্রদান সম্ভব হবে না৷ এ ছাড়া সেলফ অ্যাসেসমেন্টে যে জমির মূল্য দেখানো হয়েছে, তা এমনিতেই অস্বাভাবিক, এর ওপর বিভিন্ন অঞ্চলের তুলনা টানলে অযৌক্তিকও৷ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, শহরে এর আগে সেলফ অ্যাসেসমেন্ট হয়েছিল ২০১৩ সালে৷ তখনকার যে জমির মূল্য ধরে পুরকর দেওয়া হচ্ছিল, প্রস্তাবিত তা হারে কোথাও ১৬ গুণ বেড়েছে, কোথাও ২৮ গুণ৷ এ ছাড়া, শিলচর রেলস্টেশন এলাকায় যেখানে জমির কাঠা দেখানো হয়েছে ১.৯০ থেকে ২ লক্ষ টাকা, সেখানে ঘনিয়ালা-মালুগ্রামে ধরা হয়েছে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত৷ আবার সেন্ট্রাল রোডের সমতুল জায়গা দেখিয়ে বিলপার, সুভাষনগরেও কাঠাপ্রতি দর ধরা হয়েছে ৯.২৫ থেকে ১১.৫ লক্ষ টাকা৷
তাঁর কথায়, পুর পরিষেবা প্রদানের সময় একজিকিউটিভ অফিসার পরিচালিত পুরসভার কোনও অস্তিত্বই পরিলক্ষিত হয় না৷ একটু বৃষ্টিতে শহরের জায়গায় জায়গায় জল জমছে৷ ওই জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারালেন বিলপার পূর্ণচন্দ্র পাল রোডের যুবক৷ যানজটে ফেঁসে অ্যাম্বুলেন্সে প্রাণ হারিয়েছেন নরসিং রোডের মহিলা৷ ওই সবই ঘটছে পুরসভার গাফিলতিতে৷
দীপঙ্কর চন্দ বলেন, পুরসভাকে করপোরেশনে উন্নীত করা হবে বলা হচ্ছে, বলা হয় স্মার্ট সিটি হবে, এর আগে কর পুনর্নির্ধারণ কেন? সে সব হলে তো কর বাড়বেই, এর আগে এক প্রস্ত বাড়ানো কেন?
গৌরী দত্ত বিশ্বাস, শান্তনু দাস, মহীতোষ পাল, শেখর পালচৌধুরীও নিজেদের মতামত প্রকাশ করেন৷ তাঁরা জানতে চান, শহরে জল কেন জমছে? এর সুরাহার দায়িত্ব কারও না হলে কর আদায় বা বৃদ্ধিরও অধিকার কারও থাকতে পারে না৷
তাঁরা বলেন, জমির দাম আগের মতো পিডব্লুডি সিডিউলে হতে হবে, সিপিডব্লুডিতে নয়৷ ডেপ্রেসিয়েশন বা অবচয়কে হিসাবে আনা হোক৷ সর্বোপরি, নির্বাচিত বোর্ড বা করপোরেশন গঠন পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে হবে৷
শিলচর পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত ট্যাক্স দারোগা প্রবীর রায়চৌধুরীর বক্তব্য, পুরসভাগুলি হলো স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা৷ সরকার কর চাপিয়ে দিলে স্বায়ত্তশাসন আর কোথায় রইল! তিনি বলেন, করোনা, বন্যার দরুন মানুষকে স্বস্তি দিতে এই সময়ে কর মকুব করা উচিত ছিল, এর বদলে মাত্রাতিরিক্ত কর চাপানো হচ্ছে৷
তার বিরুদ্ধে একযোগে প্রতিবাদের আহ্বান জানান চার সংগঠনের কর্মকর্তারা৷